কলকাতা: সিআইডির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন সারদাকাণ্ডে ধৃত দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের মা। দেবযানীর মা শর্বরী মুখোপাধ্যায় লিখিতভাবে জানান, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর নামে অভিযোগ জানানোর জন্য দেবযানীকে চাপ দিচ্ছে সিআইডি। সংশোধনাগারে গিয়ে দেবযানীকে চাপ দেওয়া হয়েছে বলে তাঁর মায়ের দাবি। যা ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজ্য রাজনীতিতে চাপানউতর তৈরি হয়েছে। এবার পাল্টা সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি জারি করল সিআইডি (পশ্চিমবঙ্গ)। তারা জানাল, দেবযানীর মায়ের এই দাবি ‘মিথ্যা’ ও ‘ভিত্তিহীন’।
সিআইডি তাদের সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া বিবৃতিতে লিখেছে, ‘বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকেই জানতে পেরেছি দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের মা সিআইডি পশ্চিমবঙ্গের এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তুলেছেন। এটা স্পষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে যে, দেবযানী মুখোপাধ্যায় জয়নগর থানার একটি কেসে সিআইডির তদন্তে রয়েছেন। সে সূত্র ধরেই গত ২৩ অগস্ট দমদমের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে তদন্তে যায় সিআইডি। সংশোধনাগারের কর্মীর উপস্থিতিতে আদালতের নির্দেশ মেনেই আইও তাঁর সঙ্গে কথা বলেন।’ সিআইডির দাবি, ‘দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের মা ৭ সেপ্টেম্বর যে পিটিশন দাখিল করেছেন তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সিআইডি পশ্চিমবঙ্গ একটা তদন্তকারী সংস্থা। আইন মেনেই তারা কাজ করে, আগামিদিনেও করবে। সংবাদমাধ্যমকে অনুরোধ করা হচ্ছে ভুয়ো, অপপ্রচার থেকে দূরে থাকার জন্য।’
দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের মা শর্বরী মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমি জানতে চাই ৯ বছর বাদে সিআইডি আবার এসেছে কেন? আমি অভিযোগ করেছি, আমার মেয়েকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। বলতে বলা হচ্ছে, সুজন চক্রবর্তী এবং শুভেন্দু অধিকারী দু’জনই টাকা নিয়েছেন, মেয়ে সেটা দেখেছে, ওর সামনে লেনদেন হয়েছে। কিন্তু তা তো সত্যি নয়। ৬ কোটি লেনদেনের কথা বলছে সিআইডি। সিআইডির অফিসাররা গেছিল। পরে আমি আমার উকিলের কাছ থেকে মূল যিনি তাঁর নামটা শুনেছি। আমি সিবিআইকে অভিযোগ জানিয়েছি।”
দেবযানীর মায়ের দাবি, সিবিআই যখন তদন্ত করছে, সিআইডি কী করে সেখানে ঢুকছে? একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, তিনি মুখ খোলায় আবারও সিআইডি মেয়ের কাছে যেতে পারে। এ বিষয়ে টুইটারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, ‘লজ্জা! যে সিআইডির এক সময় আলাদা মর্যাদা ছিল, তারা আজ দারোয়ানে পরিণত হয়েছে। বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়ার জন্য বিচারাধীন বন্দীদের ভয় দেখিয়ে ঘৃণ্য স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করে অপরাধ করছে সিআইডি।’
অন্যদিকে এ বিষয়ে সুজন চক্রবর্তী বলেন, “সিআইডির যা কাজ তা যদি করতে না পারে অকাজই তো করবে। দু’জন বাচ্চা ছেলে অপহরণ হল, খুন হয়ে গেল, সিআইডি কিছু করতে পারছে না। এখন অকাজ করছে। এতে তো লোকে হাসবে। কোনও অসুবিধা নেই। যা পারে করুক, যত খুশি করুক। আমরা কোর্টে গিয়ে রক্ষাকবচও নেব না, হাসপাতালে গিয়ে ভর্তিও হব না।”