ডিপ্রেশনের সমস্যায় এখন অনেকেই ভুগছেন। তবে নতুন এই সমীক্ষায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ এক তথ্য। যাঁরা নিরামিষ খান, তাঁরা আমিষাশীদের তুলনায় অনেক বেশি ডিপ্রেশনের শিকার। যাঁরা নিজের প্রয়োজনে বা সামাজিক কোনও কারণে মাছ, মাংস অ্যাগ করেছেন তাঁদের মধ্যে এই মন-খারাপ আরও খানিকটা বেশি। জার্নাল অফ অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডারে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, মোট ক্যালোরি, প্রোটিনের পরিমাণ, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট গ্রহণ এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের স্তরের উপর নির্ভর করে পুষ্টির পরিমাণ বিবেচনা করা হয়। আর সেখান থেকে দেখা গিয়েছে নিরামিষাশীদের মধ্যে ডিপ্রেশন সবচাইতে বেশি। এর কারণ কিন্তু খাবারের মধ্যে পুষ্টির অভাব তা নয়। তবে নিরামিষাশী আর হতাশার মধ্যে যোগসূত্র কি?
যাঁরা নিরামিষ খান তাঁদের মনে হয়, যাঁরা মাংস খাচ্ছেন তাঁরা পরিবেশের খুবই ক্ষতি করছেন। অকারণে প্রচুর পশুহত্যা হচ্ছে। আর এই পাপবোধ থেকেই তাঁরা ডিপ্রেশনে ভোগেন। একই সঙ্গে তাঁদের মধ্যে নানা অপরাধবোধ চলতে থাকে। তাঁরা ভাবেন, কেন অন্যরা তাঁদের মতো করে ভাবতে পারে না। শুধুমাত্র মাংসের চাহিদা মেটাতেই প্রচুর পরিমাণ প্রাণীকে রোজ মেরে ফেলতে হয়। এছাড়াও যাঁরা আমিষ খান তাঁদের মধ্যেো হিংসাত্মক প্রবণতা বেশি হয় এমন ধারণাও রয়েছে কিছু মানুষের মধ্যে। আর তাই ব্রাজিলের এই গবেষণা বলছে, যাঁরা আমিষ থেকে নিরামিষাশি হয়েছেন তাঁদের মধ্যেই ডিপ্রেশন তুলনায় বেশি।
আমাদের দেশে এমন অনেক মানুষ আছেন যাঁদের রোজের খাবারের তালিকায় মাছ-মাংসের পরিবর্তে নিরামিষ থাকে। বলা ভাল, ভারতের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী এই নিরামিষ খাবারেই অভ্যস্ত। এছাড়াও সুস্থস থাকতে অনেকের মধ্যে নিরামিষ খাবার খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। তার পিছনে ধর্মীয়, সামাজিক বা ব্যক্তিগত কারণ থাকতে পারে। আর তাই নিরামিষ খাবার খেলে সেই ডায়েটের মধ্যে যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট থাকে তা জেনে নেওয়া জরুরি। বয়স এবং লিঙ্গভেদে সব মানুষের ডায়েট আলাদা হয়। শুধু নিরামিষাশীদের মধ্যেই যে বিষন্নতা আসে তা নয়, বিষন্নতা থেকেও নিরামিষ খাবারের প্রতি আগ্রহ বাড়তে পারে। পশুহত্যা, মাংস-মাছ খাওয়া ইত্যাদি নিয়ে যাঁরা অপরাধ বোধে ভোগেন অজান্তেই সেই ডিপ্রেশন থেকে তাঁরা নিরামিষাশী হয়ে যান।