Cold Weather Fitness: ঠান্ডা বাতাস উপেক্ষা করে ফিট থাকুন, শীতে দৌড়ানো ও হাঁটার সময় কী কী সতর্কতা নেবেন?
শীতকাল মানেই লেপের উষ্ণতা আর আলস্যের আহ্বান। কিন্তু সুস্থ থাকতে এবং ফিটনেস রুটিন বজায় রাখতে এই আরামের ফাঁদ এড়িয়ে বাইরে বেরনো প্রয়োজন। ঠান্ডা আবহাওয়া অনেক সময় ব্যায়ামের জন্য অনুকূল হলেও, এর নিজস্ব কিছু ঝুঁকি রয়েছে।

শীতকাল মানেই লেপের উষ্ণতা আর আলস্যের আহ্বান। কিন্তু সুস্থ থাকতে এবং ফিটনেস রুটিন বজায় রাখতে এই আরামের ফাঁদ এড়িয়ে বাইরে বেরনো প্রয়োজন। ঠান্ডা আবহাওয়া অনেক সময় ব্যায়ামের জন্য অনুকূল হলেও, এর নিজস্ব কিছু ঝুঁকি রয়েছে। যেমন – ডিহাইড্রেশন, ফ্রস্টবাইট বা পেশির টান লাগা। তবে সঠিক প্রস্তুতি এবং সতর্কতা অবলম্বন করলে তীব্র শীতেও আপনার দৌড়ানো বা হাঁটার রুটিন মসৃণভাবে চালিয়ে যেতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক শীতকালে ফিটনেস (Cold Weather Fitness) সেশনগুলো কীভাবে নিরাপদ ও কার্যকর করা যায়।
ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীরচর্চা করার সময় নিম্নলিখিত সতর্কতাগুলি বিশেষভাবে মেনে চলা উচিত।
১. পোশাক নির্বাচন
ঠান্ডায় বেরনোর সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল সঠিক পোশাক নির্বাচন। একসঙ্গে খুব ভারী পোশাক না পরে একাধিক হালকা স্তরে পোশাক পরতে পারেন। এতে শরীর গরম থাকবে ও ঘাম হলে ধীরে ধীরে একটি স্তর খুলে ফেলা যেতে পারে। শরীরের সঙ্গে লেগে থাকা ভেতরের পোশাকে পলিয়েস্টার বা উল জাতীয় ফেব্রিক ব্যবহার করুন, যা ঘাম দ্রুত শুষে নিতে পারে। তুলো বা কটন এড়িয়ে চলুনয কারণ এটি ঘাম ধরে রাখে এবং শরীরকে দ্রুত ঠান্ডা করে দেয়। বাইরের স্তরে এমন জ্যাকেট বা উইন্ডব্রেকার ব্যবহার করুন যা বাতাস এবং আর্দ্রতা থেকে রক্ষা করে। দেহের তাপমাত্রা দ্রুত হ্রাস পায় হাত ও পায়ের পাতা দিয়ে। তাই গ্লাভস, টুপি (বা হেডব্যান্ড) এবং গরম মোজা পরা আবশ্যিক।
২. হাইড্রেটেড থাকা
অনেকেই মনে করেন শীতে ঘাম কম হয় বলে জলের প্রয়োজন কম। কিন্তু এটি একটি ভুল ধারণা। দৌড়নো বা হাঁটার আগে, চলাকালীন এবং পরে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন। শুষ্ক ঠান্ডা বাতাস শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীর থেকে দ্রুত আর্দ্রতা বের করে দেয়, যা ডিহাইড্রেশন ঘটায়। ওয়ার্কআউটের আগে এক কাপ গরম জল বা ভেষজ চা পান করা যেতে পারে।
৩. ওয়ার্ম-আপ ও কুল-ডাউন
ঠান্ডা আবহাওয়ায় পেশিগুলি আরও বেশি শক্ত বা অনমনীয় থাকে। বাইরে বের হওয়ার আগে ঘরের ভিতরে ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য হালকা স্ট্রেচিং বা ডায়নামিক ওয়ার্ম-আপ (যেমন জাম্পিং জ্যাক, ইন-প্লেস মার্চিং) করুন। পেশি গরম হলে চোট লাগার ঝুঁকি কমবে। ওয়ার্কআউট শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে থেমে না গিয়ে ধীরে ধীরে হাঁটার মাধ্যমে শরীরকে ঠান্ডা হতে দিন। এরপর দ্রুত গরম পোশাক পরে নিন।
৪. সূর্যের আলো ও ত্বক রক্ষা
শীতকালে সূর্যের তেজ কম মনে হলেও এর ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। মেঘলা দিনেও এসপিএফ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন, বিশেষত যদি বরফের কাছাকাছি থাকেন। তাপমাত্রা খুব কম থাকলে বা ভেজা অবস্থায় বেশিক্ষণ বাইরে থাকবেন না। কান, নাক, আঙুল এবং পায়ের পাতার দিকে বিশেষভাবে নজর দিন, কারণ এই অংশগুলিতে ফ্রস্টবাইট (তীব্র ঠান্ডায় ত্বক ও টিস্যু জমে যাওয়া) হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
৫. দৃশ্যমানতা
শীতকালে দিন ছোট হয় এবং কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কমে যায়। গাঢ় রঙের পোশাকের বদলে উজ্জ্বল রঙের পোশাক এবং প্রতিফলনকারী গিয়ার (Reflective Gear) ব্যবহার করুন যাতে অন্ধকারে বা কুয়াশায় দূর থেকেও আপনাকে দেখা যায়। এমন রাস্তায় হাঁটা বা দৌড়নো এড়িয়ে চলুন যেখানে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নেই।
ঠান্ডা আবহাওয়া আপনার ফিটনেস যাত্রায় বাধা হবে না, যদি আপনি সঠিক সতর্কতা অবলম্বন করেন। পোশাকের লেয়ারিং, পর্যাপ্ত জলপান, সঠিক ওয়ার্ম-আপ এবং ঠান্ডা থেকে দ্রুত শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলিকে সুরক্ষিত রাখা — এই সহজ নিয়মগুলি মেনে চললেই যে কেউ উপভোগ করতে পারবেন শীতকালের শান্ত ও সুন্দর পরিবেশে হাঁটা বা দৌড়ানোর অভিজ্ঞতা। তাই আর দেরি কেন? প্রস্তুতি নিন এবং শীতের সতেজ সকালে আপনার ওয়ার্কআউট শুরু করুন।
