বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে জীবনযাত্রা আগের থেকে হয়তো অনেক বেশি সহজ হয়েছে। কাজে সময় বেঁচেছে। তবুও কোথাও যেন আমরা আমাদের ভাল সুযোগ হারিয়ে ফেলেছি। যে কারণে শরীরে বাসা বাঁধে একাধিক সমস্যা। আগেকার দিনে মা-দিদিমাদের শরীরে কিন্তু এই সব কোনও সমস্যাই ছিল না। বরং তাঁরা আমাদের থেকে অনেক বেশি ফিট ছিলেন। সেই সঙ্গে প্রচুর পরিশ্রমও করতে পারতেন। এছাড়াও তাঁরা এমন কিছু নিয়ম মেনে চলতেন যা কিন্তু আমাদের শরীরের পক্ষে খুব ভাল। আর তার মধ্যে ছিল এই ডাল, চাল ভাল করে ধুয়ে এবং আগের থেকে ভাল করে ভিজিয়ে রেখে রান্না করা। তেমনই বাড়িতে বাড়িতে রীতি ছিল সকালে উঠে ভেজানো বাদাম খাওয়ার। ডাল এবং যে কোনও বাদাম কিন্তু সব সময় ভিজিয়েই খাওয়া উচিত। একই কথা বলছেন নিউট্রিশনিস্টরাও। কেন জানেন?
বাদাম এবং ডালের মধ্যে রয়েছে আয়রন, জিঙ্ক, ক্যালশিয়াম এবং প্রোটিন। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। সেই সঙ্গে প্রোটিনের যোগান দেয়। তবে বাদাম এবং ডালে ফাইটিক অ্যাসিড নামেও একটি উপাদান থাকে। যা পুষ্টির শোষণকে বাধা দেয়। এবং তখন অপুষ্টিজনিত কারণ থেকেই শরীর ফুলে যায়।
আর এই বাদাম আর ডাল আগে থেকে ভিজিয়ে রাখলে ফাইটেট নামের একরকম এনজাইম নিঃসৃত হয়। যা ফাইটিক অ্যাসিডে ভেঙে যায় এবং বদহজম জনিত সমস্যা দূর করে। পুষ্টির কোনও ঘাটতি হয় না। হার্ভার্ড স্কুল অফ পাবলিক হেলথের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, লেকটিন ও ফাইটেট সমন্বিত খাদ্যগুলি সব সময় ভিজিয়ে বা সিদ্ধ করে রান্না করা উচিত। এতে খাবার হজম করতে কিন্তু কোনও সমস্যা হয় না। এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সের তরফে যেমন জানানো হয়েছে, ভেজানো আমন্ডের মধ্যে থাকে আইডিলিক মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ভিটামিন ই, ফাইবার- যা আমাদের হার্টের জন্য ভাল। সেই সঙ্গে শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোজ আমন্ড খান। কিন্তু শারীরিক কোনও সমস্যা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।
আমন্ড খাওয়ার আগে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলেই হবে। অনেকে সারা রাত ধরে আমন্ড ভিজিয়ে রাখেন। তার কোনও প্রয়োজন নেই বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
ডাল অন্তত তিনবার ভাল করে ধুয়ে নিয়ে তবেই ভেজান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডাল ভাল করে ধুয়ে ওর মধ্যে দু কাপ জল এবং এক চিমটে নুন দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন । যে পাত্রে ডাল ভেজানো হচ্ছে তা অবশ্যই ঢাকা দিয়ে রাখবেন। এবার রান্না করার আগে আরও একবার ডাল ধুয়ে নিন। এভাবে ডাল আর আমন্ড খেলে যেমন পুষ্টিগুণ বাড়বে তেমনই খাবার দ্রুত হজমও হবে।