ঐতিহ্যপূর্ণ ভারতে শিল্পের কোনও খামতি নেই। শিল্পীরও কমতি নেই। দেশের কোণায় কোণায় ছড়িয়ে রয়েছে দুর্ধ্ষ সব ট্যালেন্ট। বালি নিয়ে খেলতে খেলতে এক সুদর্শন শিল্পের আকার দেন ভারতের এক বিখ্যাত শিল্পী। তার পর থেকেই ভারত জানতে পারে বালি ভাস্কর্যের কথা। পুরীর সৈকত থেকে বিশ্বের দরবারে তাঁর সুখ্যাতি অবিচল। আর শিল্প যেখানে সেখানে তাকে সংরক্ষণ করার প্রয়াস থাকবেই। কর্ণাটকের (Karnataka) ঐতিহাসিক শহর মায়শোরে (Mysore) রয়েছে রাজরাজাদের আমলে মায়শোর প্যালেস, বৃন্দাবন উদ্যান ও মায়শোর চিড়িয়াখানা আরও অনেক আকর্ষণীয় দর্শণীয় স্থানে পরিপূর্ণ। এত কিছুর মধ্যেও এ শহরেই রয়েছে দেশের প্রথম বালি ভাস্কর্যের যাদুঘর (Sand Sculpture Museum)। কর্ণাটকের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নির্মিত এই অবিশ্বাস্যকর বালি ভাস্কর্যের মিউজিয়াম দেখলে চোখ টেরিয়েও যেতে পারে।
বালিশিল্প কোনও হাল আমলের শিল্প নয়। ধৈর্য, জেদ, পরিশ্রম ও অফুরান জীবনীশক্তির মিশেলে তৈরি হয়েছে এক অভূতপূর্ব এক সংরক্ষণকেন্দ্র। বিখ্যাত বালি ভাস্কর এম এন গৌরির ধারণায় মিউজিয়ামটি তৈরি করা হয়েছে। জানা যায়, গোটা যাদুঘরটি তৈরি করতে তাঁর সময় লেগেছিল প্রায় চার মাস। মায়শোরের চামুন্ডি পাহাড়ের কাছাকাছি নির্মিত এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে চাক্ষুস করার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে পর্যটক ও শিল্পীরা ভিড় করেন। অবিশ্বাস্য এই মিউজিয়ামটিতে ১১৫ ট্রাক বালি, জল ও সামান্য আঠা ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে প্রায় ১৫০টি মনোলিথ।১,৩৫০০ বর্গ ফুট জুড়ে বিস্তৃত এই মিউজিয়ামটি শহরের এক অন্যতম আকর্ষণ বলা যেতে পারে। ১৬টি ভিন্ন থিমে প্রদর্শিত ভাস্কর্যের মধ্যে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য হল টম অ্যান্ড জেরির ভাস্কর্য, চামুন্ডেশ্বরী এবং ভগবান গণেশের একটি বিশাল ১৫ ফুট মূর্তি। এছাড়া রয়েছে কৃষ্ণ, অর্জুন ও বুদ্ধের মনোলিথ। ক্রিসমাস ট্রি, সান্তা ক্লজের বালি ভাস্কর্য দেখা মত। ডিজনিল্যান্ড দেখার সুযোগ না থাকলে এখানে এসে দেশি অনুভূতি গ্রহণ করতে পারবেন। ডিজনিল্যান্ডের জনপ্রিয় চরিত্রগুলি যাদুঘরকে একেবারে উজ্জ্বল করে রেখেছে। ওইগুলিই মিউজিয়ামের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
কীভাবে যাবেন?
বালি ভাস্কর্যের মিউজিয়াম দেখতে যাওয়ার জন্য মাথা খুঁড়তে হবে না। মায়শোর বাসস্ট্যান্ডের কাছেই অবস্থিত। চামুন্ডি পাহাড়ের একদম দোরগোড়া সপ্তমথরুকা লেআউটের পাশেই এই অবিশ্বাস্য়কর বালি ভাস্কর্য মিউজিয়ামটি তৈরি করা হয়েছে।