বর্ষা মানেই বাঙালির পছন্দের খিচুড়ি (Khichudi) খাওয়া। বৃষ্টি-মুখর দিনে চাল-ডালে খিচুড়ি আর ইলিশ (ilish) থাকলে তো কথাই নেই। বর্ষার শুরুতেই সন্ধ্যে হলেই নামছে বৃষ্টি। আর বৃষ্টির সঙ্গে মাছেদের যেমন সম্পর্ক রয়েছে, তেমনি বাঙালির আবার দুটোর সঙ্গেই সম্পর্ক একদম গলায় গলায়। তাই বর্ষা এলেই মনটা ইলিশ-ইলিশ বেশি করে উঁকি দেয়। আকাশ বেশ কয়েকদিন মেঘলা করলেও মনটা নাকি খিচুড়ি চায়। কালো ঘন মেঘ উঠলেই যে বৃষ্টি হবে, তার কোনও অর্থ আজকালকার দিনে। এমন সময়ে বাঙ্গালির রসনায় একটি নাম জপ করতে থাকে সবাই। বৃষ্টির দেখা না পেলেও সেদিন পেট ভরে সকলেই তৃপ্তি সহকারে খিচুড় সাবড়ে দেন।
খিচুড়ি মূলত বাউলদের খাবার। এই ছন্নছাড়া গান পাগল মানুষগুলো গান শুনিয়ে মানুদের বাড়ি বাড়ি যেতেন আর মানুষদের কাছ থেকে চাল -ডাল পেতেন। তাই তারা এই চাল -ডাল দিয়ে দ্রুত ও সহজেই খিচুড়ি রান্না করতেন। অন্যান্য দিন তারা ভিন্ন খাবার রান্না করলেও বৃষ্টির দিন পেট পুজা করার জন্য খিচুড়ি খেতেন। খিচুড়ি রান্না খুব সহজ। খেতেও খুব সুস্বাদু। চাল-ডাল ও সবজি মিশিয়ে খুব দ্রুত হয়ে যায় খিচুড়ি।গ্রামাঞ্চলে রান্নাঘর ঘরের বাইরে থাকায় বৃষ্টির দিনে উনুন ভিজে যেত। তাই তারা খাবারের জন্য এই সহজতম খাবার বেচে নিত।
খিচুড়িঅন্ত প্রাণ বাঙালির পাতে ইলিশের একটি টুকরো পড়লেই মনটা খুশ হয়ে যায়। তাহলে যদি দুটি একসঙ্গেই পাতে পড়ে. তাহলে বৃষ্টিদিনগুলো বেশ মনের মতই কেটে যাবে। এবার বর্ষায় পরিবারকে চমক দিয়ে রেঁধে ফেলুন ইলিশ ভুনা খিচুড়ি। খুব সহজ এই রেসিপিটি বানাতে কী কী উপকরণ, কীভাবে তৈরি করবেন, তা দেখে নিন একনজরে…
উপকরণ: ২ কাপ পোলাওর চাল, ৪ টুকরো ইলিশ মাছ, ৩ চা চামচ আদা-রসুন বাটা, ৩ চা চামচ হলুদ গুঁড়া, ৪ থেকে ৫টি এলাচ, ৪টি লবঙ্গ, ২টি দারুচিনি, আধা কাপ মুগ ডাল, আধা কাপ মসুর ডাল, পরিমাণমত কাঁচা মরিচ, ৮ চা চামচ সরষের তেল ও স্বাদমত লবণ।
প্রস্তুত প্রণালী: প্রথমে চালগুলো ভালো করে ধুয়ে ২০-৩০ মিনিটের মতো ভিজিয়ে রেখে পানি ঝরতে দিন। মাছে সামান্য লবণ-হলুদ মাখিয়ে ভেজে একটি পাত্রে রেখে দিন। এখন মাছ ভাজা তেলে লবঙ্গ, এলাচ ও দারুচিনি দিন। দু-এক মিনিট পর তাতে আদা ও রসুন বাটা দিয়ে এবার ডাল, ডাল, হলুদ গুঁড়ো ইত্যাদি দিয়ে ভালো করে নাড়তে থাকুন। কিছুক্ষণ পর পর নাড়তে হবে। এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, চাল যেন কিছুতেই পাত্রের সঙ্গে লেগে না যায়।
পাশাপাশি অন্য একটি চুলায় বা আগেই মুগ ও মসুর ডাল ধুয়ে ভেজে রাখবেন। এখন ভাজা ডালগুলো চালের সঙ্গে দিয়ে নেড়ে ভাজতে থাকুন। ভালো করে ভাজা হয়ে গেলে তাতে এবার পরিমাণমত পানি দিন। চালগুলো ফুটতে শুরু করলে স্বাদমত লবণ দিয়ে দিন। খিচুড়ির পানি যখন শুকিয়ে যাওয়া শুরু করবে সেই সময় উপরে ইলিশ মাছ ভাজা ও কাঁচা মরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন। কয়েক মিনিট এভাবে ভাপে রাখার পর চুলা বন্ধ করে নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন ইলিশ খিচুড়ি।