Floating Church: অর্ধেক অংশ জলের তলায়, একা দাঁড়িয়ে যীশু, দেশের কোথায় অবস্থিত এই ভাসমান গির্জা?

TV9 Bangla Digital | Edited By: megha

Dec 10, 2022 | 11:49 AM

Karnataka: সুজ্জিত তো একেবারেই নয় এই গির্জা। এমনকী গুগল ম্যাপেও এর অস্তিত্ব খুঁজে বের করা বেশ কঠিন, তবু এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এ রাজ্যের ইতিহাস।

Floating Church: অর্ধেক অংশ জলের তলায়, একা দাঁড়িয়ে যীশু, দেশের কোথায় অবস্থিত এই ভাসমান গির্জা?
শেট্টিহাল্লি রোজারি চার্চ, কর্ণাটক।

Follow Us

ভাসমান শহরের নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ইতালির ভেনিস নগরী। যদিও এ দিক দিয়ে খুব একটা পিছিয়ে নেই ভারতও। ভাসমান বাজার, ভাসমান হোটেল এমনকী ভাসমান পোস্ট অফিস এবং প্রথম এটিএম রয়েছে আমাদের দেশেই। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর গেলেই পেয়ে যাবে এই সব কিছু। কিন্তু ভাসমান গির্জা দেশের কোথায় অবস্থিত জানেন? ভারতের উত্তর থেকে দক্ষিণ বৈচিত্র্যময়। যে কারণে বলা হয় ‘ইনক্রেডেবল ইন্ডিয়া’। সেখানে যেমন রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, তেমনই দেশের প্রতি কোণায় লুকিয়ে ইতিহাস। দেশের ইতিহাসেরই অঙ্গ ভাসমান গির্জা। কর্ণাটকে অবস্থিত এই ভাসমান গির্জা। নাম শেট্টিহাল্লি রোজারি চার্চ। পর্যটকদের কাছে এই গির্জা ‘নিমজ্জিত গির্জা’ নামেও জনপ্রিয়।

বেঙ্গালুরু থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ছোট্ট গ্রাম শেট্টিহাল্লি। কর্ণাটকের হাম্পি, কুর্গ, মাইসোর, গোকর্ণের মতো জায়গা যতটা বেশি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়, ততটা পরিচিত নয় শেট্টিহাল্লি। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে হেমাবতী নদী। হাসান জেলায় অবস্থিত এই শেট্টিহাল্লি গ্রামেই রয়েছে রোজারি চার্চ। খুব একটা পরিচিত না হলেও ইতিহাসের টানে অনেকেই ঘুরে যান এই অফবিট থেকে। গির্জার অর্ধেক অংশ জলের তলায়। গির্জার দুটো ঘণ্টা বাজে না। সুজ্জিত তো একেবারেই নয় রোজারি চার্চ। এমনকী গুগল ম্যাপেও এর অস্তিত্ব খুঁজে বের করা বেশ কঠিন, তবু এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এ রাজ্যের ইতিহাস।

১৮৬০ সালে ফরাসি ধর্মপ্রচারক জিন-অ্যান্টোইন ডুবোইস এই গির্জা তৈরি করেছিলেন। ইউরোপে প্রচলিত দ্বাদশ শতাব্দীর গথিক স্থাপত্যের ছোঁয়া দেখা যায় রোজারি চার্চে। ভারতে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করতে এবং স্থানীয়দের ধর্মান্তর করতেই এই গির্জা তৈরি করা হয়। তবে, ডুবোইস ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে এতটাই মিলেমিশে যান যে এই গির্জা দারিদ্রদের আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে। তখন যে কোনও ধর্মের মানুষই এখানে আসতে পারবেন।

যে সময় এই রোজারি চার্চ তৈরি করা হয়, তখন এটি জলের তলায় ছিল না। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে এই চার্চ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। তৈরি করার সময় এই চার্চ ছিল একতলা। এরপর কাচের দরজা, বিভিন্ন আসবাবপত্র ইত্যাদি বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়ে এবং এই গির্জা সাজানো হয়। গির্জা তৈরির একশো বছর পর, ১৯৬০ সালে কর্ণাটকের হেমবতী নদীর বাঁধ ভেঙে জলের স্তর ক্রমশ বাড়তে থাকে। নদীর তীরে থাকা ২৮টি গ্রাম জলের তলায় চলে যায়। এর মধ্যে শেট্টিহাল্লিও ছিল। যথারীতি রোজারি চার্চও জলের তলায় চলে যায়। সেই থেকে ভাসমান গির্জা নাম হয়ে গিয়েছে এই চার্চের।

বর্তমানে প্রায় ১৬২ বছর পর এই রোজারি চার্চ কর্ণাটকের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছে। যদিও গির্জার এখন ভগ্নপ্রায় দশা। গির্জার অর্ধেক অংশ জলের তলায়। সারা বছর এখানে হাঁটু পর্যন্ত জল থাকে। বর্ষার সময় জলের স্তর আরও বাড়তে থাকে। তবে এই গির্জায় ‘যীশু ছলছল চোখে হাত তুলে আশ্বাস দেয় এখনও’।

Next Article