আবহবিদদের মতে হিমেল হাওয়া গায়ে লাগলেও জাঁকিয়ে শীত এখনই নয়। তবে ঋতু পরিবর্তনের ফলে প্রত্যেক ঘরেই এখন ভাইরাল ও শ্বাসযন্ত্রের সমক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শীত পড়তে না পড়তেই দূষণের মাত্রাও বেড়ে চলেছে। দিল্লি ও তার পার্শ্বর্তী এলাকায় এখনই এক হাত দূরের জিনিস আবছা বোঝা যাচ্ছে। কালীপুজোর পর থেকে কলকাতার আবহাওয়া পরিস্থিতিও সুবিধের নয়। এর সঙ্গেই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে ডেঙ্গি ও ওমিক্রনেকর সাবভেরিয়েন্টের দৌরাত্ম্য। তাই জ্বর, গলা ব্যথা, কাশি ও সর্দির মত লক্ষণগুলি এখন ঘরে ঘরে। এই উপসর্গ দেখার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বা পারিবারিক চিকিত্সকের সঙ্গে পরামর্শ অবশ্যই নেবেন। সঙ্গে বেশ কিছু আয়ুর্বেদিক ঘরোয়া টোটকাও চেষ্টা করুন। তাতে সংক্রমণের জেরে অসুস্থতা অনেকটাই উপশম হবে, পাবেন আরামও। ফ্লুয়ের লক্ষণগুলিকে হ্রাস করার জন্য ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক টোটকা অনেক কার্যকরী।
যেমন শুকনো আদার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরির বৈশিষ্ট্য, যা সর্দি ও কাশির চিকিত্সার জন্য মোক্ষম দাওয়াই। হলুদ. আদা, কালো গোলমরিচ, তুলসী, পুদিনা পাতা, মেথি বীজ, রান্নাঘরের নানান মশলা ও ভেষজ গলার ব্যথা উপশম করতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও অন্যান্য উপসর্গগুলি থেকে মুক্তে দিতে সত্যিই উপকারী। সম্প্রতি আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ড দীক্ষা ভাবসার সোশ্যাল মিডিয়ায় সকলের জন্য প্রযোজ্য কাশি-সর্দি ও গলা ব্যথা উপশমের জন্য ৪টি রেসিপির কথা পোস্ট করেছেন। সেগুলি এখানে দেওয়া রইল…
১. সারা দিন শুকনো আদার সেদ্ধ করে বা শুকনো আদা গুঁড়ো দিয়ে ফুটিয়ে জল পান করুন। এর জেরে পরিপাকতন্ত্র উন্নত হয়। হজমশক্তিও স্বাভাবকি থাকে। এছাড়া গলা ব্যথা, গলায় খুসখুস করলে এই জল খেলে অনেকটা উপশম পাবেন। পাশাপাশি কাশি হলেও সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।
রেসিপি
১ লিটার জলের মধ্যে আধ চা চামচ শুকনো আদার গুঁড়ো বা এককুচি তাজা আদা যোগ করে মাঝারি আঁচে ১০ মিনিট সেদ্ধ করুন। ফুটে উঠলে ছেঁকে নিন। এরপর ঘরের তাপমাত্রায় ঠান্ডা করে স্টিলের বোতলে সংরক্ষণ করে রাখুন।
২. ভেষজ মিশ্রণ
উপকরণ
– আধ চা চামচ হলু, আধ চা চামচ শুকনো আদার গুঁড়ো, ১টি কালো গোলমরিচ বা ১/৪ চা চামচ গোল মরিচের গুঁড়ো, ১ চা চামচ খাঁটি মধু নিন।
প্রত্যেকটি উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে খাবার খাওয়ার এক ঘণ্টা আগে বা পরে দিনে ২-৩ বার খান।
৩. দিনে দুবার এই আয়ুর্বেদিক মিশ্রণের সঙ্গে বাস্পের মত ভাপ নিতে পারেন। তার জন্য কী কী দরকার, তা দেখুন।
উপকরণ
– ২ গ্লাস জল, এক মুঠো তুলসী পাতা, ৫-৭ টি পুদিনা পাতা, ১ তা তামচ জোয়ান বীজ, আধ চা চামচ মেথি, আধ চা চামচ হলুদ। প্রত্যেকটি উপকরণ একসঙ্গে পাত্রের মধ্যে নিয়ে মাঝারি আঁচে ৭-১০ মিনিট সেদ্ধ করুন। এরপর মাথার উপর দিয়ে তোয়ালে চাপা দিয়ে এর ভাপ নিন। আরাপ তো পাবেনই, সঙ্গে গলা ব্যথা, সর্দি, কাশিও উপশম হবে।
৪. হলুদ জল দিয়ে গার্গল করুন
– একগ্লাস জল মাঝারি আঁচে গরম করতে দিন। তাতে ১ চা চামচ হলুদ মিশিয়ে ৩-৫ মিনিট ফুটতে দিন। দিনে ২-৩বার এই জল দিয়ে গার্গল করলে আরাম পাবেন। সংক্রমণের অস্বস্তিও দূর হবে দ্রুত। কিশোর থেকে প্রাপ্তবয়স্ত, সকলেই এই টোটকা অনুসরণ করতে পারেন। নিজের জন্যও এটি ট্রাই করতে পারেন।