বৈশাখ নয়, চৈত্রের দাবদাহতেই পুড়ছে বাংলা। হাওয়া অফিস বলছে পারদ আরও চড়বে, বাড়বে তাপমাত্রা। পয়লা বৈশাখের দিনে তাপপ্রবাহের সতর্কতাও রয়েছে। তবুও বাঙালির নতুন বছর বলে কথা। উদযাপন তো হতেই হবে। চসছে সেলের শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। গ্রামে গ্রামে বসেছে চড়কের মেলা। বাঙালি রেস্তোরাঁও সেজেগুজে উঠেছে তাদের পয়লা বৈশাখের স্পেশ্যাল মেনু নিয়ে। ডায়েটের চক্করে বছরের ৩৬৫ দিন অনেকেরই খাঁটি বাঙালি খাবার খাওয়া হয় না। কিন্তু এই দিনটা কোনও ভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। প্রসাদী সন্দেশ দিয়ে দিনের শুরু। এরপর একে একে পাতে পড়ে লুচি, সাদা আলুর তরকারি, পায়েস, রসগোল্লা। দুপুরে পাত সেজে থাকে ভাত, পোলাও, শুক্তো, ভাজা, মটন, ইলিশ, চিংড়ি, আমের চাটনি-সহ বাহারি সব পদে। সন্ধ্যেতে শরবত, মিষ্টি, শিঙাড়া, চপ সহযোগে আড্ডা আবার রাতে লুচি, কষা মাংস… নতুন এই বছরে বাঙালির খাওয়াদাওয়াতে কোনও রকম খামতি থাকে না।
বছরভর ব্রেকফাস্টে অধুনা বাঙালির ভরসা সিরিয়ালেই। ওটস, মুজলি, স্প্রেড, ক্রোসা, ফল, চিয়া সিডস, প্যানকেক এসব বিদেশী খাবারেই বাঙালির পেট ভরে। তবে আমাদের রান্নাঘরে আছে আরও সুস্বাদু কিছু খাবার। এই সব খাবার আমাদের শরীরের জন্য যেমন ভাল তেমনই স্বাস্থ্যকরও। নিয়ম করে খেলে ফ্যাটও গলে. আর গরমের দিনে শরীর ঠান্ডা থাকে। দই, মুড়কি, খই, বাতাসা, চিঁড়ে আর ফল একসঙ্গে মেিশিয়ে ফলার বানানো হয়। লক্ষ্মী পুজোর প্রসাদ হিসেবেও থাকে এই সব উপকরণ। বাংলা রূপকথার গল্পেও উল্লেখ রয়েছে এই ফলারের। বৈশীখের প্রথম দিনে এবার তাই অঙ্গীকার হোক দেশি খাবারে প্রাতরাশের।
দুধ খই কিংবা দই চিঁড়ে খান। সঙ্গে মিশিয়ে নিন পাটালি গুড়, মুড়কি, বাতাসা। এতে খেতে খুবই ভাল লাগে। গরমের দিনে এই সব উপকরণ পেটের জন্য ভাল। টকদই থাকে বলে হজমে কোনও রকম সমস্যা হয় না। আর সবার জন্যই কিন্তু ভাল এই খাবার। বাজারে পয়সা দিয়ে চাউমিন, কেক, পাঁউরুটি এসব কিনতে পাবেন কিন্তু মুড়কি, মোয়া, বাতাসা কিনে খাওয়া সম্ভব হয় না।
লুচি তরকারি তো প্রায়শই খান এবার না হয় পয়লা বৈশাখ শুরু হোক একটু অন্যভাবে। সকাল সকাল প্লেটে সাজিয়ে নিন বাতাসা, চিঁড়ে, মোয়া, মুড়কি পাটিসাপটা। এই সব খাবারে পেট ভরবে আর মনও ভাল থাকবে। রোজ খেতে পারলে তো খুবই ভাল।