বিশ্বজুড়েই পছন্দের পানীয়ের তালিকায় একেবারেই প্রথম স্থানে রয়েছে চা। অধিকাংশ মানুষেরই চা ছাড়া দিনের শুরু হয় না। বাড়িতে অতিথি আসলেও আপ্যায়নে প্রথম থাকে চা। স্বয়ং মন্ত্রী যখন বলেন চায়ের কাপে রাশ টানতে তখন জনগণের কাছে তা বেশ বিস্ময়ের। ভয় নেই, এখনই টান পড়ছেন না আপনার চায়ের আড্ডায়। তবে চাপ পড়েছে পাশের পাড়ায়। পড়শি দেশ পাকিস্তানের পরিকল্পনা মন্ত্রী আহসান ইকবাল এমনই নির্দেশ দিয়েছেন দেশবাসীকে। আপাতত সে দেশে উৎপন্ন হয় না এমন সব খাবারে কিছুদিনের জন্য বিরতি টানতে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। কারণ পাকিস্তানে চা উৎপন্ন হয় না, অর্থ ধার করে তা আমদানি করতে হয়। রিপোর্ট অনুসারে, পাকিস্তানে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে চা আমদানিতে খরচ হয়েছে ৮৪ লক্ষ কোটি টাকা। অন্য আরেকটি রিপোর্ট বলছে গত বছরের তুলনায় এবছর চা আমদানিতে অতিরিক্ত ১৩ লক্ষ কোটি টাকা।
টান পড়েছে রিজার্ভ ব্যাংকে। যে কারণে সেই জেশেোর জনগণকে এই অনুরোধ করেছেন মন্ত্রী। গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে ছিল প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। জুনের প্রথম সপ্তাহে তা কমে ১ হাজার কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। এমনকী বিদ্যুৎ ব্যবহারেরও সংযমী হতে বলা হয়েছে সেখানকার নাগরিকদের। রাত আটটার মধ্যে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সব দোকান। আপাতত ৩৮ টি পণ্যের উপর জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। রোজকার ব্যবহার্য জিনিস সেই তালিকায় নেই তবে বিলাসবহুল বেশ কিছু দ্রব্য তো আছেই। তবে চা খাওয়া কমিয়ে কতখানি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এই অর্থনৈতিক ক্ষতি তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সমালোচনা শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু চা-কফি কমিয়ে আদৌ সমস্যার সমাধান হবে কিনা সে বিষয়েও উঠছে প্রশ্ন।
Pakistan’s Federal Minister Ahsan Iqbal is seen appealing to Pakistanis to consume less tea because even the tea they drink is imported after taking loans.
When Pakistanis trolled Indians in Abhinandan’s case saying Tea Is Fantastic, they were not wrong.
It really is ☕️ pic.twitter.com/xXlvpumr5L
— Major Gaurav Arya (Retd) (@majorgauravarya) June 14, 2022
গত এপ্রিলে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিয়েছেন ইমরান খান। ইমরান খানের বিদায়ের পর শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে জোট সরকার গঠিত হয়। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করা তাঁর সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রধানমন্ত্রীর পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শাহবাজ শরিফ অভিযোগ করে আসছেন, ইমরান খানের সরকার পাকিস্তানের অর্থনীতিকে খুবই খারাপ অবস্থায় রেখে গিয়েছেন। দেশের অর্থনীতিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনাটা এই সরকারের পক্ষে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। তেল আর গ্যাস কেনার মত পর্যাপ্ত অর্থও নেই সরকারের হাতে। চলতি অর্থবর্ষের বাজেটে আরও জানানো হয়েছে, বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি এবং সরকারি কর্তাদের নতুন গাড়ি কেনা আপাতত বন্ধ। দেশের বিত্তশালীদের উপর অতিরিক্ত করও চাপানো হয়েছে।