ইলেকট্রনিক ডিভাইস খারাপ হয়ে গিয়েছে? কিংবা পুরনো বাদ্যযন্ত্র আর কাজ করছে না? সময় এসেছে পুরনো জামাকাপড়, বই, জুতো পাল্টে ফেলার? এগুলো ভুলেও ফেলবেন না। যাবতীয় পুরনো, ভেঙে যাওয়া, খারাপ হয়ে যাওয়া জিনিস নিয়ে শনিবার চলে আসুন পার্কস্ট্রিটের ম্যাক্স মুলার ভবনে। এখানে রয়েছে কলকাতার প্রথম ‘রিপেয়ার ক্যাফে’।
অ্যানস্টিফটুং ফাউন্ডেশনের অনুপ্রেরণায় গোথ ইনস্টিটিউটে খুলেছে শহরের প্রথম ‘রিপেয়ার ক্যাফে’, যেখানে পুরনো, ভাঙাচোরা, খারাপ হয়ে যাওয়া জিনিস নিয়ে গেলে মেরামত করে দেওয়া হয়। এই ক্যাফেটির দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে ম্যাক্স মুলার ভবনের ভলেন্টিয়াররা। আর ক্যাফেটির পরিচালক হলেন অ্যাস্ট্রিড ওয়েজ। তবে কলকাতার এই ‘রিপেয়ার ক্যাফে’ শুধু প্রতি মাসের চতুর্থ শনিবারই খোলা থাকে।
কলকাতায় এই ‘রিপেয়ার ক্যাফে’ প্রথম হলেও, বিশ্বজুড়ে এই ধরনের ক্যাফের সংখ্যা ২৪৪১। ২০০৯ সালে প্রথম ‘রিপেয়ার ক্যাফে’ খোলা হয় অ্যামস্টারডামে। ২০২১-এ গিয়ে এই সংখ্যাটা দু’হাজার ছাপিয়ে গিয়েছে। নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাজ্যে এই ধরনের ক্যাফের সংখ্যা বেশি। এখন পাশ্চাত্য দেশগুলোর পথে হাঁটছে ভারত এবং জাপানও। বিশ্বজুড়ে ৩৬ হাজারেরও বেশি মানুষ এই ‘রিপেয়ার ক্যাফে’তে ভলেন্টিয়ারের কাজ করে। প্রতি মাসে এই ‘রিপেয়ার ক্যাফে’গুলোতে প্রায় ৪৩ হাজারেরও বেশি জিনিসপত্র সারানো হয়। অন্তত এমনটাই দাবি জানাচ্ছে রিপেয়ার ক্যাফে সংস্থা।
‘রিপেয়ার ক্যাফে’তে যে কোনও ধরনের ইলেকট্রনিক এবং মেকানিক্যাল জিনিসপত্র সারানো হয়। বিশ্বজুড়ে এই ক্যাফেগুলো ঠাঁই পেয়েছে শহরের কোনও লাইবেরি, চার্চ কিংবা কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে। আর এই ‘রিয়েপর ক্যাফে’-এর ট্যাগ লাইন হল ‘Do It Yourself’.
‘রিয়েপর ক্যাফে’-এর উদ্দেশ্য শুধু পুরোনো, খারাপ হয়ে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়া জিনিসপত্র ঠিক করে দেওয়া নয়। ইলেকট্রনিক এবং মেকানিক্যাল ডিভাইস বা জিনিসপত্র কীভাবে আপনি নিজেই ঠিক করতে পারবেন, তা শেখার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়িয়ে তোলা। পার্কস্ট্রিটের এই ‘রিপেয়ার ক্যাফে’তে আপনি বই, ব্যাগ, জামাকাপড়, গহনা, থেকে শুরু করে যাবতীয় ইলেকট্রনিক বস্তু নিয়ে আসতে পারবেন।
এই ‘রিপেয়ার ক্যাফে’ আরেকটি বার্তা তুলে ধরে বিশ্ব দরবারে। তা হল ‘culture of sustainability’. অর্থাৎ পুরনো জিনিসকে ফেলে না দিয়ে তা পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলা। প্রিয় জিনিস নষ্ট হয়ে গেছে বলে ব্যবহার করতে পারবেন না, তা কিন্তু নয়। ম্যাক্স মুলার ভবনের ‘রিপেয়ার ক্যাফে’তে নিয়ে এলেই আবার ব্যবহারযোগ্য হয়ে উঠবে ওই জিনিস। পাশাপাশি আপনি নিজেও চাইলে শিখে নিতে পারবেন ছোটখাটো জিনিসপত্র সারিয়ে তোলার কৌশল।