এশিয়ার একটা বড় অংশ জুড়ে মানুষের প্রধান খাদ্য হল ভাত। ভারত তো বটেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেও খুব জনপ্রিয় খাবার হল ভাত। রোজকার খিদে মেটাতে প্রচুর মানুষ রোজ ভাত খান। সারাবছর দেশজুড়ে একমাত্র সস্তায় যে খাদ্য পাওয়া যায় তা হল চাল। চালের মধ্যে রয়েছে ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম, ফাইবার, আয়রন এবং জিঙ্ক সহ ১৫টিরও বেশি ভিটামিন উপাদান। যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ রকম উপকারী। যদিও যাঁদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাঁদের ভাত খেতে মানা করা হয়। এমনকী বলা হয়, যাঁরা নিয়মিত ডায়েট করছেন তাঁরাও যদি ভাতের থেকে দূরে থাকতে পারেন তাহলে খুবই ভাল। তবে চালেরও নানা ধরণ রয়েছে। যে চাল খেলে সুগারের সমস্যা হয় না। এমনকী কোলেস্টেরল, ওবেসিটি, উচ্চ রক্তচাপও থাকে নিয়ন্ত্রণে। নিজের প্রয়োজন অনুসারে চাল বাছাই করে নিতে পারেন আপনি।
সাদা চাল- চালের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ হল এই সাদা চাল। যে কোনও মুদি দোকানে সহজেই পেয়ে যাবেন। অধিকাংশ বাড়িতে, হোটেলে এই চালই ব্যবহার করা হয়। ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার ন্যাশনালের মতে, সাদা চালে আলাদাভাবে যোগ করা হয় আয়রন, থায়ামিন, নিয়াসিন, ফলিক অ্যাসিড। তবে চালের প্রতি কাপে ক্যালোরির পরিমাণ ১৬০।
ব্রাউন রাইস- সবচেয়ে পুরনো শস্য হল ব্রাউন রাইস। এই চাল আগে ঢেকি ছাঁটা চাল হিসেবেই বিক্রি করা হত। এই চালের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। প্রতি কাপ শুকনো চালে যে পরিমাণ ফাইবার থাকে তা সাদা চালের তুলনায় ১.৫ গ্রাম বেশি। ব্রাউন রাইসে যে ফাইবার থাকে তা অদ্রবণীয়। যা হজমের জন্য খুব ভাল। অন্ত্রের জন্যও ভাল।
ব্ল্যাক রাইস- কালো চাল বহু বহু বছর ধরে জনপ্রিয় ছিল। তবে এই কালো চালের বিশেষত্ব হল ভাত রান্নার পর এই চাল দেখতে গাঢ় বেগুনি রঙের হয়ে যায়। এই চালের মধ্যে আছে অ্যান্থোসায়ানিন, যা এক ধরনের ফ্ল্যাভোনয়েড পিগমেন্ট এবং হৃদরোগ, ক্যানসার, নিউরোডিজেনারেটিভ হিসেবে ভাল কাজ করে এই চাল। এই চালে ফাইবার, প্রোটিন বেশি পরিমাণে থাকে। এককাপ শুকনো চালের মধ্যে পাঁচ গ্রাম প্রোটিন আর তিন গ্রাম ফাইবার থাকে।
রেড রাইস- দেখতেই চাল তবে এই চাল কিন্তু বেশ মিষ্টিও। এই চালের মধ্যে মিষ্টি আর নোনতা দুই স্বাদই থাকে। বলা হয় লিউকোমিয়া, সার্ভিক্যাল ও কোলন ক্যানসার রুখতে সাহায্য করে। এই চালের মধ্যে রয়েছে প্রোঅ্যান্থোসায়ানিডিন। যা মূলত ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি রুখে দেয়।
জার্নাল অফ এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রিতে ২০১৬ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, লাল চালের অ্যান্টিডায়াবেটিক প্রভাব রয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, লাল চালের তুষের নির্যাসের সংস্পর্শে আসার সাথে বেসাল গ্লুকোজ (রক্ত শর্করার সঠিক নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ) ২.৩ থেকে ২.৭-গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই লাল চালে টোকোট্রিয়েনল রয়েছে যা মূলত ভিটামিন ই। নিউরোপ্রোটেকশন, অ্যান্টি-ক্যাসার এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।