ইফতার পার্টি মানেই হালিম। বলা ভাল, হালিম ছাড়া ইফতার পার্টি জমে না। কিন্তু, ইফতার পার্টিতেই অথবা রমজানের মাসেই কেন হালিমের চল বেশি, তা জানেন? আর মূলত, ডাল দিয়ে তৈরি এই পদের নাম হালিমই বা কেন? এটা নিয়েও অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে। প্রথমে জেনে নেওয়া যাক, হালিম নামকরণের কারণ।
কেন হালিম নামকরণ?
হালিম শব্দের সাধারণ অর্থ বিনয়ী। রমজান উপবাস বা রমজান মাসের তাৎপর্য হল, এক মাস সংযম করে আল্লাহর (ঈশ্বর) প্রতি বিনয় প্রদর্শন। আর রমজানের উপবাস ভাঙার পর যেহেতু ডাল, মাংস-সহ নানা পুষ্টিকর খাদ্যদ্রব্য দিয়ে তৈরি এই পদ খাওয়ার প্রচলন দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসছে এবং ছোট থেকে বড়, সকলেরই এই পদ খুব পছন্দের, তাই-ই এটির নাম হালিম।
ইফতার পার্টি বা রমজান মাসে কেন হালিমের চল বেশি?
মূলত, বিভিন্ন ধরনের ডাল বা গমজাতীয় দানাশস্য, মাংস, পেঁয়াজ, রসুন, লেবুর রস দিয়ে তৈরি হয় হালিম। অনেক জায়গায় আবার হালিমে ডিম, কাজু , পেস্তা, ক্যাপসিকাম দেওয়া হয়। এছাড়া ঘি থেকে জিরা, গোলমরিচ, লবঙ্গের মতো স্বাস্থ্য-সমৃদ্ধ নানা মশলা ব্যবহার হয় হালিমের রান্নায়। ফলে অত্যন্ত প্রোটিন, ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার হল হালিম। সারাদিন ধরে টানা কয়েকদিন রমজানের উপবাসের পর শরীরে ক্লান্তি নেমে আসে। কিন্তু, শরীরে প্রোটিন, এনার্জির যাতে ঘাটতি না হয়, সেজন্যই ইফতার পার্টিতে হালিম রাখা হয়। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর করে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভর্তি রাখে হালিম। তাই যাঁরা রমজানের উপবাস করেন, তাঁরা প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে অন্তত ২-৩ দিন হালিম খান।
কলকাতার কোথায় ভাল হালিম পাওয়া যায়?
কলকাতায় ভাল হালিমের স্বাদ পেতে প্রথমেই উঠে আসে পার্ক সার্কাস, প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড, মেটিয়াবুরুজ, খিদিরপুর, রাজাবাজার, মল্লিক বাজার এবং চিৎপুর এলাকার নাম। এই সমস্ত এলাকায় রমজান মাসে ছোট থেকে বড়… একাধিক হালিমের দোকান বসে। এছাড়া এই সমস্ত এলাকায় বিভিন্ন রেস্টুরেন্টেও চিকেন হালিম, বিফ হালিম, মটন হালিম, এগ হালিমের সঙ্গে সঙ্গে ভেজ হালিমও পাওয়া যায়।
আরসালান, আমিনিয়া, সিরাজ, জিশান-এর মতো নামি রেস্তোরাঁগুলিতেও হালিম জনপ্রিয়। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে এই সমস্ত রেস্টুরেন্টের শাখা রয়েছে। এই সমস্ত রেস্টুরেন্টে ভেজ ও নন-ভেজ হালিমের পাশাপাশি কাজু-কিসমিস হালিম, হায়দরাবাদি হালিম, শাহি হালিম থেকে রেস্টুরেন্ট স্পেশাল রকমারি হালিমও পাওয়া যায়। এই সমস্ত রেস্তোরাঁর হালিম এতটাই জনপ্রিয় যে, রমজান মাসে দিনে কয়েকশো প্লেট হালিম বিক্রি হয়। যাঁরা রোজার উপবাস করেন না, তাঁরা এবং বাঙালিও এই সময়ে হালিম চেখে দেখতে এই সকল রেস্টুরেন্টে যান