যে কোনও অনুষ্ঠান মানেই আজকাল বাড়িতে বিরিয়ানির চল। একপাকে রান্না করা এই খাবারের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে বই, কমেনি। পাঁচপদ রান্না করে সাজিয়ে খেতে অনেকেই এখন আর পছন্দ করেন না। সেদিক থেকে বিরিয়ানি হল চটজলদি খাবার। সহজেই বানিয়ে ফেলা যায়। ঝক্কিও কম। আর বিরিয়ানির সঙ্গে আলাদা করে কোনও খাবারের প্রয়োজন পড়ে না। ভারতবর্ষের প্রতি প্রদেশেই নির্দিষ্ট বিরিয়ানির রেসিপি রয়েছে। বিরিয়ানির প্রেম আমাদের দেশের আনাচ-কানাচে। স্বাদ আর সুগন্ধের জন্যই কিন্তু বিরিয়ানি এত বিখ্যাত। সৈয়দ মুজতবা আলির ভাষায় বলতে হয়, ‘একি ভানুমতি! একি ইন্দ্রজাল।’
বিরিয়ানি শব্দের উৎপত্তি ফরাসি ‘বিরিয়ান’ শব্দ থেকে। ফরাসিতে ‘বিরিয়ান’ শব্দের অর্থ ‘রান্নার আগে চাল ভেজে নেওয়া’। বাস্তবেও বিরিয়ানি রান্নার আগে সুগন্ধি চাল ঘি দিয়ে ভেজে নেওয়া হয়। ইতিহাস বলে ১৯৩৮ সালে তৈমুর লং-এর হাত ধরে এ দেশে বিরিয়ানির প্রবেশ। মাটির পাত্রে একত্রে চাল, মাংস, মশলা মিশিয়ে রান্না করা হত বলেই এরকম নামকরণ করা হয়েছে। তামিল সাহিত্যে ‘ওন সরু’- নামে একরকম খাবারের উল্লেখ রয়েছে। যা আদতে বিরিয়ানির মতই খেতে হয়। বিরিয়ানিতেও এখন নানা প্রকার ভেদ এসেছে। মূলত মাংস দিয়ে বিরিয়ানি বানানো হলেও এখন মাছ দিয়েও বিরিয়ানি হয়। ইলিশের বিরিয়ানি, পনির, এঁচোড়ের বিরিয়ানি এখন বেশ জনপ্রিয়। বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে গলদা চিংড়ির বিরিয়ানি। মালািকারি তো অনেক খেলেন। এবার বানিয়ে নিন গলদা চিংড়ির বিরিয়ানি।
যা যা লাগবে-
গলদা চিংড়ি ৬টা
ফেটানো টক দই- ২০০ গ্রাম
কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো- ১ চামচ
হলুদ
বেরেস্তা- হাফ কাপ
শাহি গরমমশলা- ২ চামচ
কাঁচালঙ্কা- ৩ টে
রসুনবাটা- ১ চামচ
আদাবাটা- ১ চামচ
গোটা গরম মশলা
গোটা গোলমরিচ- ৫ টা
জয়িত্রীগুঁড়ো- হাফ চামচ
বাসমতী চাল- ৫০০ গ্রাম
ঘি
মিঠা আতর
কেওড়া জল
কেশর (দুধে ভেজানো)
যে ভাবে বানাবেন
একটা বড় পাত্রে ম্যারিনেশনের সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। এর মধ্যে চিংড়ি দিয়ে মেখে আধঘণ্টা ম্যারিনেট করে ফ্রিজে রেখে দিন। কড়াইয়ে ৩ টেবলচামচ তেল গরম করে গ্রেভির জন্য রাখা পেঁয়জকুচি, তেজপাতা দিয়ে ভেজে ম্যারিনেট করে রাখা চিংড়ি দিয়ে দিতে হবে। অন্য হাঁড়িতে জল দিয়ে তার মধ্যে গোটা গরম মশলা, সামান্য নুন,পাতি লেবুর রস, তেজপাতা দিয়ে চাল ফুটিয়ে নিন ৭০ %। এবার চিংড়ির সঙ্গে চাল মিশিয়ে দিন। কিছুটা ভাত ছড়িয়ে গরম মশলা, বেরেস্তা দিয়ে লেয়ারিং করে রাখুন। উপর থেকে ঘি, কেশর আর মিঠা আতর ছড়িয়ে হাঁড়ির মুখ চাপা দিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট। পুরো রান্না একদম কম আঁচে হবে। গ্যাস বন্ধ করে আরও ১০ মিনিট রাখলেই তৈরি গলদা চিংড়ির বিরিয়ানি।