নয়া দিল্লি: নিজের চাঁচাছোলা মন্তব্যের জন্য তিনি সর্বদাই ভাইরাল। কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরও তিনি বেশ কিছু ঝাঁঝালো বক্তব্য রাখবেন, সেটা প্রত্যাশিতই ছিল। বাস্তবেও তাই হল। রাহুল গান্ধীর হাত ধরে ‘হাত’-এ হাত রেখেই কানহাইয়া (Kanhaiya Kumar) বলে দিলেন, দেশকে বাঁচাতেই তিনি কংগ্রেসে (Congress) যোগ দিয়েছেন। কারণ, “কংগ্রেস না বাঁচলে দেশও বাঁচবে না”, এমনটাই বিশ্বাস করেন কানহাইয়া। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে, সরকারিভাবে শুধুমাত্র কানহাইয়া কুমারই এ দিন কংগ্রেসে যোগ দেন। গুজরাটের নির্দল বিধায়ক কংগ্রেসের পক্ষে নিজের সমর্থন জাহির করলেও ‘নির্দলই’ থেকে গিয়েছেন।
কংগ্রেসের উত্তরীয় গলায় পরে নেওয়ার পর সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত হয়ে তাঁর দলবদলের কারণ ব্যাখ্যা করেন কানহাইয়া। বলেন, “আমি কংগ্রেসে শামিল হলাম কেননা এটা শুধুমাত্র একটা রাজনৈতিক দল নয়। বরং একটা ভাবনা। দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও সবথেকে গণতান্ত্রিক দল কংগ্রেস। আমি গণতান্ত্রিক শব্দটির উপর জোর দিচ্ছি কারণ আমার মতো অনেকেই মনে করেন, যদি কংগ্রেস না থাকে, তবে দেশও থাকবে না। কংগ্রেস যদি না বাঁচে, দেশও বাঁচতে পারবে না।” তাঁর আরও ব্যাখ্যা, “কংগ্রেস একটা বিরাট বড় জাহাজের মতো। যদি এটা বেঁচে থাকে, আমি বিশ্বাস করি অনেক মানুষের স্বপ্ন বেঁচে রইবে। মহাত্মা গান্ধীর একতা, ভগং সিংয়ের সাহস, বিআর আম্বেদকরের সমতার চিন্তাধারা সুরক্ষিত থাকবে। সেই কারণেই আমার কংগ্রেসে যোগ দেওয়া।”
বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে কানহাইয়ার কটাক্ষ, একটি বিশেষ ধরনের মতাদর্শ ভারতের মূল্যবোধ, সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং ভবিষ্যৎ নষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এই অবস্থায় কংগ্রেসকে না রক্ষা করলে দেশকে রক্ষা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন এই যুব নেতা।
কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুলের উপস্থিতিতেই কংগ্রেসে এ দিন যোগ দেন কানহাইয়া। এরপর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি সাংবাদি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। যদিও সেই সাংবাদিক বৈঠকে হাজির ছিলেন না রাহুল। তবে দিল্লিতে কংগ্রেসের কার্যালয়ে যোগদান পর্বের সময় রাহুল উপস্থিত ছিলেন বলে দেখা গিয়েছে ছবিতে।
২০১৯ সালে সিপিআই-এর টিকিটে বিহারের বেগুসরাই কেন্দ্র থেকে লোকসভা নির্বাচনে লড়েন কানহাইয়া। কিন্তু বিজেপির বিরুদ্ধে জিততে পারেননি। অন্যদিকে, জিগনেশ ২০১৭ সালে গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে বদগাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেন। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে এই দলিত নেতাকে কংগ্রেস নিজের প্রধান মুখ করে তুলতে পারে, এমন জল্পনা এখন থেকেই জন্ম নিতে শুরু করেছে। কানহাইয়াকেও একই ভাবে কাজে লাগানো হতে পারে বিহারের রাজনীতিতে।
এই যোগদানের পর কংগ্রেসের প্রতি যুব সমাজের নজর একটু হলেও ঘোরে কিনা সেটাই দেখার। যেভাবে কংগ্রেস ক্রমশ ঘরোয়া কোন্দল ও রাজ্যে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রিত্বের কাড়াকাড়ি নিয়ে বিব্রত, সেই সময় কিছুটা হলেও তারুণ্যের অক্সিজেন পাবে কংগ্রেস। নির্বাচনে এর প্রভাব আদৌ পড়বে কিনা সেটা বুঝতে আরও অপেক্ষা করতে হবে। তবে প্রচার মাধ্যম্যে কংগ্রেসের প্রকাশ যে একটু হলেও বাড়বে, সেটা নির্দ্বিধায় বুঝছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
আরও পড়ুন: Kanhaiya Kumar: ইয়ে লাল রং কব মুঝে ছোড়েগা… ‘কমরেড’ কানহাইয়ার ফেলে আসা ‘লাল দিন’