বর্ষা মানেই শরীরে দেখা দেয় একাধিক সমস্যা। বিশেষত পেটের অসুখ ভীষণ বাড়ে এই সময়ে। আর তাই সুস্থ থাকতে বর্ষায় বাইরের খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলতে বলা হয়। পাশাপাশি তেল-মশলাদার খাবারও কম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছা়ড়াও বর্ষাকালে বাড়ে যে কোনও রোগ-সমস্যা। বাড়ে সংক্রমণ। ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, পেটখারাপ এসব তো লেগেই থাকে। সেই সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক জন্মানোর অনুকূল পরিবেশ থাকে এই সময়েই আর তাই ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসও বেশি বাড়ে এই সময়েই। বর্ষায় বৃষ্টির কারণে নোংরা জলের সমস্যা বাড়ে, ফলে সামান্য নোংরা-ময়লাতেই পেট খারাপ বেশি বাড়ে।
তবে ঘন ঘন পেট খারাপ, গ্যাস, অম্বল, বদহজমের সমস্যা হতে থাকলেও মুশকিল। কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি, ক্র্যাম্প, ডায়েরিয়ার সমস্যা হলে তা ফেলে রাখা ঠিক নয়। অতিরিক্ত পরিমাণ অ্যালকোহল বা কফি খেলেও কিন্তু সেখান থেকে হতে পারে সমস্যা। এছাড়াও মানসিক চাপ কিন্তু পেট খারাপের অন্যতম কারণ। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা, বদহজম, অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যায় যেমন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন তেমনই বদল আনতে হবে রোজকারের খাবারেও। পেট খারাপ থাকলে খেতে অসুবিধে হয়। শরীর থেকে প্রয়োজনের অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যায়। এদিকে শরীর ঠিক রাখতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবারও খেতে হবে। সব সময় ওষুধের ভরসায় থাকলে চলবে না। তাই সুস্থ থাকতে এবং পেট ভাল রাখতে যা কিছু রাখবেন রোজের খাবারের তালিকায়-
কাঁচকলা- সেই প্রাচীন কাল থেকেই পেটের সনস্যায় বাড়িতে কাঁচকলা খাওয়ার চল রয়েছে। কাঁচকলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পেকচিন। আছে দ্রবণীয় ফাইবার। যা ডায়ারিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে পেটের গোলমাল হলেও তা সারিয়ে ফেলে দ্রুত। শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে কাঁচকলা। ডায়ারিয়া হলে পেটখারাপের সঙ্গে বমিও থাকে। কিছুই খেতে ইচ্ছে করে না। এক্ষেত্রে কাঁচকলার সঙ্গে সামান্য মধু আর আদা কুচি মেখে খেতে পারেন।
হলুদ- যে কোনও সমস্যাতেই দারুণ কার্যকরী হল কাঁচা হলুদ। হলুদের মধ্যে রয়েছে কারকিউমিন। যা সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে। পেট খারাপের অস্বস্তি দূর করে। তাই কাঁচা হলুদ দিয়ে চা বানিয়ে খান। কিংবা হলুদ, গুড় আর আদাও খেতে পারেন।
জিরে জল- হজমের অর্বথ্য ওষুধ হল দিরে। রোজ সকালে জিরে ভেজানো জল খেলেও একাধিক উপকারিতা পাওয়া যায়। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, জিরের মধ্যে রয়েছে গ্যাস্ট্রোপ্রোটেক্টিভ ক্ষমতা যা পেচে ব্যথা, পেট ফেঁপে যাওয়া, পেট জ্বালা করা, বমি ভাব ইত্যাদি নানা উপসর্গ দূর করতে সাহায্য করে। রোজ খেলে ফ্যাটও গলে।
টকদই- পেটের যে কোনও সমস্যার জন্য খুব ভাল হল বাড়িতে পাতা টকদই। টকদইয়ের মধ্যে থাকে ভাল কিছু ব্যাকটেরিয়া। যা অন্ত্রের উন্নতিতে সাহায্য করে। ভাল ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে। এছাড়াও টকইয়ের মধ্যে থাকে ক্যালশিয়াম। থাকে প্রোটিন। যে কারণে শরীর ভাল থাকে। অন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষাতে এই টকদইয়ের অনেক ভূমিকা রয়েছে।