মেদ ঝরাতে বাঙালি অনেকদিন আগে থেকেই ওটসের সাহায্য নিয়েছে। মধ্যপ্রদেশ কমাতে মুড়ির বিকল্প হয়ে গিয়েছে ওটস। যদিও এই খাবারে কোনও ক্ষতি নেই। মধ্যপ্রদেশ এক ইঞ্চি না কমলেও ব্লাড সুগার থেকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেশ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যদিও আগেকার দিনে মা, ঠাকুমারা ওটসের ব্যবহার জানতে না। তাঁদের ভরসা ছিল ডালিয়া, বার্লিতে। দেখতে গেলে এই সব খাবারই ওজন কমাতে সহায়ক। এতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম আর ফাইবারের পরিমাণ বেশি। আর এখন ট্রেন্ডে রয়েছে কিনোয়া। দানাশস্যের মতো দেখতে হলেও কিনোয়া বীজ। তবে, দানাশস্যের মতোই কিনোয়া বেশ স্বাস্থ্যকর। বরং, এখন বিশ্বে এ সুনাম ‘সুপারফুড’ হিসেবে।
ওটস কিংবা ডালিয়াতে যে পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট রয়েছে, তার থেকে কম কার্বোহাইড্রেট মেলে কিনোয়ায়। তার উপর এই কিনোয়ায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। স্বাস্থ্যের দিক দিয়ে কিনোয়ার মতো খাবারের বিকল্প খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। কিনোয়ার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুব কম। সুতরাং, এই খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা একদম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তার উপর অ্যামাইনো অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেশিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টিতে ভরপুর। এই খাবারে ভিটামিনের চাহিদাও পূরণ হয়ে যায়। ডায়েটের জন্য যাঁরা গ্লুটান-ফ্রি খাবারের সন্ধানে থাকেন, তাঁদের জন্য আদর্শ কিনোয়া। সুতরাং, এ বিষয়ে কোনও দ্বিমত নেই যে, কিনোয়া খেয়ে ওজন কমানো যাবে না। বরং, কিনোয়া খেলে আপনার থাকবেন ফিট।
সাধারণত জলখাবারেই কিনোয়া খাওয়া হয়। দানাশস্য না হলেও ওটস, ডালিয়ার মতোই রান্না করা হয় কিনোয়া। তবে সেদ্ধ কিনোয়ার চাইতে ভারতীয় স্টাইলে কিনোয়া অনেক বেশি সুস্বাদু। অর্থাৎ কিনোয়া দিয়ে পোলাও থেকে ধোসা সবই রেঁধে নেওয়া যায়। আর শুধু যে জলখাবারেই এই খাবার খেতে হবে এমন কোনও মানে নেই। তবে দিনের শুরুতে এই খাবার খেলে ওজন কমানো সহজ হবে। তাই ব্রেকফাস্টে আপনি কিনোয়ার উপমা খেতে পারেন।
কিনোয়ার উপমা তৈরির রেসিপি-
উপকরণ: ২ কাপ কিনোয়া, ৩ টেবিল চামচ করে গাজর ও বিনসের কুচি, ৪ টেবিল চামচ কর্ন বা ছাড়ানো ভুট্টা, ২ টেবিল চামচ করে লাল, হলুদ ও সবুজ ক্যাপসিকামের কুচি, ১ চা চামচ আদা কুচি, ১ চা চামচ কাঁচালঙ্কা কুচি, ৪ টেবিল চামচ টমেটো কুচি, ৩ টেবিল চামচ পেঁয়াজ কুচি, ১ টেবিল চামচ চিনাবাদাম, ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, স্বাদ অনুযায়ী নুন ও গোলমরিচের গুঁড়ো আর ১ চা চামচ গোটা সর্ষে।
পদ্ধতি: কুইনো প্রথমে সেদ্ধ করে নিন। সমস্ত সবজি কুচিয়ে নিন। চিনাবাদাম ভেজে তুলে নিন। কড়াইতে তেল গরম করুন। গোটা সর্ষে, কাঁচা লঙ্কা কুচি ও আদা কুচি ফোড়ন দিন। এবার এতে গাজর ও বিনসটা ভাল করে ভেজে নিন। তারপর এতে ভুট্টা, পেঁয়াজ ও ক্যাপসিকাম কুচি দিয়ে দিন। এবার এতে টমেটো কুচি দিন। স্বাদমতো নুন ও গোলমরিচ দিয়ে ভাজতে থাকুন। সবজিগুলো সেদ্ধ হয়ে এলে এতে সেদ্ধ করে রাখা কিনোয়া দিয়ে দিন। সবজির সঙ্গে কিনোয়া মিশে গেলে গ্যাস বন্ধ করে দিন। ব্যস তৈরি কিনোয়ার উপমা। এই রেসিপিতে আপনি আপনার পছন্দমতো সবজিও ব্যবহার করতে পারেন। আর জলখাবারে উপভোগ করতে পারে কিনোয়ার উপমা।