Jamaluddin Sardar: কীভাবে সোনারপুরের ‘দামাল’ হয়ে উঠলেন জামাল?

Jamaluddin Sardar: জামালের বাড়ি দেখলে চোখ সরানো যাবে না। সোনারপুরে একদম রাস্তার ধারেই জামালের প্রাসাদোপম বাড়ি। ইয়া বড় গেট। গেট থেকে বাড়ি পর্যন্ত যাওয়ার জন্য ঝা চকচকে রাস্তা। দু'ধারে গাছ লাগানো। রিসর্ট নাকি বাড়ি? ধন্দে পড়বেন যে কেউ।

Jamaluddin Sardar: কীভাবে সোনারপুরের 'দামাল' হয়ে উঠলেন জামাল?
জামালউদ্দিন সর্দারImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Jul 18, 2024 | 10:50 PM

সোনারপুর: তিনি নাকি বেকার। কিন্তু, তাঁর প্রাসাদোপম বাড়ি দেখলে পিলে চমকাবে যে কারও। আড়িয়াদহের জয়ন্ত সিংয়ের ‘কীর্তি’ নিয়ে শোরগোলের মধ্যে উঠে আসে তাঁর নাম। কে এই জামালউদ্দিন সর্দার? কীভাবে সোনারপুরের ‘দামাল’ জামাল হয়ে উঠলেন তিনি?

গত কয়েকদিন ধরে আড়িয়াদহের জয়ন্ত সিংকে নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছে। ক্লাবে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে মারধরের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর সরব হয়েছেন রাজনীতিকরা। তাতে শাসক ও বিরোধী-দুই শিবিরই রয়েছে। জয়ন্তর পেল্লাই বাড়ি দেখে পিলে চমকেছে অনেকের। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার প্রথম জামালউদ্দিন সর্দারের খবর প্রকাশ্যে আসে। শিকল দিয়ে এক মহিলাকে মারধরের অভিযোগ উঠে। তারপরই বেরিয়ে আসে জামালের ‘দামাল’ হয়ে ওঠার কাহিনি।

কে এই জামাল? কীভাবে উত্থান?

সোনারপুরের প্রতাপনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সাঙ্গুরের বাসিন্দা জামালউদ্দিন সর্দার। স্থানীয়রা বলছেন, একটা সময় মুহুরির কাজ করতেন জামাল। বলিয়ে-কইয়ে লোক। অভিযোগ, ধীরে ধীরে প্রশাসন ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে ভাব জমে ওঠে তাঁর। মুহুরির কাজ ছেড়ে দেন। শুরু করেন জমির দালালি। সেখান থেকেই উত্থান শুরু ‘দামাল’ জামালের।

ধীরে ধীরে এলাকায় প্রভাব বাড়তে থাকে জামালের। এরপর এলাকার সমস্যা মেটাতে তাঁরই দ্বারস্থ হতে হত। বাড়িতেই বসাতেন সালিশিসভা। সেখানে ‘বিচারক’ জামাল। তাঁর বিচার না মানলেই হত অত্যাচার। বিভিন্ন সমস্যা মেটানোর নামে লক্ষ লক্ষ টাকা নিতেন।

জামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ-

মঙ্গলবার প্রথম জামালের নাম প্রকাশ্যে আসে। এক মহিলা অভিযোগ করেন, পারিবারিক সমস্যা মেটানোর নামে তাঁর স্বামীকে শেকল দিয়ে বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে মারেন জামাল। স্বামীকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়।

এই নিয়ে শোরগোল পড়ার পরই জামালের নামে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসে। কারও অভিযোগ জমি হাতিয়ে নেওয়ার। কেউ বলছেন, সমস্যা মেটানোর নামে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছেন জামাল।

২০২১ সালে ভোট পরবর্তী হিংসায় মৃত্যু হয়েছিল হারান অধিকারী নামে এক ব্যক্তির। অভিযোগ উঠছে, সেই ‘খুনে’ মূল মাথা জামাল। হারানের মৃত্যুর পর কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছিল জামালকেও। কিন্তু, ঘটনাস্থলে জামাল থাকার কোনও প্রমাণ তদন্তকারীরা পাননি। ফলে দু’মাস পরেই মুক্তি পান তিনি।

জামালের প্রাসাদ-

জামালের বাড়ি দেখলে চোখ সরানো যাবে না। সোনারপুরে একদম রাস্তার ধারেই জামালের প্রাসাদোপম বাড়ি। ইয়া বড় গেট। গেট থেকে বাড়ি পর্যন্ত যাওয়ার জন্য ঝা চকচকে রাস্তা। দু’ধারে গাছ লাগানো। রিসর্ট নাকি বাড়ি? ধন্দে পড়বেন যে কেউ। বাড়ির ভিতর ও বাইরে মোট ৫০ টি সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। অন্যের জমি হাতিয়েই নাকি এই প্রাসাদ গড়েছেন জামাল। বাড়ির মধ্যে রয়েছে সুইমিং পুল। শুধু তাই নয়। সেই সুইমিং পুলে রয়েছে কচ্ছপ। বেআইনিভাবে এই কচ্ছপ বাড়ির সুইমিংপুলে রাখার জন্য সর্বোচ্চ তিন থেকে সাত বছরের জেল ও ২৫ লক্ষ টাকার জরিমানা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ডিএফও মিলন মণ্ডল। ঘোড়াও পুষতেন জামাল। দেখাশোনার জন্য ছিল লোকও। এছাড়া আরও ৭ জন তাঁর বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন।

জামালের বাড়ি

একের পর এক অভিযোগ সামনে আসার পর থেকেই পলাতক জামাল। খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর। তৃণমূল বলছে, তাদের দলের সঙ্গে জামালের কোনও সম্পর্ক নেই। এতদিন এত ঘটনার কোনও খবরই কি ছিল না পুলিশের কাছে? কার ব্যর্থতায় সোনারপুরের ত্রাস হয়ে উঠেছিলেন ‘দামাল’ জামাল? প্রশ্ন অনেক। জবাব দেবেন কে…