তেল ছাড়াও (Cooking Oil) রান্না নয়, কিন্তু আমাদের জিহ্বা এমন ভাবে প্রস্তুত যে অনেকেই বিনা তেলের রান্না একেবারেই খেতে পারেন না। কর্মক্ষেত্রে বা নিজের প্রয়োজনে অতিরিক্ত তেল যেমন কার্যকরী তেমনই কিন্তু রান্নায় এই অতিরিক্ত তেলের মোটেই কোনও প্রয়োজন নেই। বরং তেলের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে আমাদের তেলের সাশ্রয় শিখতে হবে। একগাদা তেল ঢেলে দিলেই রান্না সুস্বাদু হয় না। পরিমাপ মতো তেল, মশলা দিলে তবেই রান্না সুস্বাদু হয়। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত তেল আমাদের শরীরের জন্য কিন্তু খুবই ক্ষতিকারক। তেল খেলেই বাড়ে ক্যালোরি। আসে হার্টের সমস্যা (Heart Problem), লিভারের সমস্যা, কোলেস্টেরল (Cholesterol)-ট্রাইগ্লিসারাইডের সমস্যা। আর তাই এই খাওয়ার ব্যাপারে কিন্তু আমাদের প্রথম থেকেই সজাগ থাকতে হবে। আবার তেলের মধ্যে যে এমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে তাও আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। কিন্তু তা পরিমাপে খেতে হবে। আর রান্নার সময় তেলের স্মোকিং পয়েন্ট খেয়াল রাখাও খুবই জরুরি। আলিভ অয়েল যেমন আমাদের শরীরের জন্য যে বেশ উপকারী তা কিন্তু প্রমাণিত। কারণ এই তেলের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর ভিটামিন- যা আমাদের হার্টের জন্য খুবই উপকারী। স্যালাড কিংবা ড্রেসিং-এর জন্য এই তেলই ব্যবহার করা হয়। দেখে নিন কোন কোন তেল আমাদের শরীরের জন্য একেবারেই ভাল নয়।
ভুট্টার তেল- ভুট্টার তেলের দাম তুলমামূলক ভাবে কম। সেই সঙ্গে ভুট্টার তেলের মধ্যে থাকে ওমোগা-৩ এবং ওমেগা- ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। এছাড়াও ভুট্টার তেলে রয়েছে স্যাচুরেটেড ফ্যাট। আর তাই আপাত দৃষ্টিতে এই তেলকে স্বাস্থ্যকর মনে হলেও কিন্তু তা মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ এই তেলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, যা আমাদের লিভারের পক্ষে খুবই ক্ষতিকারক।
সোয়াবিন তেল- আজকাল বেশিরভাগ বাড়িতেই সোয়াবিনের তেল ব্যবহার করা হয়। আর সোয়াবিনের তেল অত্যন্ত পরিশোধিত। অনেক রকম প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। যে কারণে এই তেল নিষ্কাশনের সময় বেশ কিছু রাসায়নিক পদার্থও এতে এসে মেশে। তবে এই তেলের মধ্যে বেশ কিছু অক্সাইড যৌগ থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। টাইপ ২ ডায়াবিটিস, হৃদরোগ, মেটাবলিজমের সমস্যায় কাজ করলেও নিয়মিত ভাবে এই তেল খেলে শরীরের কোশের ক্ষতি হয়। যেখান থেকে একাধিক রোগ সমস্যা আসতে পারে।
সূর্যমুখীর তেল- সূর্যমুখীর তেল কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য মোটেই উপকারী নয়। আর এই তেলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে থাকে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। যা আমাদের শরীরে প্রদাহ জনিত সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও সূর্যমুখীর তেলের মধ্যে থাকে অ্যালডিহাইড। যা আমাদের আরও বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। শরীরে বিষের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় এই সূর্যমুখীর তেল।
নারকেল তেল- নারকেল তেলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, যা পরবর্তীতে লিপিডে রূপান্তরিত হয়। এছাড়াও নারকেলে তেলের মধ্যে থাকে মাঝিরি চেনের ফ্যাটি অ্যাসিড। বেশ কিছু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে নারকেল তেল আমাদের রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর যা আমাদের হার্টের জন্য একেবারেই ভাল নয়।