ঈশিতা মালভিয়া – সার্ফিংয়ের মহাসমুদ্রে দেশি হিরে

sreejayee das |

Dec 01, 2020 | 7:44 PM

সার্ফিং দুনিয়ায় ঈশিতা মালভিয়া আজ এক জনপ্রিয় নাম। দেশ ছেড়ে দেশান্তরেও তাঁর খ্যাতি ছড়িয়েছে।

ঈশিতা মালভিয়া - সার্ফিংয়ের মহাসমুদ্রে দেশি হিরে
সার্ফিং গার্ল

Follow Us

TV9 বাংলা ডিজিটাল :আক্ষরিক অর্থে জলই তাঁর জীবন। গত ১৩ বছর ধরে জলের সঙ্গেই তাঁর সহবাস। ভারতের প্রথম মহিলা সার্ফার (Surfer) হিসেবে ইতিহাস রচনা করেছেন তিনি-ঈশিতা মালভিয়া (Ishita Malviya)। ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনিই ছিলেন ‘রক্সি সার্ফওয়্যার’ (Roxy surfwear) -এর প্রতিনিধিত্বকারী প্রথম মহিলা সার্ফার।

ঈশিতা মালভিয়া

২০০৭ সালে প্রথম এক জার্মান বন্ধুর সাহচর্যে সার্ফিং-এর ভূত সওয়ার হয় মুম্বইয়ের(Mumbai) সাধারণ পরিবারে বড় হয়ে ওঠা ঈশিতার। তখন ১.২ কোটি দেশবাসীর মধ্যে মাত্র ১৩জন সার্ফারের সন্ধান পান তিনি। এই ‘স্পোর্ট'(Sport)-কে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে নিয়ে যেতে চান তিনি।

আরোও পড়ুন : ঈশিতা মালভিয়া – সার্ফিংয়ের মহাসমুদ্রে দেশি হিরা, চেনেন তাঁকে? রইল ফোটো অ্যালবাম

সাংবাদিকতা(Journalism) নিয়ে স্নাতক স্তরের(Graduation) পড়াশোনা করতে-করতেই বন্ধু তুষারের সঙ্গে মিলে তৈরি করেন ‘শাকা সার্ফ ক্লাব’ (Shaka Surf Club)। সেই প্রথমবারের জন্য ঈশিতার জলে পাড়ি। তারপর পিছনে ফিরে তাকাননি। যদিও আর পাঁচটা ভারতীয় পরিবারের মতই ঈশিতার পরিবারও শুরুতে রাজি হয়নি মেয়ের সার্ফিং-এর আবদারে। ক্ষণিকের মোহ ভেবে হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলেন পরিবারের সদস্য়েরা।

ঈশিতা মালভিয়া

পরিবারের তরফ থেকে আর্থিক সাহায্য না-থাকায় ঈশিতা আর তুষার একটাই সার্ফিং বোর্ড নিয়ে তাঁদের যাত্রা শুরু করেন। যদিও পরবর্তীকালে তাঁরা সমুদ্র ফেরত সার্ফারদের সার্ফিং বোর্ড সারিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করতে থাকেন।

‘সাকা সার্ফ ক্লাব’ তৈরির পর ঈশিতা আর তাঁর বন্ধু সেখানে গ্রামের শিশুদের বিনামূল্যে সার্ফিং শেখানোর ব্যবস্থা করেন। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্য়ুরো-র( National Crime Record Bureau)রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ৩০,০০০ মানুষের জলে ডুবে মৃত্যু হয় ভারতে। এই বিপদ এড়াতেই গ্রামের শিশুদের বিনামূল্যে সার্ফিং শেখানোর পরিকল্পনা মালভিয়াদের। এই ক্লাবে হাতে কলমে সার্ফিং শেখানো ছাড়াও সার্ফিং বিষয়ক যাবতীয় পাঠ দেওয়া হয়। ক্লাবের সদস্যরা সার্ফিং ছাড়াও নিকটবর্তী স্কুলগুলিতে বাচ্চাদের যোগব্য়ায়াম, নাচ, নাটক প্রভৃতি পাঠ্য়ক্রম বহির্ভূত কার্যকলাপও শিখিয়ে থাকেন।

সার্ফিং দুনিয়ায় ঈশিতা মালভিয়া আজ এক জনপ্রিয় নাম। দেশ ছেড়ে দেশান্তরেও তাঁর খ্যাতি ছড়িয়েছে। ফোর্বস ৩০-র তালিকায় তিনি আজ একজন। গ্রাম্য পরিবেশে, খুব সাধারণ পরিবারে বড় হয়ে ওঠা ঈশিতা আজ ‘লরেন হিল'( Lauren Hill)-এর লেখা ‘সি সার্ফ'( Sea Surf) বইয়ের পাতায়।

এখনও পর্যন্ত ভারতে যে স্বল্প সংখ্যক সার্ফার রয়েছেন, তার মধ্যে মহিলা সার্ফারের সংখ্যা নগণ্য। ঈশিতার মতে, যে কোনও প্রকার স্পোর্টই মানুষকে শৃঙ্খলাপরায়ণ করে তুলতে এবং অনুশাসনের মধ্যে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। কিন্তু সার্ফিংয়ের ক্ষেত্রে এই অনুশাসন এবং শৃঙ্খলা তৈরি হয় এক অভিনব তথা মজাদার পদ্ধতিতে।

‘জলকন্য়া’ ঈশিতার প্রিয় হিন্দি গানের তালিকায় হয়তো নিশ্চয়ই আছে ‘পানি দা রং দেখ ভে…’

Next Article