ঘরে ঘরে এখন জাঁকিয়ে বসেছে সুগারের সমস্যা। বিশ্বজুড়েই নিঃশব্দে থাবা বসাচ্ছে ডায়াবেটিস। যদিও এই ডায়াবেটিসের প্রকৃত কারণ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। নিয়ম মেনে ওষুধ খেয়ে সুগার বশে রাখা যায় মাত্র। সারা জীবনের মত কমিয়ে ফেলা বা ডায়াবেটিস মুক্ত হওয়া যায় না। অগ্ন্যাশয় থেকে তৈরি হয় ইনসুলিন হরমোন। যখন সেই হরমোন কম পরিমাণে উৎপন্ন হয় বা একেবারেই তৈরি হয় না তখনই রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। অনেকের জন্মগত ভাবেই এই সমস্যা থাকে। তারা টাইপ ১ ডায়াবেটিসের শিকার। রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়লে সেখান থেকে একাধিক সমস্যা দেখা দেয়। হার্ট, চোখ, কিডনি এবং স্নায়ুর সমস্যা হয় সবচাইতে বেশি। মাত্রাতিরিক্ত সুগারে কিডনি বিকল পর্যন্ত করে দিতে পারে। আর তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল খাবার।
আজকাল টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা সবচাইতে বেশি। এক জায়গায় দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা, কোনও রকম শরীরচর্চা না করা, মাত্রাতিরিক্ত কফি খাওয়া, হাই ক্যালোরির খাবার বেশি খাওয়া, জাঙ্ক ফুড অত্যধিক পরিমাণে খেলে সেখান থেকেই সুগার বেড়ে যাওয়ার মত সমস্যা হয়। আর তাই প্রথমেই রাশ টানতে হবে রোজকারের খাবারে। সঙ্গে মেনে চলতে হবে কঠোর জীবনযাত্রাও। রোজ নিয়ম করে শরীরচর্চা, ঘড়ি ধরে খাওয়া-দাওয়া, অতিরিক্ত চিনি না খাওয়া, ঠাণ্ডা পানীয় এড়িয়ে চলা এসব করতেই হবে। পাশাপাশি আরও যা কিছু খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। বিশেষত ডিনারে এই পরামর্শ মানতে পারলে ফল পাবেনই।
রুটি– রুটির মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। এছাড়াও থাকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি, খনিজ। আর তাই রাতে রুটি খাওয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। মাল্টিগ্রেন আটা ব্যবহার করতে পারলে সবচাইতে ভাল। নইলে আটার সঙ্গে ওটসের গুঁড়ো মিশিয়ে নিয়ে রুটি বানান। তবে ২ টো রুটির বেশি কিন্তু নয়। রুমালি রুটি, নান, তন্দুরি এসব এড়িয়ে চলুন।
মাছ বা মাংস- মাছ খেলে ছোট এক পিস বা মাংস কেলে ২ পিস খেতে পারেন। গ্রিলড ফিশ হলে সবচাইতে ভাল। মাছ ভাজা খাবেন না। চাইলে ভেজে হালকা ঝোল বানিয়ে খেতে পারেন। চিকেনের সবজি দিয়ে স্ট্যু বানিয়ে নিন। বা খুব হালকা রান্না করুন। মাংস যাতে সুসিদ্ধ হয় সেদিকেও খেয়াল রাখুন।
একবাটি সবজি খান- হাজর, বিনস, ব্রকোলি, ক্যাপসিকাম এসব সিদ্ধ করে খেতে পারেন। নইলে সুগারের রোগীরা একবাটি করে সামান্য তেল দেোয়া সবজির তরকারি খান। পুঁই শাক এড়িয়ে চলতে পারলে ভাল। গাজর, কুমড়ো, পটল, ঝিঙে এসব খেতেই পারেন।
স্যালাড- রাতে হোক বা দুপুরে একবাটি স্যালাড কিন্তু অবশ্যই খাবেন। শসা, পেঁয়াজ, টমেটো, লেবু দিয়ে বানিয়ে নিলেই চলবে। একবাটি ভর্তি স্যালাড যেমন খেতে ভাল লাগে তেমনই অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেটও ভরা থাকে। এই ডায়েট মানলে ওজন কমে আর ডায়াবেটিসও থাকে নিয়ন্ত্রণে।