কলকাতা: মঙ্গলবার ফের উত্তপ্ত করুণাময়ী (Karunamoyee)। এসএলএসটি (SLST) চাকরি প্রার্থীদের অভিযানকে কেন্দ্র করে ফের উত্তেজনা ছড়ায়। এদিন বিকাশ ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন এই চাকরি প্রার্থীরা। মূলত চাকরির নতুন বিজ্ঞপ্তির দাবিতে এদিনের অভিযান ছিল। সেখানেই শুরু হয় পুলিশি ধড়পাকড়। অভিযোগ, আন্দোলনকারীদের টেনে হিঁচড়ে তোলা হয় বাসে। এদিন করুণাময়ী মেট্রো স্টেশন থেকে চাকরি প্রার্থীদের অভিযান বিকাশ ভবনের দিকে এগোতেই করুণাময়ীতে আটকে দেয় পুলিশ। আটক করে বিধাননগর পূর্ব থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ হয় করুণাময়ী চত্বর। যদিও পুলিশের তরফে দাবি করা হয়, যেহেতু বিকাশ ভবনের সামনে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে তাই এখানে কোনও জমায়েতের অনুমতি নেই।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, দীর্ঘ ছ’ বছর ধরে বঞ্চনার শিকার তাঁরা। কিছুদিন আগেই ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের যে আন্দোলন করুণাময়ীতে চলছিল, এখন তা ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী মূর্তির পাদদেশে চলছে। সেই চাকরিপ্রার্থীরা এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “এখন তো যোগ্যতার ভিত্তিতে কেউ কাজের দাবি জানালেই পুলিশ আটকাবে। পুলিশ বলবে, তাদের জন্য সবকিছু বিঘ্নিত হচ্ছে। আমরা যখন বসেছিলাম, তা তো সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে বসেছিলাম। কেন পুলিশ সেদিন রাতে আমাদের ওভাবে তুলে দিল। আন্দোলন করাটা তো আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে।”
এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “পশ্চিমবাংলার সরকার ভীত। লুঠ, চুরি, তোলাবাজি যাদের ভিত্তি, দুষ্কৃতীরা যাদের পরিচালনা করে তারা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে খণ্ডিত করবে এটাই স্বাভাবিক। পরীক্ষায় পাশ করা কেউ চাকরি পাবে না, সাদা খাতায় টাকা জমা দিলে চাকরি। তাই তো প্রতিবাদকে ভয় পাচ্ছে। পুলিশকে এগিয়ে দিচ্ছে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, মানুষের অধিকারের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে।” বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, “চাকরি প্রার্থীরা যেভাবে ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছেন তা উল্লেখযোগ্য। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাঁরা আন্দোলন করছেন আর পুলিশ দিয়ে তা দমনের চেষ্টা চলছে। এর আমরা তীব্র নিন্দা করি, ধিক্কার জানাই।”
এসএলএসটি চাকরি প্রার্থী, যাঁরা ২০১৬ সালে পাশ করেন তাঁদের আন্দোলন ইতিমধ্যেই ৫৯৬ দিন হয়ে গিয়েছে। গান্ধীমূর্তির পাদদেশে বসে আছেন তাঁরা। অন্যদিকে নতুন বিজ্ঞপ্তির দাবিতে একদল নতুন এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থী হাওড়া ও শিয়ালদহে জমায়েতের ডাক দেন। কিন্তু পরে দেখা যায় করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন অভিযান তাঁরা শুরু করেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, আন্দোলন করে চাকরি পাওয়া যাবে না। যোগ্যতার ভিত্তিতে হবে চাকরি। কিন্তু এদিনের আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, যোগ্যতা যাচাই তো পরের কথা। আগে বিজ্ঞপ্তি তো প্রকাশ করা হোক।