বঙ্গে বসন্ত চললেও আবহাওয়া বর্ষার চেয়ে কম কিছু নয়। কিন্তু এই সুখের সময় বেশি দিনের জন্য নয়। সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই আবার রোদের তেজ বাড়বে। আর এপ্রিল এলেই হাড়ে-হাড়ে টের পাওয়া যাবে বৈশাখের গরম। এই গরম বাড়ার আগে একটা ছোট্ট উইকএন্ড যদি শীতের দেশে প্ল্যান করা যায়, তাহলে কেমন হবে? যদিও উইকএন্ডে পাহাড় ঘুরে নেওয়া একটু সমস্যা। কিন্তু হাতে যদি ৪-৫ দিনের ছুটি থাকে, তাহলে অনায়াসে ঘুরে নিতে পারেন কার্শিয়াঙের বাগোরা।
দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াঙের কোলে এমন অনেক পাহাড়ি গ্রাম রয়েছে, যা হয়ে উঠতে পারে আপনার লং উইকএন্ডের পারফেক্ট ডেস্টিনেশন। তবে, কার্শিয়াঙের বাগোরা অন্যদের থেকে বেশ আলাদা। বাগোরার পাশেই রয়েছে চিমনি গ্রাম। এখানে প্রকৃতি ও ইতিহাস একসঙ্গে হাতছানি দেয়। হিমালয়ের কোলে লুকানো এক গ্রাম চিমনি। যদিও তার আগে আপনাকে পৌঁছাতে হবে বাগোরা। কার্শিয়াং থেকে মাত্র ১৭ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত বাগোরা। দিলারাম হয়ে যেতে হয় বাগোরায়। পাইন, ওকের সমাহার এখানে। কান পাতলে শোনা যায় পাখির ডাক। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক দিয়ে যে কোনও পাহাড়ি গ্রামকে টেক্কা দিতে পারে বাগোরা।
প্রায় ৭ হাজার ফিট উচ্চতায় অবস্থিত বাগোরা একটি পর্যটন কেন্দ্র ঠিকই। কিন্তু বাগোরার চাইতে মূল আকর্ষণ চিমনি। যদিও চিমনি গ্রাম সৌন্দর্যতার চেয়ে ইতিহাসের জন্য বেশি জনপ্রিয়। বাগোরা থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত চিমনি গ্রাম। এই গ্রামের নামের পিছনেই লুকিয়ে এর ইতিহাস। এই পাহাড়ি গ্রামে ব্রিটিশদের তৈরি একটি চিমনি রয়েছে। সেই অনুসারেই জনপ্রিয় চিমনি।
৭,১৫০ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত চিমনি গ্রামে ব্রিটিশদের তৈরি একটি চিমনি রয়েছে। যেটা তৈরি করা হয়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়। শোনা যায়, সেই সময় দার্জিলিং যাওয়ার জন্য এই চিমনি গ্রামের রাস্তা ধরতেন ব্রিটিশরা। রাত কাটাতেন এই গ্রামেই। অতিরিক্ত ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচার জন্য এই চিমনি তৈরি করা হয়েছিল। প্রায় ১০০ বছরেরও পুরনো এই চিমনি এখন অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। এই চিমনিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে চিমনি হেরিটেজ গার্ডেন।
কার্শিয়াং থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরত্বে চিমনি। সুতরাং, বাগোরায় রাত না কাটিয়েও আপনি ঘুরে যেতে পারেন চিমনি হেরিটেজ গার্ডেন থেকে। যদিও চিমনি গার্ডেনের প্রাকৃতিক শোভাও বাগোরার চেয়ে কিছু কম যায় না। এই গ্রাম থেকে দেখা যায় সোনাদা,পশুপতি নগর, মিরিক, দার্জিলিং। আকাশ পরিষ্কার থাকলে সান্দাকফু-ফালুটের ফাঁক দিয়ে উঁকি দেয় নয়নাভিরাম কাঞ্চনজঙ্ঘা। আর এই গ্রামকে ঘিরে রেখেছে তিস্তা ও মহানন্দা। সুতরাং, কার্শিয়াং যাওয়ার প্ল্যান করলে এই জায়গাকে অবশ্যই বাকেট লিস্টে রাখবেন।