রাতের আকাশে তারাদের সমাহার দেখার সুযোগ ভারতের খুব জায়গাতেই রয়েছে। কিন্তু যে জায়গা থেকে তারায় ভরা রাতের আকাশ দেখা যায় তার মধ্যে অন্যতম লাদাখ। এবার সেই লাদাখই হতে চলেছে ‘নাইট স্কাই স্যাঙ্কচুয়ারি’। আগামী তিন মাসের মধ্যে লাদাখের হ্যানলেতে চালু হতে চলেছে দেশের প্রথম ‘নাইট স্কাই স্যাংচুয়ারি’। অ্যাস্ট্রো ট্যুরিজ়মকে পর্যটকদের কাছে আরও উন্নত ভাবে তোলার জন্যই লাদাখে প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে রাতের আকাশের অভয়ারণ্য।
গত বছর ঘোষণা করা হয়েছিল, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের সহযোগিতায় লাদাখের প্রশাসন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের হ্যানলে গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে অ্যাস্ট্রো ট্যুরিজ়ম। কিন্তু কবে থেকে এই অ্যাস্ট্রো ট্যুরিজ়মের সূচনা হবে কিংবা কবে থেকে পর্যটকরা হ্যানলের এই অভয়ারণ্যে ভ্রমণের অনুমতি পারবেন, তা উল্লেখ করা হয়নি। চলতি সপ্তাহে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং ঘোষণা করেছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যেই লাদাখের হ্যানলে গ্রাম হয়ে উঠবে রাতের আকাশের অভয়ারণ্য।
চাংথাং অভয়ারণ্যের অংশ হিসেবে লাদাখের হ্যানলেতে প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে রাতের আকাশের অভয়ারণ্য। লাদাখে পর্যটকদের টানতেই এই উদ্যান তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে। এই ডার্ক স্কাই রিজার্ভে থাকবে অপটিক্যাল, ইনফ্রারেড এবং গামা-রে টেলিস্কোপ। এই কারণেই হ্যানলে হতে চলেছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু অ্যাস্ট্রো ট্যুরিজ়ম সাইটগুলোর মধ্যে অন্যতম।
এই ‘নাইট স্কাই স্যাংচুয়ারি’ ভারত তথা লাদাখের পর্যটন শিল্পে নতুন বৈচিত্র্য নিয়ে আসবে। লাদাখের হ্যানলে গ্রাম মরুভূমির শীতল অংশের মধ্যে পড়ে। এখানে আবহাওয়া সারাবছরই মনোরম থাকে। আকাশও বেশ পরিষ্কার থাকে। সুতরাং, এখান থেকে মহাজাগতিক বস্তু ও ঘটনা সহজেই দেখা যাবে। আর এই কারণেই ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সহায়তায় হ্যানলেতে তৈরি হচ্ছে ‘নাইট স্কাই স্যাংচুয়ারি’।
সাধারণত খুব একটা পর্যটকদের ভিড় দেখা যায় না হ্যানলেতে। আশা করা হচ্ছে এই ‘নাইট স্কাই স্যাংচুয়ারি’ বিদেশি পর্যটকদের মধ্যেও হ্যানলের গুরুত্ব তুলে ধরবে। এই হ্যানলে হল বিশ্বের সর্বোচ্চ জ্যোতির্বিজ্ঞান মানমন্দির। হ্যানলে নদী উপত্যকায় অবস্থিত এই গ্রাম এক সময় ছিল প্রাচীন লাদাখ-তিব্বতের বাণিজ্য রুট। এখানে রয়েছে সপ্তদশ শতাব্দীর প্রাচীন গুম্ফা। এবার এই লাদাখের গ্রাম থেকে তারায় ভরা রাতের আকাশ দেখারও সুযোগ মিলবে। কোনও আলোকসজ্জার থেকে কম হবে না এই ‘নাইট স্কাই স্যাংচুয়ারি’।
যেহেতু চাংথাং অভয়ারণ্যের অংশ হিসেবে এই ‘নাইট স্কাই স্যাংচুয়ারি’ প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে তাই এখানে জীববৈচিত্র্যের দেখাও মিলবে। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, লাদাখের চাংথাংয়ে ভেড়া এবং ইয়াক ছাড়াও প্রায় চার লক্ষেরও বেশি বন্যপ্রাণীর দেখা পাওয়া যায়। যদিও এই অভয়ারণ্যে পশমিনা ছাগলই বেশি দেখা যায়। এই সব বন্যপ্রাণীর সুরক্ষার জন্য কয়েকজন সেনা কর্মকর্তাকে বন্যপ্রাণী ওয়ার্ডেন হিসাবেও নিয়োগ করা হয়েছে।