বিশ্বজুড়েই নিঃশব্দ ঘাতকের মতো বাড়ছে উচ্চরক্তচাপের (Hypertension) সমস্যা। প্রত্যের জীবনেই এখন নানারকম চাপ। তা যেমন মানসিক চাপ রয়েছে তেমনই কিন্তু শারীরিক চাপও কোনও অংশে কম নয়। ফলে বাড়ছে রক্তচাপ এবং তা নিজের অজান্তেই। যিনি এই উচ্চরক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন তিনি কিন্তু নিজেও জানেন না যে তাঁর শরীরে এই সমস্যা রয়েছে। আর এর জন্য সম্পূর্ণ ভাবে দায়ী আমাদের জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস। মানসিক চাপে যখন শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, হৃৎস্পন্দন দ্রুত থাকে তখনই কিন্তু উচ্চরক্তচাপের সমস্যা দেখা দেয়।
অজান্তেই যদি এই হাই ব্লাডপ্রেসারের সমস্যা দীর্ঘায়িত হয় সেখান থেকেই কিন্তু আসে হার্টের সমস্যা। ওজন বাড়লেও হতে পারে উচ্চরক্তচাপের (High blood pressure)-এর মত সমস্যা। আর এই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রথমেই কিন্তু খাবার থেকে ছেঁটে ফেলতে হবে স্যাচুরেটেড ফ্যাট। প্রোটিন বেশি করে খেতে হবে। কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণও কিন্তু কমিয়ে আনতে হবে।
আমেরিকায় ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথ সম্প্রতি একটি গবেষণা পত্র প্রকাশ করেছে। যে গবেষণা অনুসারে ডায়াবিটিস থেকে রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সবচেয়ে কার্যকরী হল ড্যাশ ডায়েট ( Dash Diet)। এই ডায়েটে স্যাচুরেটেড ফ্যাট একেবারেই বাদ দিয়ে ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হয়। এতে যেমন রক্তচাপ থাকে নিয়ন্ত্রণে তেমনই কিন্তু ওজনও কমে। এই ড্যাশ ডায়েট যদি নিয়ম করে মেনে চলতে পারেন, তাহলে কিন্তু ভাল ফল পাবেন।
ড্যাশ ডায়েট
DASH ডায়েট হল এমন ডায়েট যেখানে অতিরিক্ত প্রোটিন, তেল, ফ্যাট চিনি এসব বাদ দিয়ে ফল, শাকসবজি, উদ্ভিজ তেল এসব প্রতিদিন কতটা পরিমাণে খাবেন তার একটা তালিকা তৈরি করে দেওয়া। আর এই তালিকা একমাত্র বিশেষজ্ঞরাই করতে পারেন। কারণ তালিকাটি পুরোপুরি নির্ভর করছে আপনার শারীরিক অবস্থার উপরেই। ১৯৯৭ সালে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে প্রকাশিত DASH ট্রায়াল অনুসারে, এটি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে এমন প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সোরা উপায়। ওজন কমানোর জন্য এখন মানুষ অনেক রকম ডায়েট করেন। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হল কিটো ডায়েট। তবে কিটো ডায়েট হোক বা ভেগান ডায়েট তার কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। কারণ এই সব ডায়েট সরাসরি প্রভাব ফেলে আমাদের কিডনিতে। সেদিক থেকে ভালো এই ড্যাশ ডায়েট। এতে রক্তচাপ এবং ওজন দুই থাকে নিয়ন্ত্রণে।
প্রতিদিন যে সব খাবার খাবেন
ফল, শাকসবজি, স্কিমড মিল্ক খান। প্রয়োজনে ছানাও খেতে পারেন।
স্যাচুরেটেড ফ্যাট, কোলেস্টেরল ও ট্রান্স ফ্যাট এসব খাবার থেকে বাদ রাখুন। সেই সঙ্গে মিষ্টি, সফট ড্রিংকস, রেড মিট , সোডিয়াম এসব কিন্তু একেবারেই বাদ। সেই সঙ্গে এড়িয়ে চলুন বাইরের খাবার। অতিরিক্ত নুন রয়েছে এমন কিছু কিন্তু খাবেন না।
খাবার সময়ে খান। খাবারের মাঝে অতিরিক্ত গ্যাপ দেবেন না। খিদে পেলে ওটসের কুকিজ কিংবা আমন্ড খান। চানাচুর, ঝুরিভাজা, চিপস এসব একেবারেই নয়। প্রতিদিন সময় করে ৩০ মিনিট হাঁটতে যান। এতে রক্তে সুগারের মাত্রা যেমন নিয়ন্ত্রণে থাকবে সেই সঙ্গে শরীরও থাকবে ভাল।
আরও পড়ুন: Recipe: বাঁধাকপি দিয়ে চিকেনের রান্না করেছেন কখনও? এই সহজ রেসিপি জেনে নিন আর আজই বানিয়ে ফেলুন…