সৌভাগ্য ও ধন-সম্পত্তির দেবী মহালক্ষ্মীর (Devi Lakshmi) আরাধনা আজ বাংলার ঘরে ঘরে। আজ বাঙালির ঘরে সুস্বাদু নিরামিষ রান্নার বিশাল আয়োজন। বিশেষ করে যাঁরা পূর্ববঙ্গীয়, তাঁদের জন্য় এই দিনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এইদিন লক্ষ্মীপুজোয় (Lakshmi Puja) আতপ চাল দিয়ে ভোগের খিচুড়ি, লাবড়া, ফুলকপির রসা, লুচি, সুচি, মিষ্টি, নারকেলের সন্দেশ ও নাড়ু ইত্যাদি তৈরি হয়। অনেকের বাড়িতে রীতি মেনে জোড়া ইলিশ মাছও ভোগ ( Special Bhog) হিসেবে দেওয়া হয় দেবী লক্ষ্মীকে। লক্ষ্মীপুজো নিয়ে সব বাড়িতে একই নিয়ম নেই। অকেক বাড়িতে এক একরকম রীতি মিনে ভোগ নিবেদন করা হ। এদিন দেবীকে প্রসন্ন করতে তাঁর প্রিয় সবকিছু ভোগ ও নৈবেদ্য হিসেবে দেওয়া হয়। বিশ্বাস করা হয় লক্ষ্মী যে যে জিনিস ও খাবার ভালবাসেন তা দিলে খুব প্রসন্ন হয়ে আশীর্বাদ বর্ষণ করেন।
ভোগের রান্নায় আরও একটি খাবার বা ভোগ দেওয়া হয়। পুরীর মন্দিরে এদিন লক্ষ্মীপুজো করা হয়। বেলা ১টার সময় যে ভোগ নিবেদন করা হয় জগন্নাথকে, সেই সময়লক্ষ্মীকেও ভোগ দেওয়া হয়। তবে এই বিশেষ দিনে একটি ভোগ একটু স্পেশাল কদর পায়। লক্ষ্মীবিলাস। জগন্নাথের ৫৬টি ভোগের মধ্য়ে এই ভোগ থাকবেই। পুরাণ মতে, রথযাত্রার পঞ্চমদিনে গুন্ডিচা মন্দির থেকে জগন্নাথদেবকে শ্রীমন্দিরে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন স্ত্রী লক্ষ্মী। স্ত্রীর অনুরোধ সম্মতি জানিয়ে তিনদিনের মধ্যে শ্রীমন্দিরে ফিরে যাওয়ার আশ্বাস দেন। মহালক্ষ্মীকে খুশি করতে ও মান ভাঙাতে জগন্নাথ সঙ্গে নেন লক্ষ্মীর প্রিয় ভোগ, লক্ষ্মীবিলাস। শুধু উল্টোরথের দিনেই নয় , প্রতি শুক্রবার লক্ষ্মীপুজোয় ও কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় ভোগের থালিতে এই স্পেশাল ভোগ নিবেদন করতে পারেন। এতে দেবী প্রসন্ন হয়ে আশীর্বাদ প্রদান করতে পারেন।
উপকরণ
ময়দা- ২ কাপ,
দুধ- ১ কাপ,
পাটালি গুড়- আধ কাপ,
নারকেল বাটা বা কোড়া- ১ কাপ,
মধু – ১ কাপ,
খোয়া ক্ষীর- ৩০ গ্রাম,
এলাচ গুঁড়ো- ১ চা চামচ,
ভাজার জন্য তেল বা ঘি- প্রয়োজন মত,
পদ্ধতি
একটি কাঁসার বা পিতলের বড় পাত্রের মধ্যে ময়দা, খোয়া ক্ষীর, নারকেল বাটা বা কোরা, পাটালি গুঁড়ো, মধু, এলাচ গুঁড়ো একসঙ্গে নিয়ে ভালভালে মাখিয়ে নিতে হবে। সব উপকরণ মিশে গেলে এবার অল্প অল্প করে দুধ দিন আর হাতে করে মেখে নিন। কতকটা সত্যনারায়ণ পুজোর সিন্নির মত। একসঙ্গে দুধ ঢাললে মাখতে অসুবিধা হতে পারে। এবার গোটা মিশ্রণটি ঘন হয়ে থকথকে হয়ে গেলে আলাদা করে রেখে দিন।
এবার কড়াইতে ঘি বা তেল গরম করুন। ওই মিশ্রণটি আরও একবার ঘেঁটে নিন। তারপর একটি মাঝারি হাতা নিয়ে ছোট ছোট মালপোয়ার মত আকার দিয়ে ভাজতে থাকুন। বেশি পাতলা করবেন না। বড়ার মত ভাজতে পারেন। তেলে বা ঘিতে দিলে কতটা বড়ার মতই দেখতে লাগে। বাগামি হয়ে ভাজা হয়ে গেলে তেল ঝরিয়ে তুলে নিন। এমনবাভাবে বেশ কয়েকটি ভেজে নিন। সব ভাজা হয়ে গেলে একটি পিতলের বাটিতে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখুন। উপরে সামান্য নারকেলের কোরা বা খোয়া ক্ষীর ছড়িয়ে দিতে পারেন।