তারায় ভরা রাতের আকাশ দেখার সুযোগ শহুরে জীবনযাত্রায় মেলে না। বরং, জোৎস্না রাতে পাহাড়ের কোলে কাটালে মনে হয়, চাঁদকেও ছুঁয়ে ফেলা যায়। আর বিজ্ঞানের বইতে যে সব গ্রহ, নক্ষত্র, কালপুরুষের কথা পড়েছেন, সেগুলো চোখের সামনে দেখার সুযোগ কে-ই বা মিস করতে চায়। মানুষের মধ্যে এই রাতের আকাশ দেখার ঝোঁক এত বাড়ছে যে ভারতেও জনপ্রিয় হচ্ছে অ্যাস্ট্রো ট্যুরিজ়ম। প্রসঙ্গত, লাদাখের হানলে সম্প্রতি চালু হয়েছে ‘ডার্ক স্কাই স্যাঞ্চুয়ারি’। এটি এখন বিশ্বের সর্বোচ্চ জ্যোতির্বিজ্ঞান মানমন্দির। এবার ভারতে আয়োজিত হতে চলেছে ‘অ্যাস্ট্রো পার্টি’। তবে সেটা হানলেতে নয়, উত্তরাখণ্ডের বেনিতালে। আগামী ১৯-২১ মে সেখানে চলবে ‘অ্যাস্ট্রো পার্টি’।
উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার ছোট্ট পর্যটন কেন্দ্র এই বেনিতাল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৬০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত এই বেনিতাল। বেশিরভাগ পর্যটকেরা এই সবুজে ঘেরা পাহাড়ি এলাকায় পিকনিক করতে আসেন। কিন্তু এটি উত্তরাখণ্ডের প্রথম ‘অ্যাস্ট্রো ভিলেজ়’। এখানে স্টারস্কেপের সহযোগিতায় চলতি মাসে আয়োজন করা হয়েছে ‘অ্যাস্ট্রো পার্টি’র। এখানে সবুজ ঘাসের উপর বসে দেখতে পাবেন গ্রহ, নক্ষত্র। বেনিতালের পরিষ্কার আকাশে দেখা যায় আকাশগঙ্গা। ‘অ্যাস্ট্রো পার্টি’ উপলক্ষ্যে বেনিতালে দূরবীন, টেলিস্কোপ ও অন্যান্য সংরঞ্জামের ব্যবস্থাও থাকছে। যাতে রাতের আকাশ দেখতে কোনও অসুবিধা না হয়। স্টারগেজিংয়ের এমন সুযোগ হাত ছাড়া করবেন না।
উত্তরাখণ্ডের অফবিট ডেস্টিনেশনগুলোর মধ্যে একটি এই বেনিতাল। এখানে খুব বেশি পর্যটকদের ভিড় নেই। গ্রামের মাঝে রয়েছে একটি হ্রদ। সেটাকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে গোটা গ্রাম। আর ‘তাল’-এর অর্থ লেক বা হ্রদ। আর এই হ্রদকে ঘিরে রয়েছে বেনিতাল ও দুধাতলির পাহাড়। এই গ্রাম থেকে দেখা যায় হিমালয়ের তুষারবৃত চূড়াগুলো। বন্যজন্তুর দেখা মেলে এখানে। গ্রামের শান্ত ও নিরিবিলি পরিবেশের টানেই এখানে পর্যটকেরা আসেন। উপরি পাওনা রাতের আকাশ।
ঋষিকেশ ও বদ্রিনাথ হাইওয়ে (NH58) হয়ে পৌঁছাতে পারেন বেনিতালে। কিংবা, করণপ্রয়াগ ও সিমলি হাইওয়ে (NH87) হয়ে যাওয়া যায় বেনিতালে। রাতের আকাশ দেখার জন্য এবার উত্তরাখণ্ড গেলে অবশ্যই বাকেট লিস্টে রাখুন বেনিতালকে। যদি চলতি মাসে উত্তরাখণ্ড যাওয়ার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে ‘অ্যাস্ট্রো পার্টি’ মিস করবেন না। সকালে বেনিতালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর রাতে ‘অ্যাস্ট্রো পার্টি’ আপনার ট্রিপকে স্মরণীয় বানিয়ে দেবে।