কলকাতা: স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে কি ফের দেখা যাবে চিকিৎসক সুহৃতা পালকে? সার্চ কমিটির প্যানেল ঘিরে তুঙ্গে জল্পনা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে উপাচার্য নিয়োগে গঠন করা হয়েছে সার্চ কমিটি। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগে গত রবিবার আটজন আবেদনকারীর ইন্টারভিউ নিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের নেতৃত্বাধীন কমিটি।
স্বাস্থ্য দফতরের একাংশের দাবি, আটজনের মধ্যে উপাচার্য পদের জন্য যে তিনজনের নাম সুপারিশ আকারে নবান্নে পাঠানে হয়েছে, সেই তালিকায় রয়েছেন আরজি কর কাণ্ডে বিতর্কিত স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সুহৃতা পাল। অন্য দুই সদস্য হলেন এনআরএসের অধ্যক্ষ পীতবরণ চক্রবর্তী। কল্যাণী জেএনএমের প্রাক্তন অধ্যক্ষ কেশব মুখোপাধ্যায়। যদিও, স্বাস্থ্য ভবনের আরেকাংশের বক্তব্য, সুহৃতা পাল ইন্টানভিউয়ে হাজির হলেও, তিনজনের নামের তালিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। প্রশ্ন উঠছে, সুপারিশ প্যানেলে সুহৃতা পালের নাম থাকার খবরটি সত্যি হলে তাতে কি সম্মতি দেবেন আচার্য সিভি আনন্দ বোস?
প্রশ্ন উঠছে, সুহৃতা পালের নামে কি সম্মতি দেবেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস? স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে টোকাটুকির সংস্কৃতির অভিযোগ পেয়ে ইউজিসি’র নিয়ম না মেনে নিয়োগের কারণ দেখিয়ে সুহৃতা পালকে সরিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সুহৃতা।
এই ঘটনাক্রমকে সামনে রেখেই জুনিয়র-সিনিয়র চিকিৎসকদের প্রশ্ন, মেডিক্যাল কলেজগুলির পরীক্ষা ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার আশ্বাস দিয়ে আগামীতে পরীক্ষায় যাতে কেউ ঘাড় ঘোরাতে না পারে মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রশ্ন, যাঁর আমলে পরীক্ষা ব্যবস্থা ঘিরে বিতর্ক, প্যানেলে তাঁর নামে কেন আপত্তি জানাবে না নবান্ন? এই প্রশ্ন উঠছে, তার কারণ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই এক্তিয়ার রাজ্যকে দেওয়া রয়েছে। নবান্নের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাতের আবহে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে উপাচার্য নিয়োগের জট কাটাতে তিন ধরনের সমাধান সূত্রের কথা বলা রয়েছে।
প্রথমত, সার্চ কমিটি উপাচার্যদের প্যানেল সুপারিশ আকারে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাবে। প্যানেলে থাকা কোনও নামে আপত্তি থাকলে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ-সহ তার কারণ উল্লেখ করে আচার্যের কাছে পাঠাবেন মুখ্যমন্ত্রী। দ্বিতীয়ত, মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো তালিকা থেকে উপাচার্য নিয়োগ করবেন আচার্য। মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো ক্রমিক তালিকা অনুযায়ী উপাচার্য বেছে নেবেন আচার্য। নবান্নের পাঠানো তালিকায় আপত্তি থাকলে আচার্যও তথ্যপ্রমাণ-সহ তাঁর মতামত জানাতে পারবেন। আর তৃতীয়ত, রাজভবন ও নবান্ন, দুপক্ষই যদি একে অপরের সিদ্ধান্তে সহমত না হতে পারেন তাহলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সুপ্রিম কোর্ট। এখন দেখার স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সুহৃতা পালকে নিয়ে কী অবস্থান নেয় নবান্ন।