বিশ্ব জুড়েই খ্যাতি রয়েছে ভারতীয় খাবারের। ভারতীয় রান্নায় এত রকমের মশলা ব্যবহার করা হয়, তার যে স্বাদ, গন্ধ তার জন্যই কিন্তু তা এত বিখ্যাত। ভারতীয় রান্নার স্বাদ কিন্তু খোলতাই হয় এই মশলার গুণেই। বিরিয়ানি, পোলাও থেকে শুক্তো- বিশ্বের যে প্রান্তে বাঙালি রয়েছে সেখানেও কিন্তু পৌঁছে গিয়েছে এই সব খাবারের স্বাদও। তবে ভারতীয় রান্না নিয়ে এত মাতামাতি থাকলেও বেশ কিছু ভুল ঘারণাও প্রচলিত রয়েছে আমাদের মধ্যে। এমনকী অনেক ভারতীয়ের মনের মধ্যেও এই ভুল গেঁথে রয়েছে। জেনে নিন।
বিশেষত পশ্চিমের দেশের বাসিন্দাদের ধারণা ভারতীয় খাবার মানেই সেখানে তেল, ঘি-এর আধিক্য থাকবেই। ডাল থেকে তরকারি সবেতেই ভারতীয়া ঘি দেন। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই সঠিক নয়। গরম ভাতে ঘি, লেবু খাওয়া কিংবা রুটির মধ্যে ঘি মাখিয়ে খাওয়া ভারতীয় সংস্কৃতির অঙ্গ। কিন্তু রোজকার রান্নায় তা একেবারেই হয় না। বেসিরভাগ বাড়িতে মুসুরের ডাল, সবজি, মাছ, রুটি, টকদ এসব খাওয়া হয়। এর মধ্যে কিন্তু ঘি থাকেই না। তবে হালুয়া, পুরি বা সবজি-এসব কিন্তু ঘি ছাড়া হয় না। তাই বলে ভারতীয় খাবার মোটেই অস্বাস্থ্যকর নয়।
ভারতীয় রান্নায় বিভিন্ন রকম মশলা ব্যবহার করা হয়। আর তাই অনেকেরই ধারণা, মূলত গরম ঠেকাতেই এই সব মশলা ব্যবহার করা হয়। কিন্তু রান্নায় ব্যবহৃত এই হলুদ, গোটা গরম মশলা, লবঙ্গ, জিরে, ধনে- সবকটিরই অনেক গুণ রয়েছে। শরীর সুস্থ রাখে, সেই সঙ্গে বাড়িয়ে তোলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। তবে কোনও মশলাতেই কিন্তু লঙ্কার গুঁড়ো থাকে না। কিংবা শুধুমাত্র ঝালের জন্য ব্যবহার করা হয় না। নিয়মিত সব খাবারই যে মশলাদার বানানো হয় তা কিন্তু নয়। প্রয়োজন বুঝে তার ব্যবহার রয়েছে।
ভারতীয় যে কোনও পদ বানাতেই যে অনেক সময় লাগে তা নয়। এমন বহু জনপ্রিয় পদ রয়েছে, যা কিন্তু ২০ মিনিটের মধ্যেই বানিয়ে নেওয়া যায়। তন্দুরি টিক্কা, পনির বাটার মশলা, বাটার চিকেন এই সব জনপ্রিয় পদগুলি রান্না করতে কিন্তু মোটেই বেশি ঝক্কি নেই।
কোনও খাঁটি ভারতীয় রান্নাতেই কারি পাউডার ব্যবহার করা হয় না। রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় মশলা বাড়িতেই তৈরি করে নেওয়া হত। আর সেই চল কিন্তু এখনও রয়েছে। ৬০ বা ৭০-এর দশকের শেষে ব্রিটিশরা এই কারি মশলা ব্যবহার করত। তবে এই কারি পীউডার হল সব মশলার মিশ্রণ। আগেকার দিনে এই গরম মশলাকেই বলা হত কারি পাউডার। তবে প্রতিটি পরিবারে এই গরম মশলা ব্যবহারের আলাদা রীতি রয়েছে। স্বাদ অনুযায়ী এই সব মশলা রান্নায় ব্যবহার করা হয়। উপাদানের গুণগত মান যত ভাল হবে ততই কিন্তু মশলা ভল হবে।
আর ভারতের প্রতি প্রদেশে নিজস্ব কিছু মিষ্টি রয়েছে। যাঁরা ভারতীয় নন তাঁরা কিন্তু একথা কোনও ভাবেই মানতে চান না। কিন্তু ঐতিহ্য ও প্রদেশ ভেদে ভারতেও মিষ্টির প্রভেদ রয়েছে। বিভিন্ন উৎসবই তার প্রমাণ।