কলকাতা: বর্ষা প্রবেশের সময় ইতিমধ্যেই পার করেছে কলকাতা, গোটা দক্ষিণবঙ্গ। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই, উল্টে তীব্র গরমে অস্বস্তি বেড়েছে। রবিবারই পানিহাটিতে দণ্ড মহোৎসবে গরমে অসুস্থ হয়ে তিনজন মারা যান। অসুস্থ হয়েছেন বহু। গরমের বাড়বাড়ন্তের কথা চিন্তা করে স্কুলে গরমের ছুটির মেয়াদ বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত ঘিরে ইতিমধ্যেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি সোমবারই চিঠি দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, ছুটি যেন আর না বাড়ানো হয়। বরং তাদের বক্তব্য, সুষ্ঠুভাবে পাঠ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক স্কুলগুলিতে। সিলেবাস
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডার বক্তব্য, ‘করোনার কারণে দু’ বছর স্কুল বন্ধ ছিল। এরপরই গরমের ছুটির অজুহাত দিয়ে ৪৫ দিন ছুটি। আগামী ১৬ জুন থেকে স্কুল খোলার কথা ছিল। সোমবার আবার নতুন নোটিস। ২৬ জুন পর্যন্ত ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে শিক্ষকমহল, অভিভাবকমহল খুবই উদ্বেগে।’
কিন্তু কেন এই উদ্বেগ? বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বক্তব্য, ২০২০, ২০২১ শিক্ষাবর্ষে কোভিডের কারণে পঠনপাঠন কিছুই হয়নি। ২০২২ শিক্ষাবর্ষেও প্রথম দেড়মাস বিদ্যালয়গুলি কোভিডের জন্য বন্ধই রাখা হয়েছিল। আড়াই মাস পড়াশোনা হল কী হল না, গরমের ছুটি পড়ে যায়। সেই ছুটি দেড় মাসের ছিল। এতে ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনার অভ্যাসটাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে দাবি তাদের।
প্রাথমিক শিক্ষকদের এই সংগঠনের কথায়, এভাবে ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, অথচ তা নিয়ে আবহবিদ, শিক্ষক সংগঠন, শিক্ষাবিদদের কোনও পরামর্শই নেওয়া হচ্ছে না। যেভাবে এই ছুটি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, তা অগণতান্ত্রিক বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা। ছুটি না বাড়িয়ে বকেয়া-সহ বর্তমান সিলেবাস ঠিকভাবে পড়িয়ে তা শেষ করা হোক বলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছে তারা। এভাবে স্কুল ছুটি দেওয়া হলে সরকারি স্কুলগুলির প্রতি অভিভাবকদের একটা বিরূপ ধারণা তৈরি হবে এবং তা থেকে বেসরকারি স্কুলগুলির প্রতি ঝোঁক বাড়বে বলেও দাবি এই শিক্ষক সংগঠনের।