দেহে প্রথম থেকেই কোলেস্টেরল উপস্থিত থাকে। এই মোম জাতীয় পদার্থ শরীরে তখনই সমস্যা তৈরি করে, যখন এর মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায়। কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে তা শিরায় জমে এবং রক্তপ্রবাহ বাধা তৈরি হয়। তখনই উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। এবার প্রশ্ন হল, কীভাবে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। চর্বিযুক্ত খাবার যত বেশি খাবেন, কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়বে। তেলে ভাজাভুজি খাবার, মাটন, প্রক্রিয়াজাত মাংস খেলেই শরীরে কোলেস্টেরলের সমস্যা দেখা দেবে। এই কারণে চিকিৎসকেরা সর্বপ্রথম ডায়েটের দিকে নজর দিতে বলে।
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে গেলে ডায়েটের উপর জোর দিতে হবেই। কিন্তু তা বলে এমন খাবার খেতে হবে না, যা মধ্যবিত্ত বাড়িতে রান্না করা একটু চাপের। অর্থাৎ দৈনন্দিন জীবনে ভাত, ডাল, তরকারি খেয়েও আপনি কোলেস্টেরলকে বশে রাখতে পারেন। এমনও নয় যে নিরামিষ খাবারই খেতে হবে। মাছ, মুরগির মাংস, ডিম সবই খেতে পারেন কোলেস্টেরলের রোগীরা। বরং, এমন বেশ কিছু খাবার রয়েছে যা রোজ খেলেই কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সেগুলো কী-কী, দেখে নিন।
ওটস ও অন্যান্য দানাশস্য- ওটস, বার্লি, কিনোয়া, ডালিয়ার মতো দানাশস্য ব্রেকফাস্টে খেতে পারেন। দুধ কিংবা টক দই দিয়ে ওটস খেয়ে নিন। এই ধরনের খাবারে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে। এই পুষ্টি কোলেস্টেরলের রোগীদের জন্য অপরিহার্য। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, হজম ক্ষমতা উন্নত করে।
ডাল- মুগ, মুসুর, কড়াই যে কোনও ডাল খেতে পারেন। দুপুরে ভাতের সঙ্গে এক বাটি ডাল রাখলে অনেক উপকার পাবেন। ডাল মূলত প্রোটিনে সমৃদ্ধ উৎস। তাছাড়া ডালের মধ্যেও ফাইবার থাকে। সুতরাং, ডাল খেলে লিপিড প্রোফাইল বেড়ে যাওয়ার কোনও ভয় নেই।
মাছ- কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে হলে ডায়েটে মাছ রাখুন। মাছের মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড নামের এক অপরিহার্য পুষ্টি পাওয়া যায়। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। সপ্তাহে ৩ বার মাছ খেলেই আপনি হার্টকে ভাল রাখতে পারবেন।
শাকসবজি- তাজা শাকসবজির মতো ভাল জিনিস খুব কম রয়েছে। ঢ্যাঁড়শ, বিনস, পালংশাক, পুঁই শাক, ব্রকোলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বিটরুট, গাজর, কুমড়োর মতো সবজি আপনি রোজ খেতে পারেন। অর্থাৎ রুটি বা ভাতের সঙ্গে এক বাটি সবজির তরকারি রাখলে আপনাকে স্বাস্থ্য নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করতে হবে না।
তাজা ফল- ফলের মধ্যে দ্রবণীয় ফাইবার, ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকারী। আপেল, পেয়ারা, মোসাম্বি লেবু, আমলকি, পেঁপে, আঙুরের মতো তাজা ফল খান। এতে শুধু যে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে, তা নয়। পাশাপাশি আপনি একাধিক রোগের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকবেন।