কলকাতা : প্রতিদিন নানা ধরনের মেসেজ আসে ফোনে। হোয়াটসঅ্যাপ, ইমেল ভরে যায় অজানা মেসেজে। তার মধ্যে কোনটায় লুকিয়ে আছে বিপদ, তা বুঝে ওঠা কঠিন। আর এবার সেই ফাঁদের পা দিলেন খাস কলকাতার বাসিন্দা এক মহিলা। একটা লিঙ্কে আঙুল ছোঁয়ানোর পরই কার্যত তাঁর নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় পুরো ফোনটাই। হ্যাকারের কবজায় চলে যায় ফোনে থাকা নম্বর, গ্যালারিতে থাকা ছবি। আর তারপরই শুরু হয়ে যায় প্রতারকের খেল। মহিলার এডিট করা নগ্ন ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁর আত্মীয়-বন্ধুদের ফোনে।
হোয়াটসঅ্যাপের একটি মেসেজে ক্লিক করার পরই বিপাকে পড়ে যান মুকুন্দপুরের বাসিন্দা এক মহিলা। সেখানে দেওয়া লিঙ্কে ক্লিক করেছিলেন বলে জানান ওই মহিলা। হ্যাকারেরা প্রথমে অনলাইনে দু হাজার টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিল। পরে ১২ দিনে সেটা হয়ে যায় ২০ হাজার টাকা। মহিলার ছবি এডিট করে তৈরি করা হয় অশ্লীল ছবি। তারপর সেই ছবি মহিলার কন্টাক্ট-এ থাকা পরিচিতদের কাছে পাঠানো হয়। এমনকি পরিচিতদের ফোন করে বলা হয়, এই মহিলা টাকা ধার নিয়েছেন, সেই টাকা টাকা আপনাদেরকে শোধ করতে হবে। এপ্রিল মাস থেকে শুরু হয় এই চাপ।
লালবাজারে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলেই দাবি মহিলার। সাইবার থানারও দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। এখনও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। মহিলার স্বামীর কাছেও একাধিকবার ফোন এসেছিল প্রতারকের।
মহিলা জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর স্বামী ঘর থেকে বেরতে পারছেন না। বাড়িতে দরজা -জানালা বন্ধ করে রয়েছেন। পরিবারের দাবি, তাঁদের আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। পাড়ার বেশির ভাগ লোকজনের মোবাইলেই মহিলার নগ্ন ছবি ছড়িয়ে পড়েছে বলে দাবি পরিবারের। শুধু তাই নয়, তাঁর এক প্রতিবেশীকে ফোন করে তাঁর মেয়েকে অপহরণ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপ আন-ইন্সটল করে আবার ইন্সটল করার পরও কোনও লাভ হয়নি।
সাইবার অপরাধের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে কলকাতায়। পুলিশ বা প্রশাসনে তরফে বারবার সতর্ক হওয়ার কথা বলা হয় সাধারণ মানুষকে। আর এই ঘটনা থেকে প্রমাণ হল, একটু অসাবধান হলেই বাড়তে পারে বিপদ।