সন্তানের জন্ম দেওয়ার মুহূর্ত যে কোনও মায়ের কাছে যতখানি আনন্দদায়ক ঠিক ততটাই কিন্তু ক্লান্তিকর। দীর্ঘ এই ন’মাস ধরে মায়ের শরীরে একাধিক পরিবর্তন আসে। শারীরিক এবং মানসিক। সেই সঙ্গে শরীরে নানা হরমোনের আনাগোনা হয়। প্রসব প্রক্রিয়া মাত্রই বেদনাদায়ক। সন্তানকে যতদিন মা গর্ভে লালন করেন ততদিন পর্যন্ত জীবন থাকে একরকম আর সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর জীবনে আসে একাধিক পরিবর্তন। দিনের পর দিন রাতে জেগে থাকা, অসুস্থ শরীরে বসে থাকা এসব একজন মায়ের পক্ষে খুবই কষ্টের। তবুও মুখ বুজে মা সব সহ্য করে নেন। আর তাই মায়ের সুস্থ হয়ে ওঠা একান্ত জরুরি। এই সময়ে মায়েদের বিশেষ কিছু খাবারের পরামর্শ দেওয়া হয়। সন্তানের যাবতীয় দেখভালের পাশাপাশি তাঁরা নিয়মিত স্তন্যপান করান। তাই দ্রুত সুস্থ হতে গরম খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। আর্য়ুবেদ মতে, এই সময় যত বেশি গরম খাবার খাওয়া যায় শরীর কিন্তু তত দ্রুতই সুস্থ হয়ে ওঠে। এ বিষয়ে বিশেষ পরামর্শ দিয়েছেন আর্য়ুবেদ বিশেষজ্ঞ ডাঃ শারদ কুলকার্নি।
আর্য়ুবেদ নিয়মে যা বলা হয়েছে…
আয়ুর্বেদে খাবার দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে – একটি গরম এবং অন্যটি ঠান্ডা। আর এই ভাগ করা হয়েছে শরীরের উপর খাবারের প্রভাব কতখানি তার উপর ভিত্তি করে। কারণ এই পুরো বিষয়টির সঙ্গে জড়িয়ে হজম প্রক্রিয়াও। মনে করা হয় যে গর্ভাবস্থায় শরীরের তাপ বৃদ্ধি পায়। তাই গর্ভাবস্থার ন’মাস হবু মায়েদের ঠাণ্ডা জিনিস খাওয়া উচিত। প্রসবের পরবর্তী সময়ে মায়ের শরীরে অনেক রকম ব্যথা বাড়ে। কোমরের ব্যথার সমস্যায় সব মা-ই ভোগেন। আর তখন শরীরের তাপমাত্রা অনেকটা কমে যায়। শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। যে কারণে প্রসবের পর মহিলাদের রসুন, তিল, শুকনো আদা, ঘি এসব খেতে বলা হয়। এভাবে খেতে পারলে বুকের দুধের পরিমাণও বাড়ে।
যে সব খাবার শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয় যেমন মেথি, শুকনো আদা, আনারস, রসুন, কালোজিরে এসবও কিন্তু হবু মায়েদের জন্য ভাল। এতে প্রসব পরবর্তী সময়ে যে কোনও ব্যাথা অনেক তাড়াতাড়ি সেরে যায়।
সঙ্গে আরও যা করবেন
প্রসব পরবর্তী সময়ে সুস্থ থাকতে যেমন স্বাস্থ্যকর খাওয়া দাওয়া করতে হবে তেমনই নজর দিতে হবে বিশ্রামেও। মায়ের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম আর হালকা ব্যায়াম খুবই জরুরি।
এছাড়াও সারাদিনে প্রচুর পরিমাণ জল খেতে হবে। সঙ্গে দুধ, জিরে-মেথি ভেজানো জল, ডাবের জল, লোবুর জল এসবও কিন্তু অবশ্যই রাখুন তালিকায়। সম্ভব হলে রোজ একবাটি দুধ-সাবু খাওয়া ভাল। এতে মায়ের শরীর যেমন ভেতর থেকে সেরেন ওঠে তেমনই একাধিক সমস্যারও সমাধান হয়।