আবার একটা নতুন বছর, আরও একটা নতুন অধ্যায়ের শুরু। মানুষ হিসেবে নিজেকে শুধরে নেওয়ার, নিজের ভাবনা চিন্তায় বদল আনার সুযোগ দেয় এই নতুন বছর। মানুষ মাত্রই ঠিক ভুল থাকবেই। ঠকতে ঠকতে শেখা, ভুল করতে করতে শেখা, কিছু পাওয়া আর না পাওয়ার নামই হল জীবন। প্রাপ্তি যোগ হোক বা নাই হোক নিজের চেষ্টা জারি রাখতে হবে। প্রতি বছর ফ্যাশন নিয়ে অজস্র কথা হয়। ফ্যাশন ট্রেন্ড নিয়ে কথা হয়। কোন রং ফ্যাশনে ইন, কোন স্টাইল চলছে এই নিয়ে অনেক কথা চলে। কেমন কাটের পোশাক কাকে মানাবে এই নিয়ে অসজ্র রিসার্চ হয়। এছাড়াও ফ্যাশন শো, ডিজাইনার পার্টি এসব তো লেগেই থাকে। ফ্যাশন কাকে বলে, ফ্যাশনের সংজ্ঞা- এই নিয়ে খুব স্বচ্ছ ধারণা মানুষের মধ্যে নেই ।
অধিকাংশই বলবে, ফ্যাশন মানে মেদহীন ছিপছিপে গড়নের ত্বন্বী মহিলা। যাঁর চোখ-মুখ সব সময় ঝকঝকে থাকবে, গায়ের রং হবে উজ্জ্বল। একমাত্র এমন চেহারার মেয়ে হলেই তাঁকে সব রকম পোশাকে মানাবে। ভারতীয় মহিলাদের গড়নটাই এরকম যে সবাই সমান লম্বা হবেন এমন নয়। প্রথ্যেকেই যে মেদহীন চেহারার অধিকারী এমনটাও নয়। বরং সুন্দর থাকতে আর সুন্দর দেখাতে প্রতিনিয়ত আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। ডায়েট, জিম, রোজকার এক্সসারসাইজ, অফিস এই সবের মধ্যে একটা আলগা বাঁধন আছে। নিজেকে Perfect প্রমাণ করার মরিয়া লড়াইতে অজান্তেই মেয়েরা নাম লিখিয়ে ফেলেন। আর সেখান থেকেই শুরু হয় ফ্যাশন নিয়ে একাধিক ছুঁতমার্গ।
বেশ কিছুদিন ধরেই চেষ্টা চলছে ফ্যাশন আর এই বডি পজিটিভিটি ( Body positivity) এর মধ্যে একটা যোগসূত্র খোঁজার। এই নিয়ে অনেক জায়গায় আন্দোলনও হয়েছে। মানুষ তাঁদের চিন্তা ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসেছেন। এবার মনে হতে পারে যে কী এই বডি পজিটিভিটি?
প্রত্যেকটি মানুষের পোশাক ভাবনা আলাদা। কারণ প্রতি মানুষের খাদ্যাভ্যাস, রোজকার জীবন, জীবনযাত্রা এবং পেশা এক নয়। নিজের পরিচয় প্রকাশের মাধ্যম হল এই পোশাক। এই বডি পজিটিভিটি নিয়ে প্রথম বড় আকারে আন্দোলন শুরু হয় ১৯৬০ সালে। সেই সময় লিঙ্গ বৈষম্য, রোগা-মোটা এই সবই ছিল প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দুতে। ১৯৯৬ সালে প্রথম বডি পজিটিভিটি শব্দটি মার্কেটে আসে। যেখানে প্রথম জোর দেওয়া হয় মানুষের রোজকার অভ্যাস সম্বন্ধে। ২০১২ সালে এই আন্দোলনে অনেক পরিবর্তন আসে। মানুষকে নিজেকে ভালবাসার কথা শেখানো হয়। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, সুন্দর জীবনযাত্রার মাধ্যমে একটা পরিপূর্ণ জীবন গঠনের নামই হল বডি পজিটিভিটি।