চলছে বাঙালির বিয়ের মধুমাস আর এই সময়ে ফ্যাশনে বেনারসি নিয়ে কথা হবে না তা আবার হয় নাকি! অঘ্রাণ মাসের বিবাহের আপাতত এখানেই ইতি। এই বছরও শেষদিনে রেকর্ড সংখ্যক বিয়ে হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া ছবিতে ছবিতে ছয়লাপ। বিয়ে এখন জীবনের মস্ত বড় ইভেন্ট। যত দিন যাচ্ছে তত যেন বিয়ের বহর বাড়ছে। যদিও এখনও এরকম কিছু মানুষও আছেন যাঁদের সাদামাটা সই সাবুদ করে বিয়েই পছন্দ। বিয়ের দিনটা যে কোনও মেয়ের কাছেই একটা রূপকথার মত। পক্ষীরাজে করে বর না আসলেও ঘোড়ার গাড়ি চেপে এখনও বর আসে বা কোনও অ্যান্টিক গাড়ি। সেই সঙ্গে আলো, বাজির রোশনাই, সানাই, নাচ-গান… সে এক এলাহি আয়োজন। মানুষ টিভির পর্দায় যেমনটা দেখেন ঠিক তেমনটাই করতে চান নিজের বিয়েতে।
বিয়ের অন্তত একবছর আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় যাবতীয় প্ল্যানিং ও কেনাকাটা। বিয়েও এখন অনেক বড় ইভেন্ট। তাই জোরদার কেনাকাটা চলতেই থাকে। একই সঙ্গে আরও একটি বিষয়ের দিকে নজর থাকে কড়া। তা হল কোন দিন কেমন পোশাক পরা হবে। বিয়ের এই লুকসেটটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। মেহেন্দি, গায়েহলুদ, আইবুড়োভাত একাধিক অনুষ্ঠান থাকে বিয়েকে ঘিরে। বিয়ের তিনদিন আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় সাজো সাজো রব। মেহেন্দিতে লেহঙ্গা, আইবুড়োভাতে সিল্ক, গায়েহলুদে হ্যান্ডলুম এমন নানাবিধ ব্যাপার থাকে। যে যেমনটা চান ঠিক তেমনভাবেই সব কিছু সেট করে নেন। তবে বিয়ের দিনের শাড়ি মেয়েদের কাছে একটা ইমোশন। সেই দিদিমা-ঠাকুমাদের আমল থেকে এই ট্র্যাডিশন চলছে। তাঁদের শাড়িও এখনও যত্ন করে আলমারিতে তোলা। আর সেই শাড়ি হাতে পাওয়া পরম ভাগ্যের ব্যাপার। আলমারিতে যত শাড়ি থাক না কেন বিয়ের বেনারসির কদরই আলাদা।
আগেকার দিনে সোনার জল ধরানো সুতো দিয়ে, আসব সুতো দিয়ে বোনা হত বেনারসি শাড়ি। আর এই শাড়ি খুব যত্ন নিয়ে আগলেও রাখতেন তাঁরা। এখনকার বেনারসি শাড়িতে আগের সেই কোয়ালিটি পাওয়া যায় না। তবে বানারসি নিয়েও অনেক রকম এক্সপেরিমেন্ট হয়। সোনালি জরি, কপার জরি, কুঁচি-আঁচল আলাদা, বাই কালার অনেক রকম ভাবে তা পাওয়া যায়। দোকানে শাড়ি কিনতে গেলে রুপোলি আর সোনালি জরির বেনারসি দেখানো হয়েই থাকে। তবে সোনালির তুলনায় রুপোলি জরির বেনারসির দাম বেশি। আর দেখতেও তা ভাল লাগে। অনেকে এখন কপার জরির বেনারসিও কেনেন। সোনালি জরি অনেক বেশি চকচক করে। রুপোর জরির মধ্যে আলাদা একটা ঐতিহ্য থাকে। জীবনে বিয়ের বোনারসি একটাই হয়, তাই বাছাই করার সময় সতর্ক থাকুন।