মানুষের শরীরের বেশিরভাগ ইংশ জুড়েই রয়েছে জল। অন্তত ৬০-৭০ শতাংশ। আর তাই পরিমিত জল খেতে না পারলে বিপদ। শরীরে ফ্লুইডের পরিমাণ কমতে থাকলে সেখান থেকে একাধিক সমস্যা আসতে পারে। যে কারণে দিনের মধ্যে অন্তত ৮ গ্লাস জল খাওয়ার নিদান দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ছোট থেকেই বাড়িতে মা-ঠাকুমারা বলে আসছেন জল খেলেই হবে সব সমস্যার সমাধান। আর তাই জ্বর হলেও যেমন বেশি করে জল খেতে বলা হয় তেমনই ডায়ারিয়া, বদহজমের সমস্যাতেও ধন্বন্তরি হল এই জল। শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতেও ভূমিকা রয়েছে জলের। তবে জল খাওয়ারও কিন্তু বিশেষ কিছু নিয়ম রয়েছে। যত্রতত্র জল যেমন খাবেন না তেমনই দিনের পর দিন একই প্লাস্টিক বোতল থেকে জল খাওয়াটাও ঠিক নয়। অনেকেই বাড়িতে-অফিসে-গাড়িতে একই জলের বোতলে জল ভরে রেখে দেন। যত ভাল মানের প্লাস্টিক হোক না কেন দিনের পর দিন একই বোতল থেকে জল খাওয়াটাও কিন্তু ঠিক নয়। এতে ক্ষতির সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকখানি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্লাস্টিক বোতল তৈরিতে ব্যবহৃত হয় বিসফেনল A যা আমাদের শরীরে জন্য বিষাক্ত। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এটা প্রমাণিত হয়েছে যে তামার মধ্যে ব্যাকটিরিয়া ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে। জলের মধ্যেও ভেসে বেড়ায় বিভিন্ন জীবাণু। যা আমাদের খালি চোখে ধরা পড়ে না। আর তাই আর্য়ুবেদ বলছে, যদি তামার পাত্রে রেখে জল খাওয়াব যায় তাহলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। কিংবা চলতে পারে কাঁচের পাত্রও।
আর্য়ুবেদ মতে কী ভাবে জল খাবেন
শুধু গরমের দিনেই নয়, সারা বছরই তামার পাত্রে রাখা জল খান। তামার পাত্রে রাখা জল পেটের ও হজমের সমস্যার জন্য বিশেষ ভাবে উপকারী। সবথেকে ভাল যদি তামার জগে সারারাত জল রেখে দেন। পরদিন সকালে খালিপেটে ওই জল খান। এছাড়াও এখনও ভারতের অনেক জায়গাতেই মাটির পাত্রে রেখে জল খাবার প্রচলন রয়েছে। এই ভাবে খেতে পারলেও কিন্তু খুবই ভাল। বিশেষত বাচ্চাদের জন্য। তাই অনেকেই মাটির হাঁড়িতে ভাত বানিয়ে বাচ্চাদের খাওয়ান। এতে বাড়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
এছাড়াও মাটির পাত্রে জল রেখে খাওয়ার আরও কিছু সুবিধে রয়েছে। গরমের সময় আমাদের শরীরে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের অভাবে সানস্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। কিন্তু মাটির পাত্র জলে ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে এই জল খেলে সানস্ট্রোক হবার সম্ভাবনা কম থাকে। হজমের সমস্যা, পেটের গোলমাল সেরে যায়।
তামার পাত্রে রেখে জল খাওয়াও ভাল। শরীরের জমে থাকা মেদ গলাতে সাহায্য করে। তবে তামার পাত্রে গরম জল রাখবেন না। গরম চা খাবেন না। এছাড়াও ডিটক্স ওয়াটার, ফলের রস বা দইয়ের ঘোল এসবও খাবেন না। এতে কিন্তু শরীরে বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।