পুরুলিয়া: আসন্ন বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন অযোধ্যা পাহাড় জুড়ে পালিত হয় শিকার উৎসব। সাঁওতাল সমাজের পক্ষ থেকে অবশ্য এই পার্বণকে বলা হচ্ছে সেঁদরা। এই উৎসবে যাতে এবছর বন্যপ্রাণের ক্ষতি না হয় তার জন্য সারা পাহাড় জুড়ে চালানো হচ্ছে প্রচার। স্থানীয় আদিবাসীরা জানিয়েছেন প্রথাগত পূজা অর্চনা চললেও নিজেদের এলাকায় শিকার নিয়ে সচেতন তারা। গত কয়েক বছর কোভিডের জন্য সার্বিকভাবে না হলেও এবছর বুদ্ধ পূর্ণিমায় বিপুল সংখ্যক আদিবাসী জনজাতির মানুষ পাহাড়ে আসতে পারেন বলে ধারণা বনদফতরের। চিরাচরিত রীতি মেনে বুদ্ধ পূর্ণিমার রাত্রে অযোধ্যা পাহাড় জুড়ে শিকার হয়ে থাকে। এবছর যাতে তা না হয় তার জন্য এক সঙ্গে প্রচারে নেমেছে বন দফতর এবং আদিবাসীদের সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহাল।
সংগঠনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পাহাড়ে প্রাচীন রীতি মেনে এবারও অনুষ্ঠিত হবে “ল বীর বাইসী”, যা হল তাদের বার্ষিক সভা। এখানে সাঁওতাল সমাজের বিভিন্ন আইন কানুন নিয়ে আলোচনা হবে । সমাজের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানও করা হবে এখানে। শিকার নয় আসল উদ্দেশ্য হল পাহাড়ের সুতান তাণ্ডীতে অনুষ্ঠিত এই সভা। শিকার যাতে না হয় তার জন্য জাল নিয়ে পাহাড়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই বনদফতরের পক্ষ থেকে পাহাড় জুড়ে লাগাতার শিকারের বিরুদ্ধে চালানো হচ্ছে প্রচার। একই সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে পোস্টার এবং হ্যান্ড বিল।
বনদফতরের প্রচার থাকা সত্ত্বেও আদিবাসীর সংস্কৃতির অন্যতম এই শিকার উৎসব চলছে এবং তাদের নিয়ম মত মানুষ যোগও দিচ্ছে এই শিকারে। আর এরই মধ্যে এক আদিবাসী কিশোর তিরবিদ্ধ হওয়ায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। যদিও পরিবারের দাবি, ওই কিশোর নিজের বাড়িতেই তির নিয়ে ছোটাছুটি করছিল। অসতর্কতায় অসাবধানতাবশত তিরের উপর পড়ে গিয়ে তিরবিদ্ধ হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে বর্তমানে ওই কিশোরের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।