কলকাতা: মুড়ি-মুড়কির মতো পড়েছে বোমা। চলছে গুলি। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ। তুফানগঞ্জ থেকে আউশগ্রাম, খড়গ্রাম, রেজিনগর, বেলডাঙা থেকে মানিকচক, পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Elections 2023) দিন উত্তপ্ত থেকেছে গোটা বাংলা। বুথে বুথে চলেছে হামলা। ঝরেছে রক্ত। কোথাও স্কুলে তৈরি হওয়া পঞ্চায়েতের বুথে ঢোকার মুখেই পড়ে থেকেছে দেহ, কোথাও আবার স্কুলের চেয়ার-টেবিল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কমিশনে জমা পড়েছে অভিযোগের এভারেস্ট। কিন্তু, সুরাহা হয়েছে কতগুলির? তা এখনও প্রশ্নচিহ্নের সামনে। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ভোটকর্মীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু, স্কুলগুলির কী হবে?
এ প্রসঙ্গে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুল শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “ভোটের জন্য স্কুলগুলিকে একটা ফান্ড দেওয়া হয়। বিধানসভা ও লোকসভা ভোটের সময় অবশ্যই দেয়। আগের পঞ্চায়েত ভোটেও দিয়েছিল। তার অনেক টাকাই স্কুলের মেরামতি, টেবিল-চেয়ার কেনা-সহ বিভিন্ন কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়। মোটের উপর ওই টাকা দিয়ে স্কুলের উন্নয়ন হয়। এবারে এখনও পর্যন্ত কোনও টাকা না পাওয়া গেলেও হয়ত পাওয়া যাবে শীঘ্রই। কোন বুথে কতটা দরকার, কতটা কাজের প্রয়োজন রয়েছে তার উপর ভিত্তি করেই ওই টাকা দেওয়া হয়। গড়ে প্রতি বুথে আট-দশ হাজার টাকা তো দেওয়াই হয়।”
অন্যদিকে নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস্ এর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজে ব্যবহৃত রাজ্যের প্রায় প্রতিটি হাই স্কুল, হাই মাদ্রাসা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি ভয়াবহ অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে রীতিমতো ক্ষোভের সুরে তিনি বলেছেন, “বহু জায়গায় দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে এই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চেয়ার, বেঞ্চ এবং আসবাবপত্র ভাঙা হয়েছে। প্রতি নির্বাচনেই এই ছবি দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু, সেই ক্ষতি কখনও পূরণ হয় না।” এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের উদাসীনতা নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি। সরব হয়েছেন সরকার, শিক্ষা বিভাগের ভূমিকা নিয়েও। তাঁর দাবি, কোথাও যোগাযোগ করেও কোনও সুরাহা হয়নি। দিনের শেষে ছাত্র-ছাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হয়। অবিলম্বে এ বিষয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তুলেছেন তিনি।