সান্তালাবাড়ি, লেপচাখা বেড়াতে গেলে অনেকেই যান বক্সা দুর্গে। সেই ভুটান রাজা থেকে শুরু ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অত্যাচারের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে বক্সা দুর্গের সঙ্গে। ভুটান রাজার হাত থেকে বক্সা ফোর্ট চলে যায় কোচ রাজাদের অধীনে। সেই সময় এই ফোর্ট ব্যবহার হত তিব্বতের শরণার্থী শিবির হিসেবে। এরপর ভারতে ব্রিটিশদের আগমন। ১৮৬৫ সালে এই বক্সা ফোর্ট ব্রিটিশদের দখলে চলে যায়। সেই সময় এই দুর্গ বাঁশের তৈরি ছিল। পরবর্তীকালে পাথরের রূপান্তরিত করা হয়। আর এটি পরিণত হয় কারাগারে। ১৯৩০-এর দশক পর্যন্ত এটি কারাগার ও ডিটেনশন ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হত। বর্তমানে এই বক্সা ফোর্ট রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুর্গের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। তবে, ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয়েছে বক্সা ফোর্টের সংস্কারের কাজ। চলতি বছরের ডিসেম্বরেই পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে বক্সা ফোর্ট।
দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়েছিল বক্সা ফোর্ট। প্রায় ৫০ বছর ধরে ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পড়েছিল এই দুর্গ। ঐতিহাসিক গুরুত্ব পুনরুদ্ধার করার জন্য রাজ্য সরকার বক্সা ফোর্টের সংস্কার শুরু করে। ২০২০ সালের অগস্টে, রাজ্য পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্টের (PWD) তত্ত্বাবধানে সংস্কারের কাজ শুরু হয়। ১০০ বছর আগে ঠিক যেরূপ দেখতে ছিল বক্সা ফোর্টকে, সেই আগের চেহারায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। হেরিটেজ তকমা রক্ষা করার পাশাপাশি বক্সা ফোর্টকে পর্যটন শিল্পের অংশ করে তোলার চেষ্টা করছে।
দু’ধাপে বক্সা ফোর্ট সংস্কারের কাজ চলছে। ২০২০ সালের জুনে সম্পন্ন হওয়া প্রথম ধাপে কারাগারের কক্ষ, প্যাসেজ, গেট, বাইরের দেওয়াল ও বিভিন্ন ব্যারাক পুনরুদ্ধারের কাজ অন্তর্ভুক্ত ছিল। পাশাপাশি এই দুর্গকে আরও কীভাবে সুন্দর করে তোলা যায়, সেটার কাজও চলেছে প্রথম ধাপে। দ্বিতীয় পর্বে, দুর্গের দক্ষিণ অংশের মেরামতের কাজ চলছে। এই দ্বিতীয় ধাপের কাজ অনেক আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্ষার জন্য তা করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে পুজোর আগে পর্যটকদের জন্য বক্সা ফোর্ট খুলছে না। তবে, শীতের ছুটিতে বক্সায় বেড়াতে গেলে এই দুর্গে অবশ্যই প্রবেশ মিলবে পর্যটকদের। আশা করা হচ্ছে, নভেম্বরেই বক্সা ফোর্টের সংস্কারের কাজ শেষ হয়ে যাবে। নতুন বছর শুরুর আগেই, শীতের পর্যটন মরশুমে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় বক্সা ফোর্ট।