সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্লগার বা ইনফ্লুয়েন্সারের মাধ্যমে এখন সবাই সব কিছু জেনে গিয়েছেন। তবে রিল বা ইউটিউবে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস (Adventure Sports) দেখা ও বাস্তব জীবনে একই অভিজ্ঞতার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। বিদেশের মত ভারতেও বাঞ্জি জাম্পিং, ফ্লাইং ফক্স, জায়ান্ট সুইং বা স্কুবা ড্রাইভিং-এর মতো অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের কদর বেড়েছে। ছোট থেকে বড়, সকলের জন্যই এক চরম অভিজ্ঞতা । স্ক্রিনের পর্দায় এই অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসগুলি দেখতে যতটা ভাল ও সহজ বলে মনে হয়, তা কিন্তু মোটেই নয়। সাহস থাকলে অনেকেই ভয়কে জয় করতে পারেন। কিন্তু করার আগের মুহূর্তেই যত রাজ্যের ভয় চেপে এসে ধরে।
ভয় থাকা অবশ্যই ভাল। কিন্তু এই স্পোর্টসগুলির ক্ষেত্রে ভয় না পাওয়া সত্যিই অসম্ভব। ভয়, উত্তেজনা, রোমাঞ্চ সব মিলিয়ে একাকার হয়ে নার্ভ শক্ত রাখাই চ্যালেঞ্জের। তবে ভয় একটি শক্তিশালী আবেগ যেটি লক্ষ্য পূরণ করার কাজে লাগে। আবার স্বপ্নপূরণেও বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে আপনি যদি রোমাঞ্চকর অনুভূতি পেতে চান, তাহলে ভয়কে জয় করতেই হবে। মনে মনে কল্পনা করুন এই ভয় আপনার জন্য নয়, সব বাধাকে অতিক্রম আপনি করতেই পারবেন। তারপরই দেখবেন হুস করে সব ভয় উধাও। প্রতিটি মুহূর্তের ঘ্রাণ আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।
এই অ্যাডভেঞ্জার স্পোর্টসগুলি যদি চেষ্টা করতে চান, তাহলে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে কীভাবে শক্ত হবেন, তার কয়েকটি টিপস রইল এখানে…
– আপনার লক্ষ্য কখনও ভয় হতে পারে না। ভয়কে আয়ত্ত করে লক্ষ্য পূরণ করাই উদ্দেশ্য থাকা উচিত। কখনও মনে-প্রাণে ভয়কে আলাদা করে জায়গা করে দেবেন না। শুধু এই স্পোর্টসের জন্য নয়, দুঃসাহসিক ও অভিনব কিছু করার ক্ষেত্রেই ভয়কে নিজের মধ্যে পুষে রাখবেন না। তাতে যে কোনও কাজই হবে ধীরগতিতে।
– পারলে আশেপাশে থাকা মানুষদের সঙ্গে কথা বলুন। নতুন মানুষজনের সঙ্গে কথা বললে মনটা বেশ ফুরফুরে থাকে। তারা আপনাকে অনুপ্রেরণাও জোগাতে পারে। মানুষের সঙ্গে যতবেশি সংযোগ স্থাপন করবেন, তত বেশি জানার আগ্রহ বাড়বে। মনের মধ্যে দ্বিধা কেটে গিয়ে উধাও হবে ভীতি। যাঁরা অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস করেছেন, তাদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন। কীভাবে সফল হয়েছেন, কেমন তার অনুভূতি সব কিছু জানার চেষ্টা করুন। তাতেই মনে মনে অনুপ্রেরণা পেয়ে যাবেন।
– ভয়ের মুখোমুখি হলে নিজের কমফোর্ট জোন থেকে যত তাড়াতাড়ি বের হওয়ার চেষ্টা করুন। যে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিন নিজে। ভয় পাওয়ার পরিবর্তে সচেতনভাবে কীভাবে মনোনিবেশ করবেন সেই চ্যালেঞ্জটা নিতে শিখতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ একবার গ্রহণ করলেই দেখবনে মনের মধ্যে এক অদ্ভূত শক্তি সঞ্চার হয়েছে। মনে রাখবেন আপনি নিজেকে জিততে দেখতে চান। আপনিই শুরু করেছিলেন।
– সকলেরই কাছে নিজের ভালবাসার জিনিস সঙ্গে থাকে। যেমন গান, গিটার বাজানো, বাঁশি বাজানো এই সব ভাললাগার জিনিস সঙ্গে থাকে। বেড়াতে গিয়েও সেই সঙ্গীকে কখনও কাছ ছাড়া করে থাকতে পারেন না। এতে শরীরের মধ্যে পজিটিভি শক্তি সঞ্চার হয়। এর থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারেন। কখনও কখনও বাঞ্জি জাম্পিং বা স্কুবা ড্রাইভিংয়ের মতো একটি অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করুন। সাফল্য আসবেই।
– বড় কোনও লক্ষ্য অতিক্রম করার লক্ষ্যে পৌঁছানোর তুলনায় ছোট ছোট পদক্ষেপ নিতে জানতে হবে। এই ছোট ছোট সিদ্ধান্তগুলি জিতে দগেলেই মানসিক বল পাওয়া যায়। পজিটিভ অনুভূতি পেতে এই ধরনের পদক্ষেপ বেশ কার্যকরী। নিজের কৃতিত্বের উপর আত্মবিশ্বাসও তৈরি হয়। যদি অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে অংশগ্রহণ করতে চাইলে এই নিয়ম মেনে চলতে পারেন। তাতে সব দ্বিধা কাটিয়ে উঠতে পারে।
– অন্যরকম কিছু করার আগে নিজের কৃতিত্ব , জয়ের কথা একেবারেই ভুলবেন না। যদি জয়লাভ না করেন তাহলে কল্পনা করতে তো দোষের কিছু নেই। আপনি জয়ী হবেন, সেই কল্পনা মনের মধ্যে গেঁথে ফেলুন। এই শক্তিই আপনাকে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস করার ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে রাখবে। সাফল্য আসবে এতেই।
– অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস করার আগে একটি ছোট প্রশিক্ষণ পর্ব চলে। সেই পর্বেই আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন যে এই রোমাঞ্চকর স্পোর্টসটি আদৌও আপনার জন্য কিনা। সেখানেই যদি প্রাথমিকভাবে দ্বিধা কাটিয়ে উঠতে পারেন, তাহলে পরবর্তী যাত্রা আপনি হাসতে হাসতেই কাজ সেরে ফেলতে পারবেন।