বর্ষায় জঙ্গল আরও সবুজ হয়ে ওঠে। আর পাহাড়ে ধস নামার ভয়। তাই তো এই মরশুমে পাহাড় ভ্রমণ অনেকেই এড়িয়ে চলেন। কিন্তু প্রকৃতিপ্রেমী ও ভ্রমণপিপাসুদের এই মরশুমে ঘরবন্দী করে রাখা সম্ভব নয়। তাই পাহাড়-জঙ্গল এড়িয়ে চলুন সমুদ্রে। বর্ষায় সমুদ্রও রূপ ধারণ করে। ঢেউগুলো সুবিশাল। আর যদি কোনও কোটাল থাকে, তাহলে সেই রূপ দেখার মতো। যদিও সেই সময় সমুদ্রের পাড়ে না থাকাই ভাল। কিন্তু বর্ষায় কোন সমুদ্রতটে যাবেন? সমুদ্র বললেই মাথায় দিঘা, পুরী, মন্দারমণি ঘুরপাক খেলেও এবার উইকএন্ডে ঘুরে আসুন গোপালপুর।
বৃষ্টির মরশুমে সপ্তাহান্তে গোপালপুর হতে পারে আপনার জন্য সেরা ডেস্টিনেশন। অতীতের ‘পোর্ট অফ পালোর’ই গোপালপুর সি বিচে পরিণত হয়েছে। পুরীর ভিড় এড়িয়ে নিরিবিলিতে উইকএন্ড কাটাতে পারেন গোপালপুর সি বিচ। যদিও এখানে পুরীর মতো উত্তাল নয় বঙ্গোপসাগর। কিন্তু গোপালপুরের সমুদ্র সৈকত নীল এবং শান্ত। তাই এই সমুদ্র সৈকতে বসে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত মিস করলে চলবে না।
ওড়িশার গঞ্জম জেলায় অবস্থিত গোপালপুর। পুরী থেকে প্রায় ১৭১ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে এই সমুদ্র সৈকত। যদিও আপনি সরাসরি গোপালপুর আসতে পারেন। বৃষ্টির দিনে লং ড্রাইভ পছন্দ করলে গাড়ি করে আসতে পারেন এখানে। এছাড়া ট্রেনে চেপে আসতে হবে আপনাকে নামতে বেরহামপুর স্টেশনে। বেরহামপুর থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটারের পথ গোপালপুর।
গোপালপুরের শান্ত সমুদ্রতটে বসেই কেটে যাবে সারাদিন। সোনালি বালুকায় বসে দেখতে পারেন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত। চাইলে এখানকার নীল জলে গাও ভাসাতে পারেন। এছাড়া সমুদ্রের পাড় ধরে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যেতে পারেন বাতিঘরে। প্রায় ১৫০টিরও বেশি সিঁড়ি ভেঙে আপনাকে উঠতে হবে লাইটহাউসে। তারপরের দৃশ্য আপনার জীবনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। এছাড়া যেতে পারেন ১৮৯৫ সালে তৈরি গোপালের মন্দিরে।
গোপালপুর থেকে আরও ৩০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সোনাপুর। এটিও একটি নির্জন সমুদ্র সৈকত। চাইলে সেখানেও যেতে পারেন। হাতে একদিন বেশি সময় থাকলে যেতে পারেন চিল্কা হ্রদে। গোপালপুর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে যৌগড়। এখানে গেলে দেখতে পারেন গ্রানাইট পাথরের উপর খোদাই করা সম্রাট অশোকের বাণী। এছাড়া গোপালপুর থেকে সহজেই ঘুরে নিতে পারেন ডলফিন পয়েন্ট, হিলটপ, গোপালপুর পোর্ট, রামমন্দির, ধবলেশ্বর মন্দির ইত্যাদি। সুতরাং, এই বর্ষায় গোপালপুর সি বিচে গেলে আপনার উইকএন্ড হয়ে থাকবে চিরস্মরণীয়।