Cold vs Hot Water Bath: ঠান্ডা জলের ‘শক’ নাকি গরম জলের আরাম? শীতে স্নানের সঠিক উপায় জানুন
শীতকালে স্নান করার কথা উঠলেই যেন মনে কাঁপুনি ধরে যায়। তীব্র ঠান্ডা থেকে বাঁচতে অনেকেই ভরসা রাখেন গরম জলের স্নানের উপর। আবার অনেকে সারা বছর ঠান্ডা জলের স্নান করেই অভ্যস্ত। কিন্তু স্বাস্থ্য, ত্বক ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর এই দুই ধরনের স্নানের প্রভাব কি এক?

শীতকালে স্নান করার কথা উঠলেই যেন মনে কাঁপুনি ধরে যায়। তীব্র ঠান্ডা থেকে বাঁচতে অনেকেই ভরসা রাখেন গরম জলের স্নানের (Hot Water Bath) উপর। আবার অনেকে সারা বছর ঠান্ডা জলের স্নান (Cold Water Bath) করেই অভ্যস্ত। কিন্তু স্বাস্থ্য, ত্বক ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর এই দুই ধরনের স্নানের প্রভাব কি এক? বিশেষজ্ঞদের মতে, উভয় স্নানেরই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং ঝুঁকি। এই দ্বিধার নিরসন করতে এবং শীতে আপনার শরীরের জন্য সেরা স্নান কোনটি তা বেছে নিতে, চলুন জেনে নেওয়া যাক ঠান্ডা ও গরম জলের স্নানের প্রভাবগুলি।
গরম জলে স্নানের ক্ষেত্রে
১) পেশি শিথিলতা
উষ্ণ জল পেশি ও স্নায়ুকে আরাম দেয়, ক্লান্তি ও গাঁটের ব্যথা কমায়। পাশাপাশি এটি ভাল ঘুমের সহায়ক।
২) রক্তনালী প্রসারিত হওয়া
অতিরিক্ত গরম জল রক্তনালীকে প্রসারিত করে, যা কিছুক্ষণের জন্য মাথাব্যথা বা দুর্বলতার কারণ হতে পারে।
৩) ছিদ্র খোলা
গরম জল ত্বকের ছিদ্রগুলিকে খুলে দেয়, যা গভীর থেকে ময়লা ও তেল পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
৪) শুষ্কতা বৃদ্ধি
অত্যধিক গরম জল ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট করে দেয়। এতে ত্বক ও মাথার ত্বক শুষ্ক, খসখসে ও সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। খুশকির সমস্যাও বাড়তে পারে।
৫) সর্দি-কাশি থেকে স্বস্তি
গরম জলের বাষ্প সর্দি ও কাশির উপসর্গগুলি কমাতে সাহায্য করে।সরাসরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে তেমন ভূমিকা নেই।
গুরুত্বপূর্ণ টিপস: খুব গরম জল ব্যবহার না করে ঈষদুষ্ণ জল ব্যবহার করুন এবং স্নানের সময় কমান।
ঠান্ডা জলে স্নানের ক্ষেত্রে
১) রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি
ঠান্ডা জলের সংস্পর্শে শরীর নিজের তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য হৃৎপিণ্ডের গতি ও রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়, যা শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে।
২) হাইপোথার্মিয়ার ঝুঁকি
যারা সর্দি-কাশির সমস্যায় ভুগছেন বা যাদের কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য তীব্র ঠান্ডা জল ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
৩) তেল ধরে রাখা
ঠান্ডা জল ত্বকের ছিদ্র ও চুলের কিউটিকল বন্ধ করে দেয়, ফলে ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ও তেল বজায় থাকে। ত্বক থাকে কম শুষ্ক ও চুল হয় ঝলমলে।প্রাথমিক পর্যায়ে ত্বকে সামান্য অস্বস্তি বা লালচে ভাব আসতে পারে।
৪) ইমিউনিটি বুস্ট
ঠান্ডা জল শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা বাড়াতে পারে বলে গবেষণায় জানা গেছে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।সরাসরি সর্দি-কাশির সময় ঠান্ডা জল ব্যবহার করলে অবস্থার অবনতি হতে পারে।
তা হলে সেরা সমাধান কোনটি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে ঈষদুষ্ণ বা হালকা গরম জল দিয়ে স্নান করা সবচেয়ে নিরাপদ ও উপকারী। এটি গরম জলের আরাম দেয়, কিন্তু অতিরিক্ত উষ্ণতার ক্ষতিকর দিকগুলো এড়ানো যায়। তবে, যদি আপনি ঠান্ডা জলের উপকারিতা পেতে চান, তবে কনট্রাস্ট শাওয়ার পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। প্রথমে হালকা গরম জল দিয়ে স্নান শুরু করুন এবং শেষে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ডের জন্য ঠান্ডা জল ব্যবহার করুন। এতে উষ্ণতার আরাম ও শীতলতার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি— দুটোরই ফায়দা পাওয়া যেতে পারে।
নিজের শরীরের চাহিদা ও অভ্যাসের উপর নির্ভর করে স্নানের জল নির্বাচন করা উচিত। ত্বকের শুষ্কতা কমাতে চাইলে ঠান্ডা বা হালকা গরম জলের স্নানই শ্রেয়। অন্যদিকে, পেশির ব্যথা কমাতে গরম জলই বেশি কার্যকর। তবে মাথায় রাখবেন, কোনও অবস্থাতেই যেন জলের তাপমাত্রা অত্যধিক গরম না হয়। শীতকালে সুস্থ থাকতে সঠিক তাপমাত্রা বজায় রেখে স্নান করুন এবং স্নানের পরই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে ত্বককে আর্দ্র রাখুন।
