শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে, পেশীর কার্যকারিতা ঠিক রাখতে এবং স্নায়ু সংকেত নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে নুন। তবে, নুনের পরিমাণে গোলমাল হলেই কিন্তু বড় বিপদ। অতিরিক্ত সেবন গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে নুন খাওয়া উচিত। জানেন আমাদের শরীরের প্রতিদিন কতটা নুনের প্রয়োজন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন ৫ গ্রামের কম নুন খাওয়া উচিত। যা প্রায় ২০০০ মিলিগ্রাম সোডিয়ামের সমান। সাধারণ মানদণ্ড অনুসারে প্রতিদিন ১,৫০০-২,৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম গ্রহণ শরীরের জন্য সঠিক।
বেশি নুন খেলে কী হতে পারে জানেন?
১। অতিরিক্ত লবণ আপনার শরীরের তরল ভারসাম্যকে ব্যাহত করে, যার ফলে জলশূন্যতা দেখা দেয়। ভারসাম্য ফিরে পেতে তীব্র তৃষ্ণার সৃষ্টি হয়।
২। আপনার কিডনি সোডিয়ামের মাত্রা ভারসাম্য বজায় রাখতে কাজ করে। পেট ফাঁপার সমস্যা হয়। শরীরের অতিরিক্ত তরল শরীরের বিভিন্ন অংশে ফোলাভাব সৃষ্টি করতে পারে।
৩। অতিরিক্ত সোডিয়াম আপনার রক্তপ্রবাহে জল টেনে নেয়। রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করে, ফলস্বরূপ আপনার রক্তচাপ বৃদ্ধি করে।
দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যে কী কী সমস্যা দেখা যায়?
১। ক্রমাগত বেশি নুন গ্রহণ দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ রক্তচাপের দিকে কারণ হতে পারে। যা হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের একটি প্রধান কারণ। অতিরিক্তনুন খেলে হৃদপিণ্ডকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়। হার্ট ফেলের মতো সমস্যা হতে পারে।
২। নুন তরল ধারণকে প্রভাবিত করে কিডনির কাজের চাপ বাড়ায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, এর ফলে কিডনি রোগ হতে পারে।
৩। উচ্চ সোডিয়ামের মাত্রা প্রস্রাবের মাধ্যমে ক্যালসিয়াম নির্গমন বৃদ্ধি করে, যা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি সৃষ্টি করতে পারে। ফলে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ে।
লবণ অপরিহার্য হলেও, এর ক্ষতিকারক প্রভাব এড়াতে পরিমিত নুন খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত পরিমাণে লবণ গ্রহণ তাৎক্ষণিক অস্বস্তি এবং দীর্ঘমেয়াদী গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি উভয়ই ডেকে আনতে পারে। তাই নির্দিষ্ট পরিমাণে নুন খান।