AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Humayun Kabir: কংগ্রেস-তৃণমূল-বিজেপি! জল খেয়েছেন সব ঘাটের, কণ্ঠ জোরে ছাড়তেই কি হুমায়ুনের এই হাল?

Bengal Politics: তৃণমূলে থেকে দলের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছিলেন এই হুমায়ুনই। শুধু দল বললে ভুল হবে, খোদ সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন তিনি। ততদিনে রেজিনগরে একটা উপ নির্বাচন হয়ে গিয়েছে, আর তাতে হেরেও গিয়েছেন হুমায়ুন। স্বাভাবিকভাবেই হারিয়ে ফেলেন মন্ত্রীপদ। এরপরই বিদ্রোহ শুরু।

Humayun Kabir: কংগ্রেস-তৃণমূল-বিজেপি! জল খেয়েছেন সব ঘাটের, কণ্ঠ জোরে ছাড়তেই কি হুমায়ুনের এই হাল?
Image Credit: TV9 Bangla
| Updated on: Dec 04, 2025 | 2:11 PM
Share

কলকাতা: বৃহস্পতিবার সকালে হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা চত্বরে তখনও দাঁড়িয়ে হুমায়ুন। সাংবাদিকদের কাছ থেকে খবর শুনেই রেগে বেরিয়ে যান সেখান থেকে। সাসপেন্ড হওয়ার খবর শুনে কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় তাঁকে। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের কাছে এটা প্রত্যাশিত ছিল। গত কয়েকমাসের ঘটনাক্রমই বলছে সে কথা। আর হুমায়ুনের জন্য এই ঘটনা তো নতুন নয়। বিদ্রোহ আর বিরোধিতায় সিদ্ধহস্ত তিনি।

সাসপেন্ড হুমায়ুন

তৃণমূলের বক্তব্য, হুমায়ুন কবীর দলবিরোধী কাজ করেছেন। দলের অবস্থানের বাইরে গিয়ে বাবরি মসজিদ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওয়ার্নিং দেওয়া সত্ত্বেও নিজের বক্তব্যে অনড় থেকেছেন। তবে দল বিরোধী কাজের রেকর্ড তাঁর অনেক পুরনো। মাঝে-মধ্যেই বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন বঙ্গ রাজনীতির অন্যতম এই চরিত্র।

কংগ্রেসের নির্দেশ মানেননি ‘অধীর-ঘনিষ্ঠ’ হুমায়ুন

পেশায় ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবীর একসময় কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। জেলায় তাঁর একটা জনপ্রিয়তা যে ছিল, সে কথা অস্বীকার করে না কেউ। ২০১১ সালে অর্থাৎ যে বছর বামেদের বিদায়, সেই সময় তৈরি হয়েছিল বাম-কংগ্রেস জোট। মুর্শিদাবাদ ও মালদহের কয়েকজন নেতা সেই সময় রাজ্যের মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী পদ পেয়েছিলেন। সেই দলে ছিলেন হুমায়ুন।

পরে জোট ভাঙে। কংগ্রেসের হাইকমান্ডে নির্দেশে সাবিনা ইয়াসমিন, আবু হেনা, মানস ভুঁইয়া (তখন কংগ্রেসে ছিলেন), আবু নাসের খান চৌধুরীর মতো নেতারা পদত্যাগ করেন। কিন্তু সেখানেও ব্যতিক্রমী হুমায়ুন। পদত্যাগ করেননি। সেই প্রথম সাসপেন্ড হওয়া হুমায়ুনের! কংগ্রেস তাঁকে সাসপেন্ড করে। বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলের যোগ দেন একসময় অধীর চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হুমায়ুন।

২০১৫-তেও তৃণমূলে বিদ্রোহ

মাত্র তিন বছরের মধ্যেই কেটে গেল মোহ। তৃণমূলে থেকে দলের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেছিলেন এই হুমায়ুনই। শুধু দল বললে ভুল হবে, খোদ সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন তিনি। ততদিনে রেজিনগরে একটা উপ নির্বাচন হয়ে গিয়েছে, আর তাতে হেরেও গিয়েছেন হুমায়ুন। স্বাভাবিকভাবেই হারিয়ে ফেলেন মন্ত্রীপদ। এরপরই বিদ্রোহ শুরু। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন দলে গুরুত্ব পাচ্ছে, প্রশ্ন তুলতে শুরু করায় তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। তৎকালীন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক পার্থ চট্টোপাধ্যায় সেই ঘোষণা করেছিলেন।

নির্দল হয়ে তৃণমূলকে টেক্কা

তারপর জল গড়িয়েছে অনেক। সেই পার্থও সাসপেন্ড হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। আর এদিকে, ফের অন্য দল ঘুরে ফেলেছেন হুমায়ুন। তৃণমূল সাসপেন্ড করার পর নিজের ক্ষমতা দর্শাতেই তৎপর ছিলেন তিনি। এক বছর পর বিধানসভা নির্বাচন ছিল। ২০১৬-তে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করেন হুমায়ুন। তৎকালীন কংগ্রেস বিধায়ক রবিউল চৌধুরীর বিরুদ্ধে লড়াই করেন, কিন্তু হেরে যান। ভোটের ফারাক ছিল মাত্র হাজার পাঁচেকের। তৃণমূলকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছিলেন তিনি।

টিকিট পেতেই বিজেপিতে?

মাঝে আবার ২ বছরের ফারাক। তৃণমূলের ফেরার জায়গা ছিল না, কারণ ৬ বছর হয়নি তখনও। বেছে নিলেন বিজেপিকে। ২০১৮-তে বিজেপিতে যোগ দিয়ে আবারও ভোটে লড়েন হুমায়ুন। তবে বিশেষ সুবিধা হয়নি। চলে যান তৃতীয় স্থানে। ওই আসনে জিতে সাংসদ হন আবু তাহের খান। যদিও আড়াই লক্ষ ভোট পেয়েছিলেন তিনি, তবে তৃতীয় স্থান বোধহয় বিশেষ পছন্দ হয়নি হুমায়ুনের। দেখতে দেখতে কেটে যায় ৬ বছর। ফিরে আসেন তৃণমূলে।

আবার তৃণমূল, আবার বিদ্রোহ

২০২১-এ ভরতপুর থেকে টিকিট পান হুমায়ুন কবীর। দীর্ঘদিন পর জয়ের স্বাদ পান তিনি। আবারও ভোট আসছে। টিকিট পাবেন কি না, সেটা পরের প্রশ্ন, কিন্তু যেভাবে ভোটের আগে দলের বিরুদ্ধে বারবার মুখ খুললেন, তাতেই স্পষ্ট ক্ষমতা পাওয়ার জন্য কোনও দলকেই তোয়াক্কা করেন না তিনি। মুর্শিদাবাদে কান পাতলেই শোনা যায়, হুমায়ুনের অনুগামী রয়েছে অনেকেই। তাই কি হুমায়ুন দেখিয়ে দিতে চান, দল না থাকলেও তিনি একাই কাফি! নাকি তৃণমূলের সন্দেহ ঠিক। ভোট কাটাতে কেউ হুমায়ুনের বিদ্রোহী-সত্ত্বাকে কেউ কাজে লাগাতে চাইছে?