আজকাল সবার জীবনেই বেড়েছে কর্মব্যস্ততা। কাজের চাপও আগের তুলনায় দ্বিগুণ। এই ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালেন্স করতে গিয়ে ঠিক সময়ে খাওয়া আর ঘুম কোনওটাই হয় না। যে কারণে অনিদ্রা, ওবেসিটি, ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপের সমস্যা জাঁকিয়ে বসছে শরীরে। শরীর আর কাজের মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। শরীর-মন ভাল না থাকলে মন দিয়ে কাজ করা যায় না। মুখে যতই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কথা বলা হোক না কেন খিদে পেলে কিছুই আর মাথায় থাকে না। তখন হাতের সামনে যা থাকে তাই খাওয়া হয়ে যায়। শরীর আর মন ভাল রাখার জন্য সঠিক খাদ্য নির্বাচন করা জরুরি। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ খাবারের মধ্যে যেন তার পুষ্টিগুণ বজায় থাকে। মুম্বইয়ের মাসিনা হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ডায়াটেশিয়ান মিসেস আনাম গোলন্দাজ দিলেন তাই বিশেষ টিপস। ব্যাগে এবম রান্নাঘরে এই সব খাবার রাখতে পারলে শরীর যেন ভাল থাকবে তেমনই একগাদা রোগ-জ্বালার হাত থেকেও মুক্তি পাবেন।
শাকসবজি আর ফলের মধ্যে যে পুষ্টির পরিমাণ সর্বাধিক একথা সকলেই জানেন। আর তাই রোজ এক কাপ ফল আর এক কাপ মাপের সবজি খেতেই হবে। ফল আর সবজি নানা ভাবে দিনের মধ্যে অন্তত পাঁচবার খান। স্যালাড এবং রান্না করা- এই দুই মেনুই রাখুন রোজকার খাবারে। ফলের মধ্যে থাকে ফ্ল্যাভিনয়েড। যা আমাদের ত্বক আর চুলের জন্য খুবই ভাল।
রোজকার খাবারের মধ্যে অবশ্যই রাখুন চাল আর ডাল। ভাত আর ডাল পরিমাণ মতো খেলে অনেক রোগ সমস্যা দূরে থাকে। ডালের সঙ্গে আলু বাদে আর সবরকম সবজিই খান। সঙ্গে রাগি, জোয়ার, বাজরা এসবও কিন্তু অবশ্যই রাখবেন। রাগি, বাজরা, জোয়ার, গমে গ্লুটেন থাকে না। পরিবর্তে থাকে প্রোটিন, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
রোজ নিয়ম করে দুবাটি ডাল খেতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ডালের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি। সেই সঙ্গে ডাল সহজলভ্য। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং প্রয়োজনীয় খনিজ, ভিটামিনের চাহিদা মেটাতে ডাল আবশ্যক। পেশির গঠনেও ভূমিকা রয়েছে ডালের।
প্রক্রিয়াজাত খাবার, ময়দা, চিনি এসব একেবারেই বাদ দিতে হবে তালিকা থেকে। কারণ এই সব খাবার হজম করতেও সাহায্য হয়। ডায়াবেটিস, হৃদরোগের মত সমস্যাও কিন্তু জাঁকিয়ে বসে এই সব খাবার খেলে।
রোজ নিয়ম করে ৫ টি ভিজিয়ে রাখা আমন্ড খান। সঙ্গে ২ টি আখরোটও অবশ্যই খান। এই সব বাদাম খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে না। বরং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বজায় থাকে। স্মৃতিশক্তিও ঠিক রাখতে সাহায্য করে এই বাদাম। এছাড়াও বাদামের মধ্যে থাকে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড। যা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেই সঙ্গে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমায়।
ডায়াটেশিয়ান মিসেস আনাম গোলন্দাজের পরামর্শ, কুমড়ো, সূর্যমুখীর বীজ, বিভিন্ন বাদাম, ফল, লো সুগার প্রোটিন বার, গ্রানোলা, অঙ্কুরিত মুগ, রোস্টেড ছোলা এসব রাখুন হাতের সামনে। কাজের ফাঁকে মুখে চালান করুন এই সব খাবার। এতে বাড়বে না ওজন। বজায় থাকবে স্বাস্থ্যও। এছাড়াও নিয়ম করে জল খাবেন। চেষ্টা করবেন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়ার।