গরমে ঘামের সমস্যা তো হয়ই। আবহাওয়া এবং আর্দ্রতাজনিত কারণেই এই সমস্যা বেশি হয়। কিন্তু গরম ছাড়াই যদি ঘামনতে থাকেন তাহলে তা কিন্তু গুরুতর কোনও শারীরিক সমস্যার ইঙ্গিত। অনেকেই আছেন যাঁরা এসির মধ্যে বসেও ঘামেন। খেয়াল করলে দেখবেন কপাল, হাতের তালু এবং পায়ের পাতায় ঘাম সবচাইতে বেশি হয়। এই সমস্যাকে হাইপার হাইড্রোসিস বলা হয়। ঘাম হওয়া কিন্তু কোনও অসুখ নয়। ঘাম হওয়া মাত্র শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বেরিয়ে যাওয়া। তবে অতিরিক্ত ঘাম হলে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় কিছু খনিজ বেরিয়ে যায়। ফলে সোডিয়াম-পটাশিয়ামের মাত্রা নেমে যায় অনেক সময়। এতে শরীরের তাপমাত্রাও কমে যায়।
হঠাৎ ঘামের কারণ কী?
ঘাম হওয়ার একাধিক কারণ থাকে। অতিরিক্ত শরীরচর্চা করলে, নার্ভাস হলে ঘাম বেশি হতে পারে। শরীরের মেটাবলিজম যাঁদের ভাল তাঁদেরও ঘাম বেশি হয়। বেশি ঘাম হার্ট অ্যার্টাকের লক্ষণও। যাঁদের রক্তচাপ বেশি, যাঁদের কোলেস্টেরল-ট্রাইগ্লিসারাইড হাই তাঁদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা সবচাইতে বেশি। তাঁরা অকারণেই ঘামতে থাকেন। এছাড়াও উদ্বেগের মধ্যে থাকলে, রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে এবং মেনোপজ পরবর্তী সময়ে মহিলাদের এই ঘামের সমস্যা বেশি হয়।
ঘাম বেশি হলে যা করণীয়
ঘামের সঙ্গে সোডিয়াম, পটাশিয়াম বাই-কার্বোনেট বেরিয়ে যায়, যার ফলে শরীর দুর্বল ও অস্থির হয়ে যায়। জলের সঙ্গে নুন, চিনি, পাতিলেবু মিশিয়ে সরবত খেলে ভাল হয়। গরমে দইয়ের ঘোল ও ডাব খেতে পারেন। কোল্ড ড্রিংকসের পরিবর্তে ফ্রেশ ফ্রুট জুস ও টাটকা ফল খান। ভিটামিন বি-১২ এর অভাবে যেহেতু হাইপারহাইড্রোসিস হয় তাই বি-কমপ্লেক্স যুক্ত খাবার খান।
আর্য়ুবেদ বিশেষজ্ঞ ঐশ্বর্য সন্তোষ অতিরিক্ত ঘামের সমস্যায় বিশেষ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।
*প্রথমেই তিনি বলেন তেল-মশলাদার খাবার কম পরিমাণে খেতে হবে। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, অতিরিক্ত ঘামের মূল সমস্যা হল পিত্ত দোষ। আর তাই তিনি বিশেষ একটি পানীয়ের পরামর্শ দিয়েছেন।
ধনের জল– ধনে শুকনো কড়াইতে নেড়ে নিয়ে গুঁড়ো করে রাখুন। এবার এখান থেকে এক চামচ নিয়ে একগ্লাস জলে ভিজিয়ে রাখুন সারা রাত। পরদিন সকালে তা ছেঁকে খেয়ে নিন। এতে শরীর ভাল থাকবে। শরীর থেকে টক্সিন বেরিয়ে যাবে. কমবে ঘামের দুর্গন্ধও।
খুশের জল– গরমে পেট ঠান্ডা রাখতে দারুণ উপকারী খুশের জল। ২ লিটার জলে খুশ ভিজিয়ে রাখুন সারারাত। পরদিন সকালে তা ছেঁকে নিয়ে খেয়ে নিন।
কিশমিশ জল- রোজ আট থেকে ১০ টা কিশমিশ ভিজিয়ে রেখে সেই কিশমিশ ভেজানো জল কান। এতেও কিন্তু পেট পরিষ্কার থাকে। আর ঘামের সমস্যা হয় না।
*যাঁদের বেশি গাম হয় তাঁরা মিষ্টি, মশলাযুক্ত খাবার এবং টক খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
*স্নানের জলে সাদা চন্দের গুঁড়ো মেশান। রোজ এই জলে স্নান করলে শরীর ঠান্ডা থাকে। ঘাম কম হয়।