কলকাতা: কেবল আফসোস, দুঃখপ্রকাশ করলে হবে না, পদক্ষেপ করতে হবে। রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসার প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বললেন বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমের প্রধান প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। বৃহস্পতিবার এই টিমের প্রতিনিধিরা রাজভবনে যান। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে পঞ্চায়েত-হিংসার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। বেরিয়ে এসে তাঁরা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
রবিশঙ্কর বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে যে হিংসা হয়েছে রাজ্য জুড়ে, গুলি চলেছে, এটার সঠিক তদন্তের প্রয়োজন। গতকাল আমরা অনেক এলাকা ঘুরেছি। অনেক মর্মান্তিক দৃশ্য দেখেছি।” এই হিংসার ঘটনা বর্ণনা প্রসঙ্গেই মিনাখাঁয় এক আক্রান্তের কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ” মিনাঁখার একটা পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি আমরা। শান্তনু পাত্র নামে একজন অত্যন্ত গরিব রাজমিস্ত্রির সঙ্গে কথা হয়। তামিলনাড়ুতে তিনি কাজ করেন। অনেক কষ্টে টাকা সঞ্চয় করে নিজের ঘর বানিয়েছিলেন। তাঁর একটাই দোষ ছিল, বাড়িতে মোদীজির ছবি লাগিয়েছিলেন। কী হামলা হয়েছে সেই বাড়িতে, ঘর ভাঙা হয়েছে। পালিয়ে গিয়ে প্রাণে বেঁচেছেন শান্তনু। তাঁর মা আমাদের কাছে খুব কেঁদেছেন। পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। কোনও অ্যাকশনই নেয়নি পুলিশ। কোনও একটা হিংসার ক্ষেত্রেও কি পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেছে এখনও পর্যন্ত? প্রত্যেক নিগৃহীতর নেতিবাচকও উত্তর দিয়েছেন।”
এরপরই তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি বলতে শুনলাম, তিনি হিংসার জন্য আফসোস করছেন। কিন্তু আমি বলছি, কেবল আফসোস করলে চলবে না, পদক্ষেপও করতে হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে, কেবল এই বিষয়টিতেই জোর দিয়েছি। আপনি প্রশাসনিক প্রধান। যাতে রাজ্যের মানুষের জীবন বাঁচে, তার দেখভালের দায়িত্ব আপনার।”
এদিন রাজ্যপালের সঙ্গে এক ঘণ্টার বৈঠক করেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেন, বসিরহাট-হিঙ্গলগঞ্জের অনেক মণ্ডল সদস্যদের বাড়িতে ভাঙচুর চলেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এই সংখ্যাটা অনেক বেশি। কাকে বিশ্বাস করব?” এরপরই তিনি বলেন, “আমরা এখান থেকে ডায়মন্ড হারবার যাব। কার এলাকা জানেন? আশা করব আমাদের শান্তিতে যেতে দেওয়া হবে। আমরা আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলতে চাই।”
যদিও এই ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম নিয়ে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, “ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম কী? সেটা খায় না মাথায় মাখে? কী ফ্যাক্ট ফাইন্ড করতে আসে? ওরা মণিপুরে যায় না কেন? উত্তর প্রদেশ যায় না কেন? ওরা এখানে রাজনীতি করতে এসেছে।”