শীতকালের সবজি আর গরমকালের সবজির মধ্যে খুব সূক্ষ্ম কিছু ফারাক রয়েছে। শীতের সবজি যেমন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, রঙিন হয় তেমনই গরমকালের সবজি দেখতে সবুজ এবং এর মধ্যে জলের পরিমাণও থাকে অনেকটাই বেশি। গরম মানেই বাজার জুড়ে লাউ, পটল, ঝিঙে, কুমড়ো, ঢ্যাঁড়শের মেলা। আর এই সবকটা সবজি কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। গরমে শরীর বেশি আর্দ্র হয়ে যায়। আর তাই শরীর ঠিক রাখতে বেশি পরিমাণে জল খাবার কথা বলা হয়। কিন্তু লাউয়ের মধ্যে যেমন প্রচুর পরিমাণে জল থাকে তেমনই থাকে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদানও ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম। ফলে শরীর সুস্থ থাকে। সেই সঙ্গে থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিনও। লাউ চিংড়ি , লাউয়ের পায়েস, লাউ দিয়ে ডাল এসব খেতে তো বেশ লাগে, এছাড়াও গরমে লাউ খাওয়ার দারুণ কিছু উপকারিতা রয়েছে। জেনে নিন-
লাউয়ের মধ্যে কোলন নামের এক ধরনের নিউরো ট্রান্সমিটার রয়েছে। যা শরীরে স্ট্রেস লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে। যে কারণে বিভিন্ন মানসিক সমস্যাও দূরে থাকে। যাঁদের মধ্যে রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাঁরাও রোজ খান লাউ। লাউয়ের মধ্যে যে পটাশিয়াম থাকে তাই আমাদের রক্তচাপ মাত্রার মধ্যে রাখে।
এছাড়াও লাউ এর রস ওজন কমাতেও কিন্তু সাহায্য করে। লাউয়ের মধ্যে থাকে ফাইবার। যা আমাদের অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে। যে কারণে অনেকক্ষণ খিদে পায় না। পরিমিত খাবার খেলেই কমবে ওজন।
বহুদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে রোজ পাতে রাখুন লাউ। লাউ দিয়ে ডাল খান। এতে শরীর ঠান্ডা থাকবে। হজম হবে। আর গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও আসবে না।
রাতে ভাল ঘুম হচ্ছে না? অতিরিক্ত স্ট্রেসে ভুগছেন? তাহলে রোজ খান লাউয়ের তরকারি। লাউয়ের রস নিয়মিত খেতে পারলে মাথাব্যথার সমস্যা কমে। সেই সঙ্গে লাউ আমাদের ভাল ঘুমোতেও সাহায্য করে।
ত্বকের জন্যও উপকারী এই লাউ। ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করে। ৭ দিন টানা লাউ খেতে পারলেই মুখের জেল্লা ফেরে। এমনকী ব্রণ বা দাগছোপের সমস্যাও কিন্তু থাকে না।
তবে লাউ এর রস তেতো হলে তা কিন্তু খাবেন না। সেখান থেকে বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকে। ডায়রিয়া, এমনকি বমি বমি ভাব বাড়তে পারে। সেকারণে খাওয়ার আগে লাউয়ের রস চেখে দেখা জরুরি। আর খাওয়ার আগে অবশ্যই একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।