কলকাতা: এখনই চালু হচ্ছে না গঙ্গার নিচ দিয়ে মেট্রো পরিষেবা। খবর সামনে আসতেই তা নিয়ে প্রশাসনিক মহলে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। কিন্তু, কেন এই সিদ্ধান্ত? প্রসঙ্গত, হুগলি নদীর নিচ দিয়ে হাওড়া ময়দান থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত যাবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। ১৬.৫ কিলোমিটারের এই পথের ১০.৮ কিলোমিটার মাটির তলায়। মাটির উপরে রয়েছে বাকি ৫.৭৫ কিলোমিটার। এসপ্ল্যানেড-হাওড়া ময়দানের দূরত্ব ৪.৮ কিলোমিটার। গঙ্গার তলায় থাকছে ৫২০ মিটারের সুড়ঙ্গপথ। এদিকে গঙ্গার গভীরতা ১৩ মিটার। তার আরও ১৩ মিটার নিচে তৈরি করা হয়েছে এই সুড়ঙ্গ। যেখান দিয়ে ছুটবে মেট্রো। শোনা যাচ্ছিল শীঘ্রই শুরু হবে পরিষেবা। কিন্তু, তাহলে এখন সমস্যাটা কোথায়?
সূত্রের খবর, মূলত প্রশ্ন তোলা হয়েছে, যাত্রীদের সব ধরনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে। গঙ্গার তলায় যে ধরনের যাত্রী নিরাপত্তার প্রয়োজন, সেখানেও রয়েছে কিছু খামতি। সেগুলি কতদিনে সমাধান করা যাবে সেই প্রশ্নও উঠছে। জরুরিকালীন পরিস্থিতির জন্য এভাকুয়েশন শ্যাফ্ট থাকা প্রয়োজন। অথচ ধর্মতলায় এই ধরনের কোনও শ্যাফট তৈরি করতে পারিনি। বিপদ হলে মানুষকে বের করে আনতে হলে কী ব্যবস্থা করবে কেএমআরসিএল? প্রশ্ন তুলেছে কমিশনার অফ সেফটির আধিকারিকরা।
সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবার একমাত্র ডিপো তৈরি হয়েছে সল্টলেকের করুণাময়ীতে। হাওড়া ময়দানে আরও একটি ডিপো তৈরি করার জন্য কোনও জমি কেন পাওয়া গেল না সেই নিয়ে প্রশ্নও তোলা হয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবা এবং উত্তর-দক্ষিণ মেট্রো করিডরের সেন্ট্রাল পয়েন্ট হচ্ছে এসপ্ল্যানেড। দুটি করিডরের মধ্যে যাত্রীদের যাতায়াতের কি ব্যবস্থা করা হয়েছে, তৈরি করা হলেও সেটা কতটা প্রস্তুত রয়েছে পরিষেবা চালুর জন্য, প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
মেট্রো রেকের কোনও সমস্যা হলে করুণাময়ীতে ডিপোতে সেটিকে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু সেটা যেতে হবে বৌবাজারের উপর দিয়ে। আর সেই বউবাজারের ভূগর্ভস্থ মেট্রো পরিকাঠামো এখনও তৈরি হয়নি। তাহলে যান্ত্রিক ত্রুটি হলে রেক কিভাবে নিয়ে যাওয়া হবে? জানতে চেয়েছেন কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির আধিকারিকরা। স্বাভাবিকভাবেই এই ধরনের একাধিক প্রশ্ন ওঠায় কিছুটা হলেও চিন্তিত কেএমআরসিএল। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত নির্দিষ্ট মাইলস্টোন ছুঁতে পারেনি কেএমআরসিএল। তাই আদৌ লোকসভা নির্বাচনের আগে গঙ্গার নিচ থেকে ইতিহাস রচিত হবে কি না, সেটাই এখন প্রশ্ন।