বিমানে যত উপরে ওঠে, ততই বাড়ে আতঙ্ক! উচ্চতায় যদি ভয় থাকে, তাহলে তা জয় করা সকলেরই উচিত। অনেকে মনের জোর পান না। তবে যাঁরা মনের জোরে উচ্চতার ভয়কে কাটিয়ে উঠতে চান তারা জীবনে একবার অন্তত বাঞ্জি জাম্পিংয়ের মত রোমাঞ্চকর ও দুঃসাহসিক অ্যাডভেঞ্চারের খাতায় নাম লেখানো উচিত। মনের ভয় কাটানোর আনন্দের অনুভূতি কোনও কিছু থেকেই ভাগ করা চলে না , তবে এমন অভিজ্ঞতার সুযোগ কখনও হাতছাড়া করা বোকামির কাজ। অনেকে বাঞ্জি জাম্পিং দেখেই ভয় পান। একটি শক্তিশালী ইলাস্টিক তারের সঙ্গে একদিকে সংযুক্ত থেকে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতা থেকে লাফ দেওয়া হয়। কখনও পাহাড়ি এলাকায়, উঁচু বিল্ডিং, সেতু থেকে এই দুঃসাহসিক স্টান্ট করা হয়। যাদের মনের ভয় একেবারেই নেই তারা হেলিকপ্টার বা হট এয়ার বেলুন থেকেও জাম্প দেন।
অ্যাড্রিনালিনের তীব্র ক্ষয় হয় এতে। এমন উত্তেজনা অন্য কোনও স্টান্টে উপলব্ধি করা যায় না। বাঞ্জি জাম্পিং সবচেয়ে জনপ্রিয় স্টান্ট হওয়া সত্ত্বেও প্রথমবারের মত স্নায়ুর যুদ্ধ জয় করার যে উত্তেজনা তা সারাজীবন মনের কোটরে অবস্থান করে। তবে একাধারে বিপজ্জনক স্টান্ট করার আগে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি জিনিস মাথায় রাখা দরকার। এবারে ছুটির মরসুমে যদি এমন জাম্প দেওয়ার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে তা আগে থেকে সঠিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।
স্বাস্থ্যের মূল্যায়ন: শরীরের দিক থেকে আপনি আগে ফিট কিনা তা আগে জানা প্রয়োজন। কারণ এই জাম্পের সঙ্গে অ্যাড্রিনালিন গ্রন্থির নিঃসরণকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন কিনা তা আগে দেখে নেওয়া দরকার। লাফের সঙ্গে আপানার ওজন ও বয়সের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই সঠিক নিয়মগুলি জেনে বাঞ্জি জাম্পিংয়ের জন্য প্রস্তুতি নিন। কোন কোন স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখতে হবে, সেগুলি জেনে নিন। পিঠ বা ঘাড়ের আঘাত, শরীরের কোথাও ভাঙা আছে কিনা, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁপানি, স্নায়ুর রোগ, মৃগী রোগ, হার্টের অসুখ, প্রেগন্যান্ট, এইগুলির মধ্যে কোনও একটি থাকলে বাঞ্জি জাম্পিং থেকে এড়িয়ে চলুন।
বেশি বা কম খাবেন না: তীব্র দুঃসাহসিক কার্যকলাপের আগে সর্বোত্তম নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পরেও সতর্কতা প্রয়োজন। খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে কিছু বিধিনিষেধ। তবে সাধারণত থাকে না। তবে মেনে চলা প্রয়োজন। অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন। আবার একেবারেই খাবেন না, এমনটাও যেন না হয়। প্রসঙ্গত অ্যালকোহল বা ইন্দ্রিয় নিস্তেজ করে দেয় এমন কোনও ওষুধ খান, তাহলে বাঞ্জি জাম্পিং এড়িয়ে চলাই ভাল।
বিপদ কীভাবে চিনবেন: বাঞ্জি জাম্পিং করার আগে কিছুটা হোমওয়ার্ক করুন। মনে রাখবেন যে কেউই ভাল মানের ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। অবস্থান সম্পর্কে আপনার আগে সেই জায়গাটি চিনে রাখা ভাল। নিরাপত্তার প্রয়োজনে পুরোপুরি যাচাই করে নেওয়া দরকার। যদি সেখান থেকে সঠিক তথ্য না পান, তাহলে তা এড়িয়ে যান। অবস্থানের পাশাপাশি প্রশিক্ষিত জাম্প মাস্টার, বীমা ও সার্টিফিকেশন কেমন রয়েছে., তাও জেনে নেওয়া প্রয়োজন। মনে রাখবেন জীবনে ঝুঁকি নিয়ে রোমাঞ্চকর অ্যাডভেঞ্চার করা একবারেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
আদর্শ পোশাক: প্যান্ট বা শর্টস পরা সবচেয়ে ভাল। উভয়ই আরামদায়ক ও খুব বেশি ভারিও নয়। জাম্প দেওয়ার পর যখন বাতাসে থাকবেন তখন এমন পোশাক পরবেন না, যা শরীরের বাইরে থেকে উড়তে থাকে। জাম্প দেওয়ার সময় খালি পায়ে বা জুতো পরেছেন কিনা দেখে নিন। যদি জুতো পরেন তাহলে তা যেন ঢিলেঢালা না হয় তা দেখে নিন। দামি কিছু পরবেন না। পকেট থাকলে তা অবশ্যই খালি রাখুন।
স্ট্রেস নেবেন না: প্রথমবার বাঞ্জি জাম্পিং করলে সবচেয়ে বেশি উত্তেজনা তৈরি হয়। লাফ দেওয়ার আগে পর্যন্ত মাথায় সমস্ত ধরনের উদ্বেগ, আতঙ্ক , চিন্তাভাবনা আসতে পারে। এই উদ্বেগগুলি শেষ পর্যন্ত আজীবন লক্ষ্য অর্জনে বাধা দেয় না। গভীর শ্বাস নিন আর মাথার মধ্যে যেগুলি গিজগিজ করছে সেগুলি সবকিছু ত্যাগ করুন। কিছু ভুল হতে পারে, এইসব বিবেচনা না করেই লাফটা একবার দিয়ে দিন। আর সেটাই হবে জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় অভিজ্ঞতা।